
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি | সোমবার, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | প্রিন্ট
কুষ্টিয়ার মিরপুরে রাস্তায় গাছ ফেলে পথরোধ করে দুই সাংবাদিকের দুইটি মরটসাইকেল, ল্যাপটপ ও নগদ অর্থসহ মূল্যবান মালামাল ডাকাতি মামলায় তিন জনের ৮ বছর কারাদন্ডাদেশ ও অর্থদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার দুপুরে কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ বিশেষ আদালতের বিচার মো. আশরাফুল ইসলাম জনার্কীর্ন আদালতে আসামীদের উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষনা করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুষ্টিয়া জেলা জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌসুলি এ্যাড. রফিকুল ইসলাম লালন।
তবে এই রায়ের সংবাদ শুনে তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় মামলার বাদী বাবলু রঞ্জন বিশ্বাস বলেন, ‘সাংবাদিক আক্রান্তের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিচারহীনতার বাস্তবতায় এই রায়টি বিরল একটা উদাহরণ হলেও আমি এটিকে বলতে চাই- ‘গুরুপাপে লঘুদন্ড’।
সাজাপ্রাপ্তরা হলেন: ইমারত আলী (২৬), শাহ জামাল (৩২) ও সিরাজ মল্লিক (৪০)। এরা সবাই মিরপুর উপজেলার চিথলিয়া ও নওদাপাড়ার গ্রামের বাসিন্দা।
এছাড়া চার্জশীটভুক্ত অপর ৪ ব্যক্তি যথাক্রমে শামসুল সর্দার ওরফে সাগর, শিপন শাহ, সাবদুল্লাহ ও আরিফ মন্ডলগণের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের খালাস দিয়েছেন আদালত। তবে এই মামলায় চার্জশিটভুক্ত আরও এক ব্যক্তি হাসানুজ্জামান ওরফে সেলিম ওরফে লালন নামের ব্যক্তি ঘটনার কিছুদিন পর বন্দুক যুদ্ধে নিহত হওয়ায় তাকে বিচার প্রক্রিয়া হতে অব্যাহতি দেয়া হয়।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের ১২ এপ্রিল রাত পৌনে ১০ টায় মিরপুর উপজেলার চিথলিয়া গ্রামের ফাকা মাঠের রাস্তায় গাছ ফেলে পথরোধ করে দৈনিক গ্রামের কাগজ পত্রিকার কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি ও মিরপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি বাবলু রঞ্জন বিশ্বাস এবং দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার মিরপুর উপজেলা প্রতিনিধি ও মিরপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারন সম্পাদক মারফত আফ্রিদী গণের ২টি মটরসাইকেল, ১টি ল্যাপটপ, ১টি স্বর্ণের আংটি, নগদ অর্থ ও ৪টি মোবাইল ফোনসহ সংগীয় অন্যান্য মালামাল ডাকাতি করে ছিনিয়ে নিয়ে তাদের হাত পা বেঁধে মাঠের মধ্যে একটি মেহগনি বাগানে ফেলে যায় ১০/১২জনের একটি ডাকাত দল। ঘটনাস্থল থেকে ডাকাত দল ডাকাতি শেষে মালামাল নিয়ে চলে যাওয়ার পর সেখান থেকে গভীর রাতে হামাগুড়ি দিয়ে দু’জন দু’জনের বাধন খুলে মাঠ পেরিয়ে লোকালয়ে এসে শোর চিৎকার করে এলাকাবাসীর সহায়তায় ঘটনাস্থলে গিয়ে কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এঘটনায় আক্রান্ত সাংবাদিক বাবলু রঞ্জন বিশ্বাস পরদিন ১৩ এপ্রিল বাদী হয়ে মিরপুর থানায় অজ্ঞাত ১০/১২ জন ডাকাত দলের বিরুদ্ধে ডাকাতির অভিযোগ এনে মামলা করেন।
মামলাটি তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা মিরপুর থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক মো. আব্দুল হালীম ২০১৭ সালের ৩১ মে ৮ জনের বিরুদ্ধে ডাকাতি ঘটনায় জড়িত অভিযোগ এনে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। এদের মধ্যে আসামী ইমারত ও শাহ জামালের ১৬৪ ধারা জবানবন্দিতে নিজের দায় স্বীকার করে জড়িত অন্য আরও ৬জনের নামোল্লেখ করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌসুলি এ্যাড. রফিকুল ইসলাম লালন জানান,‘মিরপুর থানার এই ডাকাতি মামলাটি মূলত: আন্ত:জেলা ডাকাত দলের সংঘটিত একটি ডাকাতির ঘটনা ছিলো। এ মামলায় অভিযোগ পত্রভুক্ত ৮জনের মধ্যে ৩জনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীত প্রমাণ করতে রাষ্ট্রপক্ষ সক্ষম হওয়ায় তাদের প্রত্যেকের পৃথক ভাবে ৮বছর করে সশ্রম কারাদন্ডসহ ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬মাসের সাজাভোগের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
Posted ১১:২৬ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩
dainikbanglarnabokantha.com | Romazzal Hossain Robel
এ বিভাগের আরও খবর
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।