মঙ্গলবার ১৮ মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৪ চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

>>

ঋণ করে টাকা দিলেন তবুও ঘর দিলেন না চেয়ারম্যান

টি.এম.এ হাসান, সিরাজগঞ্জ:   |   মঙ্গলবার, ০২ মার্চ ২০২১   |   প্রিন্ট

ঋণ করে টাকা দিলেন তবুও ঘর দিলেন না চেয়ারম্যান
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার ৩নং সগুনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল্লাহেল বাকীর বিরুদ্ধে অসহায়দের নিকট থেকে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর দেবার কথা বলে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, অসহায়, বিধবা স্বামীহারা মহিলারা ঋণ করে, অন্যের বাড়িতে কাজ করে ও বাড়ির গবাদিপশু বিক্রি করে চেয়ারম্যানের হাতে টাকা তুলে দিয়েও ঘর পাননি তারা। এখন চেয়ারম্যানের নিকট টাকা চাইলে নানান টালবাহানা ও মানসিক নির্যাতন করেন বলেও অভিযোগ করেছেন চেয়ারম্যানকে টাকা দিয়ে ঘর না পাওয়া কয়েকজন ভুক্তভোগী নারী।
তথ্যের ভিত্তিতে সরেজমিনে তাড়াশের সগুনা ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম ঘুরে কথা হয় টাকা দিয়ে ঘর না পাওয়া কয়েকজন ভুক্তভোগী নারীর সঙ্গে। তারা সবাই জানান টাকা দিয়ে ঘর না পাওয়া ও এখন টাকা চাইলে টাকা ফেরত না দিয়ে উল্টো গালিগালাজ করার কথা।
ইউনিয়নের নওখাদা মধ্যপাড়া গ্রামের গ্রামের আব্দুল রতনের স্ত্রী মোছাঃ শাহনাজ পারভীন (৫৬) বলেন, প্রধানমন্ত্রী ঘর দিচ্ছেন জানতে পেরে চেয়ারম্যানের নিকট যাই। তখন তিনি ঘরেএ জন্য ২০হাজার টাকা দাবি করেন। আমি তাকে অনুরোধ করলে সে বলেন ৫হাজার টাকা ছেয়ারে দিলাম ১৫হাজার টাকা দাও। পরবর্তীতে আমি সুদেএ উপরে ১০হাজার টাকা নিয়ে তাকে দেই। দুইমাস পরে সে নিজেই আমাকে ফোন দিয়ে বাকি ৫হাজার ড়াকা দিতে বলেন নইলে ঘর পাবোনা বললে আমি আবারও ৫হাজার টাকা দেই। পরবর্তীতে প্রায় ২বছর পেরিয়ে গেলেও টাকাও দেওনা ঘরও দেয়না। আমি টাকা চাইলেই তিনি গালিগালাজ সহ চরম খারাপ ব্যাবহার করেন। আমার চোখের অপারেশনের জন্য টাকা দরকার হলে আমি বাকী চেয়ারম্যানের কাছে ৩হাজার টাকা ফেরত চাইলে তিনি চরম দুর্ব্যবহার করে পরিষদ থেকে বের করে দেন আর টাকা ঘরের জন্য টিএনও অফিসে জমা দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
ইউনিয়নের ধামাইচ গ্রামের স্বামীহারা শিউলি খাতুন (৪৫) বলেন, আমি ঘরের জন্য দুই ধাপে ২০হাজার টাকা চেয়ারম্যান বাকীর হাতে তুলে দেই। কিন্তু বছর পেরিয়ে গেলেও ঘরও দেননা আবার টাকাও ফেরত দেননা। বরং টাকা চাইলেই নানান খারাপ ব্যাবহার করেন। আমি এখন ঘর না পেলেও আমার টাকা ফেরত চাই।
ইউনিয়নের স্বামী পরিত্যক্তা মোছাঃ হালিমা খাতুন (৫০) বলেন, আমি বাকী চেয়ারম্যানের নিকট ঘরের জন্য গেলে টাকা ছাড়া ঘর হবেনা বলে ২০হাজার টাকা চান। আমি এনজিও থেকে ২০হাজার টাকা ঋণ নিয়ে চেয়ারম্যানকে দেই। কিন্তু বছরের পর বছর যাচ্ছে কিন্তু টাকা ঘর কোনটাই দিচ্ছেনা। স্বামী নাই তাই নিজে মাঠে কাজ করে খাই ও ভাঙ্গা ঘরে থাকি উল্লেখ করে তিনি বলেন এখন আপনাদের মাধ্যমে চেয়ারম্যানকে অনুরোধ জানাচ্ছি হয় আমাকে ঘর দিক নইলে টাকা গুলো ফেরত দিক।
ইউনিয়নের নওখাদা গ্রামের মোঃ সাঈদের স্ত্রী সাকিনা খাতুন (৪৫) অন্যান্যদের মত একই ভাষায় সরল মনে ঘর পাওয়ার আশায় ২০হাজার টাকা বাকী চেয়ারম্যানকে তুলে দেবার কথা বলে জানান, এখন আপনাদের কাছে বিচার চাই। আপনারা হয় আমার ঘর পাওয়ার ব্যাবস্থা নয়তো টাকা ফিরে পাবার ব্যবস্থা করে দেন।
তারা সবাই আরও জানান এরকম অসংখ্য মানুষের কাছ থেকেই চেয়ারম্যান বাকী ঘর দেবার কথা বলে লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়েছেন কিন্তু জানামতে কেওই ঘর পায়নি টাকাও পায়নি। কিন্তু চেয়ারম্যানের ভয়ে তারা কথা বলতেও সাহস পায়না।
এবিষয়ে ৩নং সগুনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল্লাহেল বাকী বলেন, এটা সম্পুর্ন মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। একটি মহল নির্বাচনকে সামনে রেখে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন যেসকল মহিলারা অভিযোগ করেছেন আমি তাদের চিনিনা পর্যন্ত।
তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মেজবাউল করিম বলেন, এবিষয়ে আমি কিছুই জানিনা ও  আমার কাছে কোনও অভিযোগও আসেনি। তবে অভিযোগ আসলে অবশ্যই তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
Facebook Comments Box

Posted ১২:০৬ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০২ মার্চ ২০২১

dainikbanglarnabokantha.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

সম্পাদক

রুমাজ্জল হোসেন রুবেল

বাণিজ্যিক কার্যালয় :

১৪, পুরানা পল্টন, দারুস সালাম আর্কেড, ১১ম তলা, রুম নং-১১-এ, ঢাকা-১০০০।

ফোন: ০১৭১২৮৪৫১৭৬, ০১৬১২-৮৪৫১৮৬, ০২ ৪১০৫০৫৯৮

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

design and development by : webnewsdesign.com

nilüfer escort coin master free spins