আল-মাসুদ লিটন, জামালপুর ( প্রতিনিধি ) : | বুধবার, ২৪ মার্চ ২০২১ | প্রিন্ট
জামালপুরের আকলিমা খাতুন নামে এক নারী স্বামী কর্তৃক প্রতারণা, শারীরিক নির্যাতন, জমি উদ্ধার ও মিথ্যা মামলার স্বীকার হয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে। মঙ্গলবার দুপুরে শহরের গেইট পাড় এলাকায় ফটোজার্নালিস্ট এসোসিয়েশন মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন নির্যাতনের শিকার আকলিমা খাতুন ও তার পরিবার। আকলিমা খাতুন জামালপুর সদর উপজেলার শ্রীরামপুরের রঘুনাথপুর এলাকার বাসিন্দা মৃত আয়নাল মন্ডলের কন্যা। সংবাদ সম্মেলনে আকলিমা খাতুন ও তার পরিবার লিখিত বক্তব্যে বলেন, জামালপুর সদর উপজেলার শ্রীরামপুরের রঘুনাথপুর এলাকার বাসিন্দা মোতালেব মাষ্টারের ছেলে শিক্ষা অফিসার মাজেদুল ইসলাম (এটিও) এর বাড়ীতে দীর্ঘদিন যাবত ঝি এর কাজে করে আসছেন। হঠাৎ একসময় বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে ঝি এর কাজ করা অবস্থায় বাড়ির মালিক মাজেদুল ইসলাম সম্প্রতি তার কাজের ঝি আকলিমা খাতুনকে রান্না ঘর থেকে জোরপূর্বক অন্যরুমে নিয়ে ধর্ষণ করে। দীর্ঘদিন একই ভাবে কাজের ঝিকে নানা ভয়ভিতি দেখিয়ে ধর্ষণ করে আসছে মাজেদুল। এক পর্যায়ে কাজের ঝি আকলিমা খাতুন অন্তসত্বা হয়ে পরে। বিষয়টি জানাযানি হলে বাড়ির মালিক মাজেদুল ইসলাম স্থানীয় কুচক্রি মহলের সাথে পরামর্শ করে ঘটনার বিষয় অবগত না করে তড়িঘড়ি করে জামালপুরের পিঙ্গলহাটি এলাকার বাসিন্দা আঃ ছাত্তারের ছেলে রুকন (২২) সাথে কৌশলে গত ৮ মার্চ ২০১৯ইং তারিখে টাকার বিনিময়ে বিবাহ দিয়ে দেয়। বিয়ের ৩ মাস পরেই আকলিমা খাতুনের মৃত বাচ্চা প্রসব করে। বিয়ের তারিখের সাথে সন্তান জন্মের তারিখে গড়মিল থাকায় তার স্বামী ও স্বামীর পরিবার তাকে নানা প্রশ্ন করে। তাদের প্রশ্নের জবাতে স্বামী রুকন ও রুকনের পরিবারকে পূর্বের সব ঘটনা খুলে বলে আকলিমা। পরে স্থানীয়রা বিবাহীত স্বামী রুকনের কাছ থেকে আকলিমা খাতুনকে নিয়ে শিক্ষা অফিসার মাজেদুল ইসলামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। মৃত বাচ্চাসহ এই ঘটনায় পরবর্তীতে জামালপুর সদর থানায় মাজেদুল ইসলামকে আসামী করে ধর্ষণ মামলার অভিযোগ দায়ের করেন আকলিমা। জামালপুর সদর থানা মামলা নং- ২৭/২৯১, তারিখ- ১১-০৫-২০১৯ইং। মামলার প্রেক্ষিতে সদর থানা পুলিশ মৃত বাচ্চাকে উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করে ও ধর্ষক মাজেদুল ইসলামকে কে গ্রেফতার করে জেলা হাজতে প্রেরণ করে। মাজেদুল ইসলামের চাকুরীর কথা বিবেচনা করে তার পরিবার গ্রাম্য শালিশীর মাধ্যমে গত ৩০-০৫-১৯ ইং তারিখে মাজেদুল ইসলাম, আকলিমা বেগমের নামে ৬০ শাতাংশ জমি সাব কবলা মূলে লিখে দিয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করেন। যার দলিল নং- ৬৬৪৮, ১১-০৬-২০১৯ইং।
নিকাহ্নামা নং- ২৮৭/২০১৯ইং, পৃষ্ঠা নং -০১৩, রেজিঃ তারিখ- ৩০-০৫-১৯ ইং। বিবাহের পর মাজেদুল ইসলাম আকলিমা খাতুনকে ধর্ষণের মামলা নিস্পত্তির জন্য চাপ সৃষ্টি করে এবং অমানবিক শারীর নির্যাতন শুরু করে। পরে মামলা নিস্পত্তি ও তার স্ত্রীকে জমি ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য হুমকি প্রদান করে। এক পর্যায়ে জোরপূর্বক আকলিমা বেগমকে জামালপুর ফৌজদারী অফিসে এনে প্রতারণা করে ৬০ শতাংশ জমি লিখে নেয় এবং জোরপূর্বক তালাক নামায় স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। এছাড়াও আকলিমা বেগমকে মাজেদুল ইসলাম ও তার আগের স্ত্রী নাজমা খাতুন, বড় ভাই মনহর মাষ্টার প্রতিনিয়তই শারীরিক নির্যাতন করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। মাজেদুল ইসলাম তার ২য় স্ত্রী আকলিমা বেগমের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে। সেই ঘটনার প্রেক্ষাপটে আকলিমা খাতুন অসহায় হয়ে সুবিচারের আশায় সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে আকলিমা বেগম ঘটনার সকল বিবরণ তুলে ধরে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও প্রতারক স্বামী মাজেদুল ইসলাম এটিওর বিচার দাবী জানান। এসময় উপস্থিত ছিলেন আকলিমা বেগমের মা হাজেরা বেগম, বড় ভাই হাজিুল, ভাতিজা রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও স্থানীয় এলাকার শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম।
Posted ৪:৩০ অপরাহ্ণ | বুধবার, ২৪ মার্চ ২০২১
dainikbanglarnabokantha.com | Romazzal Hossain Robel
এ বিভাগের আরও খবর
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।