
প্রদীপ কুমার দেবনাথ, | বৃহস্পতিবার, ১৫ জুন ২০২৩ | প্রিন্ট
নরসিংদীর বেলাবো উপজেলার পোড়াদিয়া হাড়িসাংগান সড়কের ভাবলা থেকে হাড়িসাংগান পর্যন্ত সাড়ে তিন কিলোমিটার রাস্তার বেহাল দশা। সড়কের পিচ, কংক্রিট উঠে গিয়ে খানাখন্দভরা সড়কটি একদম চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সরেজমিনে দেখা যায় সড়কটির ভাবলা থেকে হাড়িসাংগান অংশ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার রাস্তা দিয়ে যানবাহন তো দূরের কথা পায়ে হেঁটে চলারই উপায় নেই। ফলে প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ নানা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে প্রতিনিয়ত। তাছাড়া সড়কের দু’পাশে বিদ্যুতের খুঁটিগুলি রাস্তাটিকে সরু করে দিয়েছে।
যেহেতু কৃষিপ্রধান এলাকা এবং ফলের সময় এটি জ্যৈষ্ঠ, আষাঢ়, শ্রাবণ এই সময়টিতে বিভিন্ন মৌসুমী ফল উৎপাদন এবং বাহারি সবজি চাষ করেন কৃষকরা। এ এলাকায় প্রচুর কাঁঠাল, লটকন, আম, লিচু, জাম, জামরুল ইত্যাদি ফল এবং ঝিঙে, করলা, বেগুন, কাঁকরোল, চিচিঙ্গা, ধুন্দুল, চালকুমড়া, মিষ্টি কুমড়া, শসা ইত্যাদি উৎপাদন হয়। সড়ক অনুপযোগী ও যানবাহন না চলার কারণে কয়েক হাজার কৃষক তাদের উৎপাদিত সবজি ও ফল হাট-বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে না পারায় মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। এ এলাকায় স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার প্রায় ৪ সহস্রাধিক শিক্ষার্থী খানাখন্দভরা কর্দমাক্ত রাস্তায় চরম দুর্ভোগ সয়ে পাঠ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করছে। প্রায় প্রতিষ্ঠানেই অর্ধেকের ও কম শিক্ষার্থী উপস্থিত হচ্ছে।
এসব কাঁদা আর বিপত্তি ঠেলে যারা প্রতিষ্ঠানে যাচ্ছে তারাও শিকার হচ্ছে নানা দূর্ঘটনার এবং অসুস্থ হয়ে পড়ছে অনেকেই। ভাবলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাপ আফ্রাদ জানান, রাস্তার বেগতিক অবস্থার কারণে দূরদূরান্ত হতে শিক্ষার্থীরা আসতে পারছেনা। অতি প্রয়োজনীয় জরুরি ঔষধ, খাদ্য বা অন্যান্য যানও চলাচল করতে পারছে না এ রাস্তায়। মারাত্মক অসুস্থ, আহত, ডেলিভারির কোন রোগীকে নেওয়া যাচ্ছে না হাসপাতালে। ভাবলা, হাড়িসাংগান, আকানগর, চিতাইন সহ বিভিন্ন গ্রামের প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ প্রতিনিয়ত চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।
সড়কের এমন খারাপ অবস্থায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, এলাকার সচেতন নাগরিকদের দাবি পূরণ করতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিল্পমন্ত্রী ও বেলাব-মনোহরদী আসনের সাংসদ গ্রামীণ সড়ক ও অবকাঠামো উন্নয়নের আওতায় এসব রাস্তা সংস্কারের নির্দেশ দেন। সদ্য বিদায়ী উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম তার সহযোগী প্রকৌশলীকে নিয়ে সড়কটি সংস্কার ও প্রশস্ত করণের সম্ভাব্য সব সম্পূর্ণ করার পর জানিয়েছিলেন খুব শীঘ্রই রাস্তার কাজ শুরু হবে। দীর্ঘ ১ বছর অতিক্রান্ত হলেও এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কটির সংস্কার প্রক্রিয়া খাতা-কলমে থাকলেও বাস্তবে নেই।
গতকাল প্রকৌশলী শামসুল হকের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, মূলত সরকের দু’পাশে অবস্থিত বিদ্যুতের খুঁটির কারণে এখনও পর্যন্ত সড়কটি সংস্কার ও প্রশস্ত করণের কাজ হাতে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এ ব্যাপারে মরজাল পল্লীবিদ্যুত সমিতির এজিএমের সাথে কথা হলে কবে নাগাদ খুঁটিগুলো সরানো হবে তার কোন সদুত্তর পাওয়া যায়নি। এদিকে সংস্কারের অভাবে সড়কটির চরমদশায় জনগণের ক্ষোভ বাড়ছে।
Posted ৯:৫৩ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৫ জুন ২০২৩
dainikbanglarnabokantha.com | Romazzal Hossain Robel
এ বিভাগের আরও খবর
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।