বৃহস্পতিবার ২০ মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

>>

ভোলার মেঘনায় ফের সিসি ব্লক ধস, আতঙ্কে স্থানীয় এলাকাবাসী

আলী হোসেন রুবেল, স্টাফ রিপোর্টার ভোলা:   |   সোমবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩   |   প্রিন্ট

ভোলার মেঘনায় ফের সিসি ব্লক ধস, আতঙ্কে স্থানীয় এলাকাবাসী

ভোলার মেঘনায় পুনরায় শুরু হয়েছে সিসি ব্লকের ধস, ভয় এবং আতঙ্কে স্থানীয় এলাকাবাসী। উজান থেকে আসা মেঘনা নদীর পানির তীব্র চাপে ভোলায় ইলিশা লঞ্চঘাট এলাকার তীর সংরক্ষণ সিসি ব্লক বাঁধের আরেকটি পয়েন্টে ধস দেখা দিয়েছে। এতে করে হুমকির মুখে পরেছেন ভোলা শহর রক্ষা বাঁধসহ তিনটি ইউনিয়নের কয়েক লাখ মানুষ। এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ডাম্পিং করে ধস প্রতিরোধ করা চেষ্টা করা হচ্ছে।

জানা গেছে, গেল কয়েক দিন আগে উজান থেকে আসা মেঘনা নদীর তীব্র পানির চাপে ভোলা সদর উপজেলার পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের তালতলি লঞ্চঘাট এলাকার দুইটি পয়েন্টে তীর সংরক্ষণ সিসি ব্লকের ৭০ মিটার ধস দেখা দেয়। ১৪ সেপ্টেম্বর নতুন করে আরেকটি পয়েন্টে ১০ মিটার সিসি ব্লক বাঁধের ধস দেখা দিয়েছে। তিনটি পয়েন্টে মোট ৮০ মিটার মেঘনা নদীর তীর সংরক্ষণ সিসি ব্লকের ধসের কারণে হুমকির মুখে পড়েছে ইলিশার শহর রক্ষা বাঁধ, তিনটি লঞ্চঘাট, দুইটি ফেরিঘাটসহ তিন ইউনিয়নের ফসলি জমি, বসতঘর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন স্থাপনা।

পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের স্থানীয় বাসিন্দা মো. মোর্শেদ আলম নোমান ও মো. মিজানুর রহমান বলেন, কয়েক দিন আগে ইলিশা তালতলি লঞ্চঘাট এলাকায় দুইটি পয়েন্টে সিসি ব্লক বাঁধ ধসে পড়েছে। বুধবার ইলিশা লঞ্চঘাট এলাকায় আরেকটি পয়েন্টে ধস শুরু হয়েছে। এভাবে যদি ব্লক বাঁধ ধসে যায় তাহলে আমাদের ইলিশসহ কাচিয়া ও রাজাপুর ইউনিয়নে অনেক বতসঘর, ফসলি জমি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন স্থাপনা হুমকির মুখে পরবে।

মো. নান্নু পাটোয়ারী জানান, তিনি মেঘনা নদীর বাঁধ ভাঙনের ফলে নিজের বসতঘর, ফসলি জমি হারিয়েছেন। এখন কয়েক বছর ধরে পরিবারের সবাইকে নিয়ে ইলিশা লঞ্চঘাট এলাকায় মেয়ে জামাইর বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। যদি জামাইর বাড়িও ভাঙনের শিকার হয় তাহলে তাকে স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে রাস্তায় আশ্রয় নিতে হবে।

মো. রিয়াজ জানান, ব্লক বাঁধ ধসে যাওয়ায় আমার একটি দোকান ভেঙে গেছে। এখন ব্যবসা করতে পারছি না। আমার দাবি ধসে যাওয়া ব্লক বাঁধে দ্রুত কাজ করে যেন ধস বন্ধ করা হয়।

ইলিশা বাঁচাও আন্দোলন কমিটির আহ্বায়ক মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ভোলার ইলিশা মেঘনা নদীর পয়েন্টে অসংখ্য ডুবো চরের কারণে উজান থেকে আসা পানির অতি স্রোতে ইলিশার তিনটি পয়েন্টে ধস দেখা দিয়েছে। এটি যদি দ্রুত বন্ধ না করা হয় তাহলে হুমকির মুখে পড়বে ইলিশাসহ আরও দুইটি ইউনিয়ন। আমি সরকারের কাছে আবেদন করছি অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে ধসে যাওয়া স্থান সংস্কার করে স্থায়ী ব্লক বাঁধ নির্মাণ এবং ইলিশা পয়েন্টের মেঘনা নদীর ড্রেজিংয়ের ব্যবস্থার করে এ সমস্যা সমাধান করার জন্য।

ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো ডিভিশন-১) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাসানুজ্জামান বলেন, আগে দুইটি পয়েন্টে ৭০ মিটার ধস হয়। সর্বশেষ আবার আরেকটি পয়েন্টে ১০ মিটার ধসে যায়। আমরা ধস প্রতিরোধে ৫৪ লাখ টাকা ব্যায়ে ১২ হাজার জিও ব্যাগ ফেলে তিনটি পয়েন্টের ধস প্রতিরোধে কাজ করছি। আগের বরাদ্দ দিয়ে ধস প্রতিরোধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে যদি এটিতে প্রতিরোধ করা না যায় তাহলে বরাদ্দ বাড়িয়ে জিও ব্যাগ বাড়ানো হবে।

এদিকে ২০১৭-২১ সাল পর্যন্ত একটি প্রকল্পের মাধ্যমে ৩৩৫ কোটি টাকা ব্যায়ে ভোলার পূর্ব ইলিশার সাজি কান্দি থেকে রাজাপুরের জোর খাল পর্যন্ত চার কিলোমিটার নদীর তীর সংরক্ষণ ও সাড়ে তিন কিলোমিটার সিসি ব্লক দ্বারা বাঁধ সংরক্ষণ করা হয়।

Facebook Comments Box

Posted ১০:২৭ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩

dainikbanglarnabokantha.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

সম্পাদক

রুমাজ্জল হোসেন রুবেল

বাণিজ্যিক কার্যালয় :

১৪, পুরানা পল্টন, দারুস সালাম আর্কেড, ১১ম তলা, রুম নং-১১-এ, ঢাকা-১০০০।

ফোন: ০১৭১২৮৪৫১৭৬, ০১৬১২-৮৪৫১৮৬, ০২ ৪১০৫০৫৯৮

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

design and development by : webnewsdesign.com

nilüfer escort coin master free spins