
শরীফ আহমেদ, বিশেষ অনুসন্ধানী প্রতিবেদন: | বৃহস্পতিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট
শরীফ আহমেদ বিশেষ অনুসন্ধানী প্রতিবেদন:
রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনাল এলাকায় থেমে নেই মাদক ও রমরমা দেহব্যবসা। এই জমজমাট ব্যবসাটি চলছে মিরপুর দারুসসালাম থানাধীন এলাকায় ঢাকার গাবতলী আন্তর্জাতিক বাস টার্মিনালের সামনে অবস্থিত স্বাগতম নিউ আগমন যমুনা ও টায়ারপট্টি’র রজনীগন্ধ্যা বলাকা আবাসিক হোটেল সহ মোট বেশ কয়েকটি হোটেলে দীর্ঘদিন ধরে লোকচক্ষুর আড়ালে চলে আসছে অনৈতিক দেহ ব্যবসা। এই আবাসিক হোটেল গুলো দেহ ব্যবসা পরিচালনা করেন লিভ মামুন। বিষয়টি নিশ্চিত হতে লিড মামুন বিষয়টির স্বীকারও করেন অনুসন্ধানী প্রতিবেদক কাছে। জাতীয় দৈনিক বাংলার নবকণ্ঠে অনুসন্ধানীর টীম সরজমিনে জানতে পারে, দারুস সালাম থানা ও স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ি প্রশাসনকে ম্যানেজ করে লিড মামুনের নেতৃত্বে অবৈধ দেহ ব্যবসা পরিচালনা করে থাকেন।আর ওই হোটেলে উঠতি বয়সী ছেলে-মেয়েরাসহ বিভিন্ন শহর ও গ্রামঞ্চাল থেকে আগত যাত্রী ও মোটর শ্রমিকদের আনাগোনাই বেশি। এতে ধ্বংস হচ্ছে যুব সমাজ। হোটেলে এই ব্যবসার বিষয়টি স্বীকারও করেছেন হোটেলটির ম্যানেজার ও । অনেক কিছুই ম্যানেজ করে এ কাজ করা হয় বলে জানা যায়।
বাংলার নবকন্ঠের অনুসন্ধানী টীম সরেজমিন গেটে ঢুকতেই দেখা যায়, বাবু সোনা আসো বলে রিসিপশনে দাঁড়িয়ে আছেন একজন মধ্যম বয়সের পতিতালয় নারী। দ্বিতীয় ধাপে আসবে কাস্টমারের পছন্দের নারী খোঁজ মিলবে, ইচ্ছে মতো রমনীদের দেখে-শুনে কথা বলে পছন্দ করার বিষয়টি। রুমে রুমে রয়েছে একাধিক নারী। বিভিন্নভাবে কাস্টমারকে আকৃষ্ট করতে তারা ব্যস্ত। পছন্দ হলে চলে দরকষাকষি। বাস্তবে এমন চিত্র দেখা গেছে যে, দরকষাকষির এক পর্যায়ে হোটেল থেকে ফিরে আসতে গেলে যে কোনো একজন একটু আড়ালে ডেকে নিয়ে কিছু অশ্লীল কথা বলে। একই সাথে বিভিন্নভাবে অঙ্গাভঙ্গির মাধ্যমে আকৃষ্ট করার চেষ্টাও করছে হোটেলে থাকা মেয়েরা।অনুসন্ধানী টিম কৌশলে একজন কাছে পরিচয় জানতে চাইলে নিজেকে কলেজ ছাত্রী বলে দাবি করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব অবৈধ দেহ ব্যবসায় জড়িতরা বিভিন্ন স্কুল কলেজ ও গ্রামঞ্চাল থেকে এসেছে তারা। এদের রয়েছে এক ধরনের দালাল চক্রের নেটওয়ার্ক। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন এলাকার পরিবেশ-পরিস্থিতি বুঝে এই অবৈধ ব্যবসা করে আসছে বলে জানা যায়।
