
শরীফ আহমেদ প্রতিবেদনঃ | সোমবার, ২৭ মার্চ ২০২৩ | প্রিন্ট
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইল দক্ষিণপাড়ার আবাসিক এলাকাতে একের পর এক গড়ে উঠছে অবৈধ শিল্প-কারখানা। আবাসিক এলাকায় কারখানার অবাধ অবস্থানে অসহায় এই এলাকায় স্হানীয় এলাকাবাসী। ফলে বাধ্য হয়েই এলাকাবাসীর অনেকই কারখানা ভবনে কিংবা এর আশপাশে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস করতে হচ্ছে। এতে প্রচণ্ড শব্দ দূষণসহ নানা ধরনের দূষণের শিকার হচ্ছেন এলাকাবাসী।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ী মাতুয়াইল মেডিকেল রোডে, মাতুয়াইল দক্ষিণ পাড়া,কদমতলা,মোঘল নগর,বানিয়ার বাগ,রহমতপুর,আবাসিক এলাকায় স্থায়ী বাসিন্দা বিভিন্ন ব্যক্তির বিরুদ্ধে তার স্থায়ী আবাসিক বাড়িতে অফিস, ফ্যাক্টরি/কারখানা তৈরি করে ভাড়া দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, এসব কারখানায় প্যাকেজিং, মশার কয়েল,নকল বিদ্যুতের তার,জর্দা,প্লাষ্টিক বোতল রিসাইক্লিং, পুঁস্তক বাঁধাই,সিলিংন ফ্যান ফ্যাক্টরি,গাছের টিম্বার স” মিল সহ টিভির মনিটর কারখানায় তৈরি করা হয়। এসব কারখানা থেকে ভয়াবহ শব্দ দূষণের শিকার হচ্ছে। ওই আবাসিক এলাকার স্থায়ী ও অস্থায়ী বাসিন্দরা। এমনকি আগুনসহ বড় কোনো দুঘর্টনাও হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
এ ছাড়াও কারখানার উচ্চ শব্দে বিশেষ করে শিশুদের শ্রবণশক্তি হ্রাস ও মানসিক বিকাশে বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে। শিশুদের পড়ালেখা ও ঘুমের ব্যাঘাত ঘটছে বলেও অভিযোগ স্হানীয় এলাকাবাসী।
অনুসন্ধানে এলাকাবাসী আরো জানায়,কারখানার কতিপয় কর্মচারী এলাকায় উঠতি বয়সের কিশোর ছেলেদের কারনে ইভটিজিংসহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যা করে আসছে। একই সঙ্গে দিনে-রাতে মহল্লায় রাস্তায় পণ্যবাহী গাড়ী মালামাল লোডিং এবং আনলোডিংয়ের জন্য ভ্যান গাড়ি ও পিকআপ ভ্যান রাখলে ওই রাস্তা দিয়ে গাডি চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। পাশাপাশি মানুষের হেটে চলাফেরাতেও ব্যঘাত ঘটে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা অভিযোগ দৈনিক বাংলার নবকন্ঠকে বলেন, সরকার আবাসিক এলাকা থেকে কারখানা সরিয়ে নেয়ার নিদের্শ দিলেও কিছু লোক তাদের জায়গা থেকে কারখানা না সরিয়ে বরং সাইবোর্ডবিহীন কারখানা ভাড়ায় দিয়েছেন। এসব কারখানায় সকাল থেকে রাত ৩টা পর্যন্ত কাজ চলে।
কোনো প্রকার সরকারি ছুটির দিন এমনকি শুক্রবারেও এসব কারখানা বন্ধ থাকে না। দিন-রাত তারা কাজ চালিয়ে যায়। সারা দিনের কাজ শেষে ঘরে ফিরে আসা ক্লান্ত স্হানীয় বাসিন্দারা কারখানার শব্দের কারণে ঠিকমত ঘুমাতেও পারেন না। বাচ্চারা ঠিকমতো পড়ালেখাও করতে পারে না।
এতে কারখানার আশপাশের বসবাসকারী এলাকাবাসী দিন দিন স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে। এ ছাড়াও, কোনো কারণে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে তবে তার ভয়াবহতা কল্পনাও করা যাবে না। তাছাড়া এসব কারখানার বিদ্যুতের ওভার লোডিং এর কারণে ঘটছে বিদ্যুৎ বিভ্রাট।
তারা আরও বলেন, এসব কারখানা স্থাপনের জন্য যদি পরিবেশ অধিদফতর কিংবা রাজউক ছাড়পত্র দিয়ে থাকে তবে এলাকাসী হিসেবে আমাদের কিছু করার নাই। এসব কারখানা যদি কোনো প্রকার কাগজপত্র ছাড়াই তাদের অবৈধ্য কার্যক্রম পরিচালনা করে আসে তাহলে এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা হিসেবে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানাই আবাসিক এলাকায় এসব অবৈধ্য কারখানাগুলো বন্ধের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
এসব কারখানাগুলো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে শব্দ দূষণ, কালো ধোঁয়া ও চলাচলের অসুবিধার কারণে এলাকাবাসীকে নিজেদের পৈত্রিক বাড়ি ছেড়ে অন্য কোথাও চলে যেতে হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরও কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা ও আশপাশে দোকানীরা জানান, একেবারে অবৈধভাবে তারা কাজ করে যাচ্ছে। এখনই যদি এ বিষয়টা সমাধান না করা যায় তবে ভবিষ্যতে এই কারখানা থেকে ভয়াবহ দুঘর্টনায় পড়বে এলাকার বাসিন্দারা। এমনকি প্রাণহানির ঘটনাও ঘটতে পারে।
Posted ৮:২৩ অপরাহ্ণ | সোমবার, ২৭ মার্চ ২০২৩
dainikbanglarnabokantha.com | Romazzal Hossain Robel
এ বিভাগের আরও খবর
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।