• শিরোনাম

    রাজধানীর ডেমরা মল্লিকা টাওয়ারে রেস্টুরেন্টের নামে মদের রমরমা ব্যবসা।

    শরীফ আহমেদ প্রতিবেদনঃ বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩

    রাজধানীর ডেমরা মল্লিকা টাওয়ারে রেস্টুরেন্টের নামে মদের রমরমা ব্যবসা।

    apps

    রাজধানী ডেমরা থানার অন্তর্ভুক্ত ডিএসসিসি ৬৪ নং ওয়ার্ডে মল্লিকা টাওয়ার তৃতীয় তলা “হলদি রেস্টুরেন্ট এন্ড পার্টি সেন্টারের” নামে ভিতরে চলছে দেশে-বিদেশি মদের রমরমা ব্যবসা। বর্তমানে স্হানীয় এলাকার উঠতি বয়সী যুবক তরুন কিশোর ছেলেরা মাদকের আসক্তে অসংখ্য সামাজিক সংকট ও সমস্যায় জর্জরিত পুরো এলাকা জুড়ে বিরাজ করছে। স্থানীয় এলাকা ঘুরে সরেজমিনে দেখা যায় ঢাকা-০৫ নির্বাচনী এলাকা একটি ঘনবসতি এলাকা এই এলাকায় বহু নাম করা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কলেজ মসজিদ মাদ্রাসা এই এলাকায় অবস্থিত। এখানে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সামাজিক অবক্ষয় নেই বললেই চলে। এখানে ধর্মপ্রাণ মুসলমানসহ নানা শ্রেণি পেশার লাখো মানুষের বসবাস। এছাড়া মদের বারটির ২০০ গজ দূরে গোলাম মোস্তফা কলেজ ও শামিম শিকদার স্কুল অ্যান্ড কলেজ অবস্থিত।
    কিছু দুর সামনেই ঐতিহ্যবাহী সামসুল হক খান স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও মান্নান স্কুল অ্যান্ড কলেজ অবস্থিত। পাশাপাশি মদের বারের ভবনটিতে ডেমরা সাব রেজিস্ট্রার অফিস, ব্যাংক, উপরে আবাসিক বাসাবাড়ী, পাশে মেডিক্যাল হাসপাতাল আশপাশে ৮টি মসজিদ, ৫টি মাদরাসাসহ ডেমরা থানা এলাকায় অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও মসজিদ-মাদরাসা রয়েছে।

    স্থানীয় এক ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, মদের বারটি চালানোর অনুমোদন রয়েছে স্টাফ কোয়ার্টার এলাকায়, কিন্তু তারা জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে জোরপূর্বক বাঁশেরপুল এলাকায় বার করেছে। অনেক আগেই ডেমরায় শিক্ষার মানোন্নয়ন বৃদ্ধি পাওয়ায় এখান থেকে অনেক শিক্ষার্থী দেশের বড় বড় পর্যায়ে নিজের জীবন গড়েছেন। এভাবে যদি মদের বার অবাধে চলতে থাকে তাহলে আগামী প্রজন্ম ধ্বংস অনিবার্য।

