মোঃআল আমিন | শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | প্রিন্ট
কলাপাড়ার বিভিন্ন ইউনিয়নে দৃশ্যমান হয়ে উঠছে আমন চারার সবুজ পাতার সমারোহ। প্রকৃতির বৈরীতায় এবার কিছুটা বিলম্বিত হলেও দল বেঁধে, রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে আমন ধানের স্বপ্ন বুননে শেষ সময়ের ব্যস্ততায় দিন পার করছেন উপক‚লের কৃষক। এ বছর ৩০ হাজার ৭০০ হেক্টর আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ২৫ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে আমন চাষাবাদ শেষ করেছে কৃষক। বৈরী আবহাওয়া কেটে যেতেই লক্ষ্যমাত্রার অবশিষ্ট জমিতে আগামী দু’চার দিনের মধ্যেই আমন চাষাবাদ শেষ হওয়ার কথা জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। স্থানীয় কৃষি বিভাগের দাবী, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্নতা অর্জনে সার্বক্ষনিক কৃষকের পাশে রয়েছে কৃষি বিভাগ। কৃষককে দেয়া হচ্ছে প্রনোদনার বীজ, সার।
কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, দেশের দক্ষিনাঞ্চলের দুর্যোগপ্রবন এলাকায় প্রতিবছরই লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আমন ধানের বাম্পার ফলনে উচ্ছসিত কৃষক। তবে ¯øুইজগেট আটকে প্রভাবশালীদের মাছ চাষে অতি বর্ষন ও অস্বাভাবিক জোয়ারের পানি নামানো এবং প্রয়োজনের সময় নদী-খালের পানি ওঠানো সম্ভব হয় না কৃষকের পক্ষে।শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের নিয়ে গ্রæপ করে কৃষি প্রশিক্ষনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে কৃষককে। কৃষি বিভাগের প্রশিক্ষন পেয়ে ধান চাষের পাশাপাশি পতিত জমিতে লাউ, কুমড়া, করলা, ঝিঙা, বরবটি, শষা সহ মৌসুম ভেদে বিভিন্ন সবজি চাষ করে সফলতা অর্জন করেছে চাষীরা। এতে স্বচ্ছলতা ফিরেছে তাদের পরিবারে। ফলে কৃষিতে আগ্রহ বেড়েছে বেকার যুবকদের। উপকূলের ১ হাজার ৮ শ’ ৯০ জন কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে জনপ্রতি ৫ কেজি ধানবীজ ও ২০ কেজি রাসায়নিক সার বিতরন করা হয়েছে। এর আগে ১ হাজার ২ শ’ ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে ৬ হাজার পিচ নারিকেল চারা বিতরন করা হয়েছে। এছাড়া কৃষককে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষাবাদে উদ্বুদ্ধ করতে চাষাবাদের জন্য ট্রাক্টর, কীটনাশক স্প্রে করার জন্য মেশিন, ফুট পাম্প, ধান কাটার জন্য হারভেষ্টার সুবিধা দেয়া হচ্ছে।
টিয়াখালী ইউনিয়নের বিশকানি এলাকার কৃষক নসু সিকদার বলেন, ’এবছর ঘূর্নিঝড় ’রেমাল’র তান্ডব যেতে না যেতেই একের পর এক নিম্ন চাপের প্রভাবে অস্বাভাবিক জোয়ারের পানি সহ অতিরিক্ত বৃষ্টিতে আমন বীজ তলা পঁচে গেছে। নতুন করে বীজ তলা তৈরী করে আবার ধানের চারা করতে হয়েছে।’একর প্রতি জমি চাষাবাদে খরচ পড়েছে ১৫ হাজার টাকা।’সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত মূল্যে সার, কীটনাশক বিক্রী করছেন ডিলাররা। চাপলি বাজারের খুচরা ডিলারের দোকান থেকে প্রতি বস্তা টিএসপি সার কিনতে হয়েছে ১৮০০ টাকা, ইউরিয়া ১৪০০ টাকা এবং ড্যাপ সার ১২০০ টাকা। এছাড়া কীটনাশকও কিনতে হয়েছে বেশী দামে।’
কৃষি বিভাগের উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষন কর্মকর্তা আ. রহমান বলেন, ’কলাপাড়ায় এ বছর উফশী জাতের উচ্চ ফলনশীল আমন ধান বিআর-১১, বিআর-২২, বিআর-২৩, স্বর্নমুশুরী, ব্রী ধান-৪৯, ব্রী ধান-৫১, ব্রী ধান ৫২ চাষ হয়েছে শতকরা ৭০-৭৫ ভাগ। এছাড়া স্থানীয় বিভিন্ন জাতের আমন ধানের চাষ করেছেন কৃষক।’উপজেলা কৃষি অফিসার মো. আরাফাত হোসেন বলেন, ’ কৃষি বিভাগের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে কৃষককে সার্বক্ষনিক সেবা দিচ্ছে। আমি নিজেও প্রতিদিন এক একটি গ্রামে গিয়ে কৃষি কাজ পরিদর্শন সহ কৃষকের সাথে কথা বলি। কৃষকের যেকোন সমস্যা দ্রæত সমাধানের উদ্দোগ নেই। ’ ’সার ডিলারদের অফিস থেকে তদারকি করা হচ্ছে। সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশী মূল্যে সার বিক্রীর সুযোগ নেই। কারও বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে নীতিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
Posted ১২:৪৯ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
dainikbanglarnabokantha.com | Romazzal Hossain Robel
এ বিভাগের আরও খবর
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।