সরেজমিনে গেলে হোটেল কর্তৃপক্ষ ওই অবৈধ কর্মকান্ডের তথ্য আনতে প্রতিবেদকের বাধা সৃষ্টি করে। আবাসিক হোটেলের নামে দিনের পর দিন চলছে এই রমরমা দেহ ব্যবসা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আবাসিক হোটেলে কর্মরত এক ব্যক্তি জানান, আমি এখানে চাকরি করি। হোটেলের মালিক পক্ষ বিভিন্ন বয়সের নারীদের নিয়ে এসে অসামাজিক কর্মকান্ডের ব্যবসা চালিয়ে আসছেন।
এই অবৈধ অসামাজিক ব্যবসার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদে রাগান্বিত হয়ে স্বাগতম ও রজনীগন্ধ্যা হোটেলের ম্যানেজার ও মালিক হারুন হুমকি ধামকিও চাঁদাবাজী মামলা দিবে বলে বাংলার নবকণ্ঠের অনুসন্ধানের টিমকে হুমকি দেন। তিনি উচ্চ স্বরে বলেন এ ব্যবসা ঢাকা শহরে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে এবং দেহ ব্যবসা চলবে আপনার পারলে কিছু করার থাকলে কইরেন।মিরপুর এক নম্বরের বাগদাদ, হোটেল ডায়মণ্ড, হোটেল টাইম স্টার, হোটেল গোল্ড স্টার, হোটেল শাহ আলী, হোটেল প্রিন্স সহ গোটা মিরপুরের প্রায় সবগুলিই হোটেলেই কমবেশি অসামাজিক কার্যকলাপ চলছে প্রশাসনের নাকের ডগাতেই।
এই আবাসিক হোটেল গুলোতে একজন নারীর সাথে রাত কাটাতে হলেও গুনতে হয় কয়েক গুণ ভাড়া। বেশি অর্থ উপার্জনের লোভেই হোটেল মালিকদের এই জঘন্য কাজে লিপ্ত করেছে।
ঢাকার বেশীর ভাগ আবাসিক হোটেলগুলোর আয়ের সবচেয়ে বড় মাধ্যম হচ্ছে নারীর দেহ ব্যবসা। একবাক্যে হোটেলগুলোকে বলা যায় মিনি পতীতালয়। হোটেল কর্তৃপক্ষ অনেকেই হুঙ্কার দিয়ে জানান, প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই এসব ব্যবসা পরিচালিত হচ্ছে। জানা যায়, দেহ ব্যবসার জন্য প্রতিমাসে প্রশাসনের কিছু অসৎ সদস্যদের বড় অংকে উৎকোচ দিয়েই নির্বিঘ্নে চলে এই অনৈতিক কার্যকলাপ।ঢাকার মধ্যে সবচেয়ে বেশী দেহ ব্যবসার প্রসার ঘটেছে গাবতলীতে।
এদিকে গাবতলীর আবাসিক হোটেল মধুমতি, হোটেল চৌধুরী, হোটেল বলাকা, হোটেল রোজ হ্যাভেন , হোটেল নিউ আগমন, হোটেল যমুনা, হোটেল স্বাগতম, টায়ার পট্টি হোটেল রজনীগন্ধা ও বলাকা সহ এখানে দুই শিফটে মেয়েরা দেহ ব্যাবসা করছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খরিদদার আসছে। পতিতাদের নিয়ে রাত্রী যাপনের জন্যেও রয়েছে নিরাপদ ব্যবস্থা। এসব অবৈধ কারবারিদের সাথে সখ্যতা রয়েছে প্রশাসনের কর্মকর্তারা। ফলে এই বিষয়ে কেউ কোনো প্রতিবাদ করার সাহস পায় না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে হোটেলের কয়েকজন কর্মচারী জানান, এসব হোটেলে দেহ ব্যবসার পাশাপাশি মাদক বেচাকেনা, জুয়া খেলা, রাজধানীর সন্ত্রাসীদের বিশাল একটি গ্রুপের সাথে বিভিন্ন বিষয়ে রফাদফার মত কাজও চলছে।
Posted ৮:০৪ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২২
dainikbanglarnabokantha.com | Romazzal Hossain Robel
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।