
এনামুল হক,শেরপুরঃ | মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩ | প্রিন্ট
শেরপুরে দিনমজুর স্ত্রীকে ভিজিডি কার্ড দেওয়ার আশ্বস্ত করে ৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় স্থানীয় মেম্বার। পরে কার্ড না দেওয়ায় টাকা ফেরত চাইতে গেলে মেম্বার এবং তার ছেলে কর্তৃক মারধর ও শ্লীলতাহানীর ঘটনা ঘটে।অশ্রু সিক্ত কন্ঠে এমনটাই অভিযোগ করেন ভূক্তভোগী ঐ নারী। অভিযুক্ত মো. মোস্তফা মস্তু (৪০) শেরপুর সদর উপজেলার লছমনপুর ইউনিয়নের কান্দাশেরীরচর এলাকার ইউপি সদস্য মো. নুরুজ্জামান মেম্বারের ছেলে।
স্থানীয় মাতাব্বরদের কাছে বিচার না পেয়ে ভুক্তভোগী নারী ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সং/২০০৩) এর ১০ ধারায় বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন। যার মামলা নম্বর ১২২/২০২৩। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য বিরাজ করছে। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তদন্ত স্বাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দেয়া হয়েছে।
সরেজমিনে গেলে ভুক্তভোগী ওই নারী ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে টাকা ছাড়া কার্ড দেয়া হবে বলে জানালেও মেম্বারদের কারনে আমরা টাকা ছাড়া কার্ড পাইনা। এই মেম্বার ও তার ছেলে টাকা ছাড়া কোন কার্ড দেয়না। আমি টাকা দিয়ে এক মাস যাবত পিছে পিছে ঘুরতেছি। পরে কার্ড না পেয়ে টাকা ফেরত চাইতে তার বাড়িতে গেলে মেম্বার আমাকে মারধর করে। পরে তার ছেলে আমাকে ঘরে নিয়ে মারধর সহ খারাপ আচরন করেছে। আমি এর সঠিক বিচার চাই।
এছাড়াও ওই এলাকার গৃহবধু সাজেদা বেগম অভিযোগ করে বলেন,“মেম্বার আমার আমার কাছেও কার্ড দেয়ার জন্য ৭ হাজার টাকা চায়। পরে সে তার স্ত্রীকে আমার বাড়িতে পাঠালে ৫ হাজার টাকা, ছবি ও আইডি কার্ড দেই। এছাড়া আবেদন করার জন্য ১শ টাকা দেই। কিন্তু কার্ড না দিয়ে ১৫ দিন পরে আমার টাকা ফেরত দেয়।”
একই গ্রামের সাফিয়া বেগম নামের আরেক ভুক্তভোগী বলেন, “মেম্বার আসলেই মানুষের কাছে টাকা নেয়। সে আমার কাছ থেকে ১৫ টাকা দরের চালের কার্ড দেয়ার কথা বলে ১হাজার টাকা নিয়েছিলো কিন্তু কার্ড দেয়নি। দুই মাস পরে আমার টাকা ফেরত দিয়েছে। সে যার কাছে বেশি টাকা পায় কার্ড তাকে দেয়, আর কম টাকা ওয়ালাদের টাকা ফেরত দেয়।”
এ বিষয়ে লছমনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বলেন, “আমি ঘটনাটি লোক মুখে শুনেছি। তবে উভয় পক্ষের কেউ আমাকে কিছু বলেনি। তবে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহন করবো।”
এবিষয়ে শেরপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, “আমি বিষয়টি জানিনা। তবে ভিজিডি কার্ডের বিপরীতে টাকা নেওয়ার কোনো নিয়ম নেই।”
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহনাজ ফেরদৌস বলেন, “এই ব্যাপারটা আমি আপনার কাছে থেকেই প্রথম জানলাম। টাকা নেয়ার ব্যাপারে ভুক্তভোগী যদি আমাদের লিখিল অভিযোগ করেন তাহলে তদন্ত স্বাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
তাছাড়া যদি নির্যাতন করে থাকে তাহলে সেটা একটা ফৌজদারী অপরাধ। যেহেতু একটা রেগুলার মামলা হয়েছে। মামলা মামলার গতিতে চলবে। এমন কাজ করে থাকলে তার অবশ্যই বিচার হওয়া উচিত।”
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত মেম্বার মো. নুরুজ্জামান বলেন, “আমি কোন টাকা নেইনি। আমাকে অসম্মান করার জন্য এই অপবাদ দেয়া হয়েছে।” এছাড়াও তার ছেলে মোস্তফা বলেন, “এগুলো সব ষড়যন্ত্র, সাজানো নাটক। আমি তাকে কোন ধরনের নির্যাতন করিনি।”
Posted ১০:০৫ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩
dainikbanglarnabokantha.com | Romazzal Hossain Robel
এ বিভাগের আরও খবর
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।