• শিরোনাম

    নেত্রকোনায় তীব্র শীত উপেক্ষা করেও বরো আবাদে ব্যস্ত কৃষকরা

    রিপন কান্তি গুণ, বৃহস্পতিবার, ২৫ জানুয়ারি ২০২৪

    নেত্রকোনায় তীব্র শীত উপেক্ষা করেও বরো আবাদে ব্যস্ত কৃষকরা

    apps

    নেত্রকোনায় তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশা উপেক্ষা করেই বোরো মৌসুমের চারা রোপণের কাজ শুরু করেছে কৃষকরা। ফলে বেড়েছে কৃষকদের কর্মব্যস্ততা। শৈত্য প্রবাহ উপেক্ষা করে বোরো চাষে ব্যস্ত সময় পার করেছে তারা।হাল চাষ, জমি তৈরি করে বীজতলা থেকে বোরো ধানের চারা উঠানো শেষে এবার জমিতে চারা রোপণের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলার কৃষকরা।

    সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখাগেছে, চারদিকে কুয়াশার চাদরে ঢাকা শীতের সকালের হিমেল হাওয়া উপেক্ষা করে কৃষকরা ধানের চারা রোপণের ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। জেলার প্রতিটি উপজেলার বেশিরভাগ ফসলি জমিতে বিভিন্নজন বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত কেউ কেউ ট্রাক্টর দিয়ে হাল চাষ করছেন। কেউ আবার স্যালো মেশিন দিয়ে জমিতে পানি দিচ্ছেন, কেউবা বীজতলা থেকে ধানের চারা উঠাচ্ছেন। বেশকিছু জমিতে আবার কৃষকরা চারা রোপণ করে ফেলেছেন।

    নেত্রকোনা সদরের দক্ষিণ বিশিউড়া গ্রামের কৃষক জামাল মিয়া বলেন, আমি এবার এক একর জমিতে চারা রোপণ করেছি। চারা রোপণের জন্য খরচ হয়েছে প্রায় ৮ হাজার টাকা। কৃষিকাজ করেই আমার সংসার চালাই। তাই লাভের আশায় শীতকে তুচ্ছ মনেকরে ভাল ফসল ফলাতে পরিশ্রম করে যাচ্ছি। আশাকরছি এবার ভাল ফসল পাবো।

    কৃষক জীবন সুত্রধর বলেন, চারার চাহিদা পূরণের জন্য আমি কৃষি অফিসের পরামর্শে ইতোমধ্যে এক বিঘা জমিতে ব্রি-৭৪ বীজ বপন কাজ সম্পন্ন করেছি। বর্তমান আবহাওয়া অনুকূল থাকায় বীজতলা থেকে সুস্থ সবল চারা পাওয়ার আশা করছি।

    জমিতে চারা রোপন করতে শ্রমিক সংকটে পড়তে হচ্ছে তাকে। কৃষকেরা একসাথে জমি তৈরি ও চারা রোপন করায় এরকমটা হচ্ছে বলে মনে করছেন স্থানীয় কৃষকরা।

    বারহাট্টা উপজেলা সদরের কাশবন গ্রামের অরুণ সরকার বলেন, চলতি মৌসুমে আমি পাঁচ কাঠা (৫০ শতাংশ) জমি বোরো আবাদের জন্য প্রস্তত করছি। এর জন্য বীজতলার চারাও তৈরি করেছি। তবে তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে চারা রোপণে বিপাকে পড়তে হচ্ছে।

    হাওরাঞ্চল খালিয়াজুড়ি উপজেলার বোয়ালি গ্রামের কৃষক সবুজ মিয়া বলেন, তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশায় ঘর থেকে বের হওয়া যাচ্ছে না। ফলে এবার বোরো মাঠ প্রস্তুত করা কঠিন হয়ে পড়ছে। তীব্র শীত না থাকলে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে বোরোর চারা রোপণ শুরু করা যেতো। সময়মতো রোপণ করতে না পারায় বীজতলার চারা নষ্ট হতে বসেছে। এবার ঠিকমতো ফসল ঘরে তুলতে পারবো কিনা তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।

    কেন্দুয়া উপজেলার দেওপাড়া গ্রামের কৃষক হাদিস বলেন, আমি আমন মৌসুমে উপজেলা উপসহকারী কৃষি অফিসারের পরামর্শে তার ২ বিঘা জমিতে ব্রি-৮০ জাতের স্বল্পমেয়াদী ধান চাষাবাদ করেছিলাম। কৃষি প্রণোদনা হিসাবে আমি বোরো ধানের বীজ পেয়েছি। চাষাবাদের জন্য বোরো মৌসুমে আমি ব্রি-৮৪ ধানের বীজতলা তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছি।

    শুধু সবুজ মিয়া নন, তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে জেলার বেশিরভাগ কৃষক বোরো ধানের চারা রোপণ করতে পারছেন না। অনেকেই সেচের জন্য নালা এবং মাঠ প্রস্তুত করছেন।

    জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ নুরুজ্জামান জানান, এখনও বরো আবাদের অনেক সময় বাকি আছে। শীতের তীব্রতা কমে আসলে কৃষকরা চারা রোপণ করতে পারতেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বোরো আবাদে তেমন সমস্যা হবে না বলে তিনি মনে করেন।

    তিনি আরও জানান, চলতি মৌসুমে নেত্রকোনা জেলায় ১ লক্ষ ৭২ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ৩০ হাজার ৯২৫ হেক্টর জমিতে চারা রোপণ করা হয়েছে।

    আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানাযায়, সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। দিন ও রাতের তাপমাত্রা পার্থক্য হ্রাসের কারণে দেশের উত্তর, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল এবং মধ্যাঞ্চলে মাঝারি থেকে তীব্র শীতের অনুভূতি অব্যাহত থাকতে পারে।

    বাংলাদেশ সময়: ১:৪৮ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৫ জানুয়ারি ২০২৪

    dainikbanglarnabokantha.com |

    এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

    আর্কাইভ