• শিরোনাম

    নীলফামারী ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ওষুধ-এক্সরে ফিল্ম সংকট

    সোহাগ ইসলাম, নীলফামারীঃ শুক্রবার, ১৭ মার্চ ২০২৩

    নীলফামারী ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ওষুধ-এক্সরে ফিল্ম সংকট

    apps

    নীলফামারী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে এক্সরে ফিল্ম সংকট দেখা দিয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন রোগী ও স্বজনরা। বাধ্য হয়ে পৌর শহরের বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিক থেকে চড়া মূল্যে এক্সরে করাচ্ছেন রোগীরা।
    এদিকে হাসপাতালে ওষুধ সংকটও প্রকট। প্রয়োজনের বেশিরভাগ ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে এমন অভিযোগ রোগী ও স্বজনদের। এছাড়া হাসপাতালে মানসম্মত সেবা না পাওয়ার অভিযোগও করেছে অনেকে। কর্তৃপক্ষ বলছে, টেন্ডার জটিলতায় এমন সংকট দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি চিকিৎসক সংকট থাকায় ব্যাহত হচ্ছে সেবা।
    হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে হাসপাতালে নেই এক্সরে ফিল্ম। ফিল্ম সংগ্রহের জন্য গত অক্টোবরে টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। ফাইল জমা হলেও এখনো অনুমোদন পায়নি কর্তৃপক্ষ। কবে অনুমোদন হবে নিশ্চিত না ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
    একইভাবে বরাদ্দ ও টেন্ডার জটিলতায় ওষুধের সাপ্লাই নিতে না পারায় ডাইক্লোফেনাক, ইউডেন প্লাস, জেন্টামাইসিন, মক্সিন ইনজেকশন, অমিপ্রাজল ইনজেকশন, রেনিটিট, ফ্যামোডিন সিরাপ, বারবিট সিরাপ, অমিডন সিরাপ, ডন সিরাপসহ সিভিট ও সব ধরনের ভিটামিনের সংকট দেখা দিয়েছে। তবে এক মাসের মধ্যে সংকট সমাধান হতে পারে বলে আশাবাদী কর্তৃপক্ষ।
    উত্তর ইটাখোলা এলাকার আবু তাহের। কোমর ও পায়ের ব্যথা নিয়ে ভর্তি হয়েছেন সদর জেনারেল হাসপাতালে। ভর্তির পর এক্সরের জন্য বাইরে যেতে বললে তিনি হাসপাতালে করার অনুরোধ জানান। তাতেও কাজ না হলে সুদের ওপর ৩ হাজার টাকা ধার নিয়ে ১৩০০ টাকা দিয়ে পৌর শহরের এ আর জেনারেল হাসপাতাল থেকে এক্সরে করেন তিনি।
    আবু তাহের বলেন, ‘বাবা আমরা তো গরিব মানুষ। টাকা নাই। এখানে আসি বাইরে চিকিৎসা না নেওয়ার লাগি। এটে এক্সরে করলে ৩০০ টাকায় হয়। ক্লিনিকে ১৩০০ নিছে। এখন টাকা নাই কেমন করি ওষুধ কিনমো। ওষুধ ও বাইরে থাকি কিনির লাগে। কি করমো বাবা।’
    বেড়া ডাঙ্গা যাদুর হাটের লাভলী বেগম বলেন, ‘স্বামীর পায়ে অসুস্থতায় দুমাস ধরে আছি হাসপাতালে। দুটা এক্সরে করা লাগছে বাইরে। ৯০০ টাকা নিয়েছে। এটা তো আমাদের গরীব মানুষের ক্ষতি। এখানে এক্সরে করলে অল্প টাকায় হতো।’
    দারোনী এলাকার মনির হোসেন বলেন, ‘এখানে কোনো সেবাই নাই। এক্সরে করতে বাইরে যাওয়া লাগে, ওষুধ কিনতে বাইরে যাওয়া লাগে। তাহলে গরিব মানুষ এখানে কেন ভর্তি হইছে। এখানে সব সেবা পাইলে সুবিধা হইতো। পয়সাও কম লাগতো। এখন বাইরে তো পয়সা বেশি লাগছে।’
    তহিদুল ইসলাম নামের আরেক রোগী বলেন, ‘ওষুধ লিখে দিয়ে ওরা বলছে বাইরে থেকে কিনে খাইতে। আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম যে এখান থেকে তো দেওয়ার কথা। তারা বলছে এখানে নাই, কিনে খেতে হবে। আমরাও কিনে খাচ্ছি। ভর্তি হইছি চার দিন হয়। ডাক্তার আজকে দেখতে এলো। বলেছেন প্লাস্টার করতে হবে। সেবার মানটা খুব একটা ভালো তা না। এটাই ভাই এই মেডিকেলের অবস্থা।’
    এ বিষয়ে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. মো. গোলাম রসুল রাখি বলেন, আমাদের ২৫০ শয্যা হাসপাতাল হলেও এখানে রোগী প্রায় তিন শতাধিক। রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি থাকায় যে বরাদ্দ আছে এক্সরে ফিল্ম তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। অতিরিক্ত বরাদ্দ নিয়েছিলাম সেটিও শেষ। এমএসআর এর যে টেন্ডার আছে সেখানে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে আমরা সাপ্লাই নিতে পারবো।
    তিনি আরও বলেন, আমাদের ওষুধ সংকট আছে সেটাও সত্যি। আমাদের আইডিসিএলের ওষুধ বরাদ্দ আছে কিন্তু টেন্ডারের ওষুধের বরাদ্দ না থাকায় সাপ্লাই নিতে পারিনি। চিকিৎসক সংকট থাকায় আমাদের চিকিৎসা সেবাও ব্যাহত হচ্ছে। গুনগত সেবা প্রদান করতে হিমশিম খাচ্ছি।
    হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. আবু আল হাজ্জাজ বলেন, মন্ত্রণালয়ে ফাইল জমা হয়েছে। শিগগির সব সংকট সমাধান হবে।

    বাংলাদেশ সময়: ১১:৩৬ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ১৭ মার্চ ২০২৩

    dainikbanglarnabokantha.com |

    এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

    আর্কাইভ