খুলনা ব্যুরোঃ | শুক্রবার, ১২ মে ২০২৩ | প্রিন্ট
ঘূর্ণিঝড় মোখা’র ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে খুলনায় ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জেলার ৯টি উপজেলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৪০৯টি আশ্রয় কেন্দ্র ও ১১৬টি মেডিক্যাল টিম খোলা হয়েছে জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুম। খুলনা জেলা প্রশাসনের সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
এই সূত্র জানান, ঘূর্ণিঝড় মোখা’র ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে খুলনায় ৪০৯টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। এসব আশ্রয় কেন্দ্রে ২ লাখ ৭৩ হাজার ৮৫০ জন মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে। তাদের জন্য প্রয়োজনীয় শুকনা খাবার, পানি, শিশুখাদ্য ও ওষুধের ব্যবস্থা করা হয়েছে। গবাদী পশু রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রস্তুত রয়েছে ফায়ার সার্ভিসের ৩টি রেসকিউ টিম। এছাড়া নৌ-বাহিনী, কোস্টগার্ড, পুলিশের সদস্যরা নিরাপত্তায় কাজ করবেন।
সূত্র আরও জানান, উপকূলের ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ মেরামতে কাজ চলছে। জেলার ৯৫ ভাগ ধান কাটা হয়েছে। ঝড়ের পূর্ব সব ধান কাটা হবে। আর পাকা আম পাড়ার জন্য বলা হয়েছে। মানুষকে সচেতন করতে কাজ করছে রেডক্রিসেন্ট ও সিপিপিসহ বিভিন্ন এনজিও সংস্থার স্বেচ্ছাসেবকরা। খোলা হয়েছে জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুম।
খুলনা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখা’র বিষয়ে ৬ ঘণ্টা অন্তর অন্তর আমরা অবজারভ করছি। ১৪ মে রাতে এই ঝড় উপকূলে আঘাত হানতে পারে। খুলনার উপকূলে যদি আঘাত নাও করে তবুও হালকা বাতাস ও বৃষ্টি হতে পারে।
খুলনা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আব্দুল করিম বলেন, আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি সব সময় মনিটরিং করা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রী, শুকনা খাবার, পানি, শিশুখাদ্য মজুদ রয়েছে।
তিনি জানান, জেলার উপকূলীয় কয়রা, দাকোপ, পাইকগাছা, বটিয়াঘাটা ও ডুমুরিয়া উপজেলা সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। ইতিমধ্যে এ সব উপজেলার আশ্রয়কেন্দ্রগুলোকে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। বর্তমানে সমুদ্র বন্দরগুলোতে ২ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেওয়া হয়েছে। সাধারণত ৪ নম্বর সংকেত দেওয়ার পর মানুষজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার কথা বলা হয়। আমরা উপকূলীয় অঞ্চলে সর্বক্ষণ নজরদারি করছি। এছাড়া ৬ হাজার ২৬০জন স্বেচ্ছাসেবী, ১১৬টি মেডিক্যাল টিম, ফায়ার সার্ভিস, রেড ক্রিসেন্টসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যদের আগেভাগেই প্রস্তুত করা হচ্ছে।
খুলনা সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডাক্তার শেখ সাদিয়া মনোয়ারা উষা বলেন, মানুষের চিকিৎসাসেবায় ১১৬টি মেডিকেল টিম, প্রয়োজনীয় ওষুধ ও অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রয়েছে। সেই সঙ্গে আমাদের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে।
খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখার পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে জেলার ৪০৯টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে আসা মানুষদের জন্য শুকনা খাবার, পানি, চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। খোলা হয়েছে নিয়ন্ত্রণকক্ষ। এছাড়া নির্দেশনা অনুযায়ী এসএসসি পরীক্ষার মালামাল সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কৃষি, প্রাণী ও মৎস্য বিভাগকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড প্রস্তুত রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ মেরামতের জন্য বলা হয়েছে। প্রতি মুহূর্তে ঘূর্ণিঝড়ের গতিবিধি দেখা হচ্ছে। দুর্যোগপূর্ব সার্বিক প্রস্তুতি আমরা গ্রহণ করেছি।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড় মোখা’র ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে বৃহস্পতিবার (১১ মে) বিকেল ৪টায় খুলনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন।
সভায় জেলার ৯ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের সতর্ক থাকা এবং উপকূলবাসীদের নিরাপদে রাখতে যথাসময়ে আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়ার উদ্যোগ নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়।
Posted ৭:২৬ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ১২ মে ২০২৩
dainikbanglarnabokantha.com | Romazzal Hossain Robel
এ বিভাগের আরও খবর
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।