বৃহস্পতিবার ১৩ মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৮ ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

>>

মাগুরায় লিচু চাষে ৩০ গ্রামের চাষিরা হয়েছে স্বাবলম্বী

রিপন ঘোষ, মাগুরা প্রতিনিধি :   |   রবিবার, ১৪ মে ২০২৩   |   প্রিন্ট

মাগুরায় লিচু চাষে ৩০ গ্রামের চাষিরা হয়েছে স্বাবলম্বী

মাগুরায় লিচুর বাম্পার ফলনে এবং ভালো দাম পেয়ে খুশি চাষিরা। এ বছর অন্তত ২০- ২২ কোটি টাকার কেনাবেচা হবে বলে ধারণা করছেন স্থানীয় লিচু ব্যবসায়ী ও চাষিরা। চলতি গ্রীষ্ম মৌসুমে সদরের বেলনগর, রামনগর, শিবরামপুর, হাজরাপুর, হাজিপুর, বারাশিয়া, রাঘবদাইড়, ইছাখাদা, মিঠাপুর, গাঙ্গনালিয়া, খালিমপুর, মির্জাপুর, পাকাকাঞ্চনপুর, বীরপুর, রাউতড়া, বামনপুর, আলমখালি, বেরইল, লক্ষ্মিপুর, আলাইপুর, নড়িহাটি সহ অন্ততপক্ষে ৩০টি গ্রামে গত ২ দশক ধরে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ৩ শতাধিক চাষিরা লিচুর চাষ করে থাকেন। এ সমস্ত এলাকায় ৩ হাজারেও বেশি বাগান রয়েছে। যেখানে দেশী জাতের পাশাপাশি বোম্বাই ও চায়না-৩ জাতের লিচুর বাগান গড়ে উঠেছে। তবে সদরের ইছাখাদা গ্রামকে বলা হয় লিচুর গ্রাম। এইসব লিচু স্থানীয় বাজারে বিক্রি হলেও বেশির ভাগ লিচু বিক্রির জন্য ফরিদপুর, যশোর ও ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে বলে জানান এখানকার চাষিরা।

মাগুরা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে জেলায় মোট লিচুর আবাদ হয়েছে ৬৩৯ হেক্টর জমিতে। চাষিরা এবার স্থানীয় জাত হাজরাপুরী, মোজাফফরী, বোম্বায়, চায়না-৩ সহ বিভিন্ন জাতের লিচু আবাদ করেছে। জেলার চার উপজেলার মধ্যে সদরে সবচেয়ে বেশি লিচুর আবাদ হয়ে থাকে।
এবার বাগানের প্রতিটি গাছে তুলনামূলক লিচু থাকাতে চাষিরা রয়েছেন খুশিতে। জেলায় ৮ হাজার টন লিচু উৎপাদন হবে এবং ২০ কোটি টাকার লিচু কেনাবেচা হবে। এতে চাষিরা আর্থিকভাবে লাভের মুখ দেখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন কৃষি বিভাগ।

সদরের ইছাখাদা গ্রামের লিচু চাষি কাজী সাইফুল ইসলাম বলেন, আমার ১ টি বাগানে মোট ১১৪ টা লিচু গাছ রয়েছে। বাগানের প্রতিটি লিচু গাছে এবার লিচু হয়েছে। প্রতিটি গাছে ফল থাকাতে আর্থিক ক্ষতির শঙ্কা তেমন নেই। লিচুর মুকুল আসার আগে নিয়মিত সেচ ও সার প্রদান করে এসেছি। মুকুল শেষে লিচু ফল যখন একটু একটু বড় হতে থাকে ঠিক তখনই বৃষ্টি পেয়ে লিচুর জন্য অনেক উপকার হয়েছে। গত বছর প্রচণ্ড খরায় লিচু ফেটে নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। তাপে পুড়ে লিচুর রং নষ্ট হয়ে ফলন বিপর্যয় হয়েছিল। এবার জেলায় লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। এতে আর্থিক সংকট বিপর্যয়ের শঙ্কা থেকে রক্ষা পাব আমরা। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো আমাদের এই লিচু ক্যামিকেল মুক্ত।

ইতোমধ্যে দেশি জাতের স্থানীয় লিচু বাজারে উঠতে শুরু করেছে। শহরের বিভিন্ন বাজারে প্রতি শত লিচু ২ শ থেকে ৩ শ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে বলে জানা গেছে। বরুনাতুল গ্রামের কাশেদ মোল্লা শহরের ঢাকা রোড এলাকায় তিনি প্রতিদিন লিচু বিক্রি করেন। তিনি জানান, ১৪ টা লিচু গাছ ১০ হাজার টাকায় কিনেছি। ইতিমধ্যে ১২ হাজার টাকার লিচু বিক্রি করেছি। এখনো গাছে লিচু যা আছে তাতে ভালোই লাভ হবে। তিনি আরো ৩ টি লিচু বাগান ইছাখাদা গ্রামে কিনেছেন। ইতিমধ্যে সেই বাগানের লিচুতে রং ধরায় গাছ থেকে লিচু নামানো শুরু হয়েছে বলে জানান।

মাগুরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ সুফি মো. রফিকুজ্জামান বলেন, এবার নিদিষ্ট সময়ে বৃষ্টিপাত হওয়াতে লিচু নষ্ট হয়নি। আমরা লিচু চাষিদের নিয়মিত ফ্রেশ পানি দিয়ে সেচ ও গাছের গোড়ায়, পাতায় এবং ফলে স্প্রে করার পরামর্শ দিয়েছি। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে চাষিদেরকে নানা রকম পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন উদ্বুদ্ধমূলক সভা করেছি। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে লিচু চাষ করে জেলার প্রায় ৩০ টি গ্রামের সহস্রাধিক কৃষক পরিবার আত্মনির্ভরতার পথ খুঁজে পেয়েছে।

Facebook Comments Box

Posted ১০:১৫ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৪ মে ২০২৩

dainikbanglarnabokantha.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

সম্পাদক

রুমাজ্জল হোসেন রুবেল

বাণিজ্যিক কার্যালয় :

১৪, পুরানা পল্টন, দারুস সালাম আর্কেড, ১১ম তলা, রুম নং-১১-এ, ঢাকা-১০০০।

ফোন: ০১৭১২৮৪৫১৭৬, ০১৬১২-৮৪৫১৮৬, ০২ ৪১০৫০৫৯৮

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

design and development by : webnewsdesign.com

nilüfer escort coin master free spins