
আলমগীর সুমন, বান্দরবান প্রতিনিধি : | শনিবার, ০১ জুলাই ২০২৩ | প্রিন্ট
ভ্রমণের জন্য বাংলাদেশের এবং বিশ্বের পর্যটন পিপাসু পর্যটকদের স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম বান্দরবান পার্বত্য জেলা । এবার ঈদের ছুটিতে বান্দরবানের পর্যটন স্পোর্ট গুলোতে পর্যটকের তেমন একটা ভিড় দেখা যাচ্ছে না বললেই চলে । সাজিয়ে রাখা হোটেল-মোটেলগুলো অনেকটাই পর্যটকশূন্য হয়ে আছে।
হোটেল, মোটেল, রেস্টুরেন্ট, ব্যবসায়ীদের দাবি, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুল প্রচারণায় সৃষ্ট নিরাপত্তাহীনতার ধারণার প্রভাবে পর্যটকেরা বান্দরবানে আসছে না। বাস্তবে দেশের অন্যান্য ভ্রমণ স্থানের মতো এটিও অনেক নিরাপদ জায়গা মনে করেন ব্যবসায়ীরা । বান্দরবান সদরউপজেলা, লামা, আলীকদম ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় নিরাপদেই ভ্রমণ করা যাচ্ছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা ।
বান্দরবান হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, সৌন্দর্যেপর্যটনের সম্ভাবনার শীর্ষে বান্দরবান জেলা। এই জেলা সদরে ও উপজেলায় ১৫০টির বেশি হোটেল, মোটেল, অবকাশ যাপনকেন্দ্র,রয়েছে । রয়েছে প্রায় দেড়শোর মত রেস্টুরেন্ট, ভাড়ায়চালিত চার শতাধিক গাড়ি ও ট্যুর গাইডসহ বিভিন্নভাবে সরাসরি কর্মরত প্রায় ৭ হাজার মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে ঈদুল আযহার ২য় দিনে জেলা শহরের পর্যটন স্পোর্ট গুলোর মধ্যে মেঘলা ও নীলাচল,শৈলপ্রপাত,স্বর্ণমন্দির,রুপালি ঝরনা, এইসব পর্যটনকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, আশপাশের এবং বান্দরবান সদরের কিছু তরুণ-তরুণী ঘুরতে এলেও বাইরের কোন পর্যটকর দেখা যায় নি। পর্যটন স্পট নীলাচলের কর্মরত আদিব বড়ুয়া জানান, গত ঈদের চেয়েও এবারে পর্যটকের সংখ্যা অনেকটাই কমে গেছে।
হোটেল-মোটেলের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও চাঁন্দের গাড়ি চালকেরা প্রায় সবাই কর্মহীন অলস সময় কাটাচ্ছেন। হোটেল নাইট হ্যাভেন এর ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ ফারুক বলেন, গত ঈদে হোটেলের ২০ শতাংশ আগাম বুকিং হয়েছিল। এবারে পাঁচ শতাংশও হয়নি।
আরণ্য হোটেলের মালিক জসীম উদ্দিন বলেন, হোটেলগুলো এখন মালিকদের কাছে সাদা হাতিতে পরিণত হয়েছে। করোনাভাইরাসের মহামারি থেকে তাঁরা লোকসান দিয়ে আসছেন। বাধ্য হয়ে ১১ জন কর্মচারী থেকে ছয়জনকে ছাঁটাই করেছেন। ঈদের ছুটিতে কর্মচারীদের বেতনের টাকা হলেও পাবেন আশা করেছিলেন। কিন্তু হোটেল এখনো সম্পূর্ণ খালি।
হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলামের হিসাব অনুযায়ী, বান্দরবানে হোটেল-মোটেলগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারী কমপক্ষে দুই হাজার, ভাড়ায়চালিত চার শতাধিক চাঁন্দের গাড়ি, জিপসহ বিভিন্ন যানবাহন এক হাজার (মালিক-শ্রমিক), নৌকাচালক, ট্যুর গাইড ও খাবারের দোকান কর্মচারী মিলিয়ে প্রায় সাতহাজার মানুষ সরাসরি কর্মহীন হয়ে পড়েছেন।পর্যটকদের বান্দরবানমুখী না হওয়ার পেছনে ভুল প্রচারণাকে দায়ী করেছেন সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলায় নিরাপত্তাজনিত কারণে পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞার রয়েছে বিষয়টি সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে প্রতিনিয়ত ভুলভাবে তুলে ধরা হচ্ছে। বাস্তবে এই তিন উপজেলায় ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা থাকলেও বাকি চারটি উপজেলা নিরাপদ। অথচ ভুল প্রচারণার কারণে ভ্রমণকারীদের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতার ধারণা সৃষ্টি হয়েছে।
Posted ১১:৫৬ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০১ জুলাই ২০২৩
dainikbanglarnabokantha.com | Romazzal Hossain Robel
এ বিভাগের আরও খবর
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।