বুধবার ৯ অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৪ আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

>>

“সৃজনশীল মেধা বিকাশে শিক্ষকের করণীয়”

খন্দকার আমির হোসেন   |   মঙ্গলবার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩   |   প্রিন্ট

“সৃজনশীল মেধা বিকাশে শিক্ষকের করণীয়”

প্রবন্ধ লেখক: জিনিয়া জিন্নাত, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, শিবপুর, নরসিংদী

শিক্ষা একজন ব্যক্তির জ্ঞান, দক্ষতা, দৃষ্টিভঙ্গি ও মূল্যবোধের বিকাশ সাধন করে। কোনো ব্যক্তির আচরণের কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তনের মাধ্যমে পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিজেকে পরিমার্জিত করে সামনে এগিয়ে চলার নামই শিক্ষা। আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রায়োগিক সম্প্রসারণ ও উৎকর্ষ সাধন এবং বিশ্বায়ন প্রক্রিয়ার ফলে সারাবিশ্বে মানসম্মত শিক্ষার গুরুত্ব বেড়েছে বহুগুণ।মানসম্মত শিক্ষা বলতে যে যোগ্যতাকে বোঝায়, তা হলো একজন শিক্ষার্থী শিক্ষার নির্দিষ্ট স্তর পর্যন্ত জ্ঞান অর্জন করে ব্যক্তি ও জাতীয় জীবনে নৈতিক, মানবিক, ধর্মীয়, সামাজিক, সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠাকল্পে ভূমিকা রাখতে পারবে এবং শিক্ষার্থী তার বাস্তব জীবনে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সক্ষম হবে।
আর প্রাথমিক শিক্ষা হচ্ছে সকল ধরনের শিক্ষার ভিত্তি। তাই ভিত্তিকে মজবুত করার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা থেকেই শিক্ষার গুণগত মানের উন্নয়ন প্রয়োজন।
মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষায় সৃজনশীল মেধা বিকাশের জন্য শিক্ষক কিছু প্রাথমিক উপায় অনুসরণ করতে পারেন। তা হলো:

১. শোনা ও পড়া শিখানো: প্রাথমিক শিক্ষার শুরুতে শিক্ষার্থীদেরকে সাহায্য করতে হবে শোনা এবং পড়ার বিষয়ে। এটা তাদের ভাষা দক্ষতা এবং সংক্ষিপ্ত গণনা শেখানোর একটি মাধ্যম হতে পারে।

২. প্রশ্ন করা ও উত্তর দেওয়া: শিক্ষার্থীদের কাজে সাড়া দেয়ার প্রতি জোর দিতে হবে, তাদের মধ্যে প্রশ্ন করার প্রবৃত্তি তৈরি করা এবং তাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে সহায়তা করা।

৩. সমস্যা সমাধানে অংশ নেওয়া: শিক্ষার্থীদেরকে গাণিতিক বা যে কোনো সমস্যা সমাধানে সাহায্য করা। এতে তাদের সৃজনশীলতা এবং নিজেকে তৈরি করার প্রস্তুতি নিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

৪. সংগ্রহশীলতা ও চিন্তার বিকাশ: প্রাথমিক শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ছোট ছোট কাজে কর্মক্ষমতা বৃদ্ধিতে এবং মজার বা আকর্ষণীয় সংগ্রহশীল কাজে উজ্জ্বীবিত করে সমৃদ্ধ চিন্তা বিকাশে সহায়তা করা।

৫. শিশুদের স্বপ্ন ও আগ্রহ নিয়ে উৎসাহ প্রদান: শিক্ষক শিশুদের স্বপ্ন ও আগ্রহের প্রতি গুরুত্ব দিবেন এবং তাদের প্রেরণা দিবেন যে, যে কোন কিছু বাস্তবে রূপ দেয়া সম্ভব।

৬. সুস্থ স্বাভাবিক প্রতিযোগিতা: সুস্থ স্বাভাবিক বিনোদনমূলক প্রতিযোগিতার আয়োজন এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রতিযোগিতায় আগ্রহ তৈরি করার জন্য প্রোজেক্ট বা কাজে অংশ নেয়া নিশ্চিত করা।

এই প্রস্তাবনাসমূহ মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষায় সৃজনশীল মেধা বিকাশে সহায়ক হতে পারে এবং শিক্ষার্থীদের সৃষ্টিশীল মনোবিকাশে সাহায্যকারী হতে পারে।
এছাড়াও আধুনিক বর্তমান শিক্ষকবৃন্দ নিজ নিজ চিন্তা প্রসূত নতুন নতুন শিক্ষা সহায়ক পাঠদান পন্থা আবিষ্কার করে তা সুন্দরভাবে বাস্তবায়ন করছেন। অর্থাৎ শিশুদের কোন প্রক্রিয়ায় শিক্ষকের পাঠ কার্যক্রম বুঝতে সুবিধা হচ্ছে তা শিক্ষককে অনুধাবন করে সেভাবে পাঠদান পরিচালনা করতে হবে।
শিক্ষককে শিশুসুলভ আচরণ দিয়ে শিশুদের বন্ধুভাবাপন্ন হয়ে পাঠদান করতে হবে। শিশুদের উৎসাহিত করার জন্য নিয়মিত আবৃত্তি, নাচ, গান, অভিনয়সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও খেলাধুলার আয়োজন করতে হবে।
শিশুদের আনন্দময় ও উপভোগ্যমূলক কার্যক্রমে সক্রিয় রেখে পাঠদান প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যেতে পারে। শিশুদের মাঝে মানবিক গুণাবলি জাগ্রত করার জন্য আদর্শমূলক বাণী শোনানো, নৈতিক শিক্ষা বিষয়ক গল্প বলা এবং তা চর্চা করার অভ্যাস তাদের মাঝে গড়ে তুলতে হবে। ছোট থেকেই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নিয়ে শিশুদের মাঝে আগ্রহ ও কৌতূহল তৈরিতে বিভিন্ন উদ্ভাবনী প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে।
অর্থাৎ প্রত্যেকটি শিশুকে তার শারিরীক ও মানসিক বিকাশে পরিপূর্ণতা দানে শিক্ষক সক্রিয় ভূমিকা পালন করবেন। আর এভাবেই সম্ভব আন্তর্জাতিক মানের মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিটি শিক্ষার্থীর জন্য বাস্তবায়ন করা।

Facebook Comments Box

Posted ১২:০১ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩

dainikbanglarnabokantha.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

সম্পাদক

রুমাজ্জল হোসেন রুবেল

বাণিজ্যিক কার্যালয় :

১৪, পুরানা পল্টন, দারুস সালাম আর্কেড, ১০ম তলা, রুম নং-১১-এ, ঢাকা-১০০০।

ফোন: ০১৭১২৮৪৫১৭৬, ০১৬১২-৮৪৫১৮৬

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

design and development by : webnewsdesign.com

nilüfer escort coin master free spins