    বেশ কিছুদিন ধরে লক্ষ্য করা যাচ্ছে মদের বারটি এই এলাকায় প্রতিষ্ঠা লাভ করার পর থেকে ১৫ হতে ২০/২২ বয়সে কিশোর ছেলেদের যাতায়াত চোখে পড়ার মতো,এই মদের বারকে কেন্দ্র করে এলাকায় চুরি ছিনতাই কিশোরগ্যাং সহ সব অপরাধ ব্যাপক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। রাত দিন দুপুরবেলায় রাস্তায় মাতলামি করছে মারামারি ঝঁগড়া ঝাঁটি আধিপত্য বিস্তার করছে। এই উঠতি বয়সের ছেলেরা মদের টাকা জোগাড় করার জন্য নিজের বাবা মা আত্নীয় স্বজনদের গায়ে হাত তুলছে বাড়ী ঘর ভাংচুর করছে এবং বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ডের সাথে জড়িয়ে যাচ্ছে। “হলদি রেস্টুরেন্ট পার্টি সেন্টারে”সরকারি ২০১৮ সালে আইনে বলা আছে মদের বারের লাইসেন্স ছাড়া ব্যতীত কেউ মদ খেতে পারবে না বা বহন করতে পারবে না। কিন্তু এখানে দেখা যাচ্ছে কিশোর বয়সী ছেলেদের “হলদি রেস্টুরেন্ট এন্ড পার্টি সেন্টারে” মদ খেতে আসা হিরিক পড়েছে। হলদি পার্টি সেন্টার রেস্টুরেন্ট রিপিশসনে প্রকাশ্য বিদেশী মদ বিক্রি করছে। এরা পার্সেল বিক্রি করছে মদ। অনুসন্ধানের স্হানীয় একটি কলেজে কলেজ পড়ুয়া ছাএ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জানায়,আমরা কয়কদিন আগে ৩ জন বন্ধু মিলে বাঁশেরপুল মদের বারে যাই স্বল্প দামে বিভিন্ন ধরনের দেশী বিদেশী মদের সমারহ সাঝিয়ে রাখচ্ছে নিজের চোখে দেখলাম। আমার সহপাঠি আমাকে জোড় করে খাওয়ালো এর পর থেকে আমি নিয়মিত কাস্টমার বাঁশেরপুল মদে আসরে। আমি প্রায় সপ্তাহে চার পাঁচ দিন আসি হলদি রেস্টুরেন্ট পার্টি সেন্টারে মদ খেয়ে যাই।তারই ধারাবাহিকতায় রাজধানী ডেমরার শান্তি বিনষ্ট হয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে শিক্ষা ব্যবস্থাসহ যুব তরুণ সমাজ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। বাড়ছে সামাজিক অবক্ষয়। মদ সহজলভ্য হলে নেশায় বুঁদ হয়ে থাকছে যুব সমাজসহ কিশোর বয়সী ছেলে স্হানীয় এলাকাবাসী। তাই মদের বারটি দ্রুত বন্ধ করা প্রয়োজন।

    এই বাঁশেরপুল হলদি মদের বারের জন্য এলাকায় অটোরিকশা ইজিবাইক চুরি ঘটনা ঘটছে।ডেমরা যাএাবাড়ী মাতুয়াইল সারুলিয়া সহ পাশ্ববর্তী এলাকা সমুহ সামাজিক সমস্যার হলো মাদক সেবন ও নেশা করা। ইসলামে সব ধরনের মাদকদ্রব্য নিষিদ্ধ হলেও ধর্মীয় মূল্যবোধ হারিয়ে যুব সমাজ মাদকের মরণ নেশায় মেতে উঠেছে। বাংলা ‘নেশা’ শব্দটি মূলত ফার্সি শব্দ ‘নাশাতুন’ থেকে উদ্ভূত, যার অর্থ হচ্ছে ‘মত্ততা’। বর্তমান সময়ে অধিকাংশ যুব সমাজ মাদক-আক্রান্ত হয়ে ধ্বংসের অবলীলায় নিপতিত হতে দেখা যায়। বিভিন্ন ধরনের মাদকের সয়লাব যুবকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়াতে তারা কোনো না কোনো উপায়ে নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছে। মাদক বর্তমানে এত বেশি ব্যাপক আকার ধারণ করছে, যার ভয়ানক প্রভাব ও বিস্তার লক্ষ্য করা যায় আমাদের মানুষ গড়ার আঙ্গিনা-শিক্ষাঙ্গন গুলোতেও। এটি বর্তমান সময়ে যুব সমাজের জন্য এটি একটি ভয়ানক পরিণতি ও অশনি সংকেত। তাই, বর্তমানে যদি একজন যুবক নষ্ট হয়ে যাওয়ার আগে তাকে সঠিক পথে রাখার জন্য কিংবা মাদক থেকে দূরে রাখার জন্য সময়মত সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করা হয়, তাহলে যুব সমাজের কাছে জাতির যে প্রত্যাশা তা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হতে বাধ্য।

    যুব সমাজ ধ্বংস ও তাদের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের প্রধান অন্তরায় মাদক। মাদক শুধু একজন যুবকের মেধা ও সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের প্রতিবন্ধক নয় বরং মাদক একজন যুবককে ধ্বংসের অবলীলা ও মারাত্মক পরিণতির দিক ঠেলে দিয়ে তাকে চিরতরে ধ্বংস ও অকেজো করে দেয়। তার মূল্যবান জীবনটা নষ্ট হয়ে যায়।

    ইসলামি মূল্যবোধ বান্ধব সমাজ ব্যবস্থা ছাড়া সব সমাজেই মাদকের ছুটাছুটি পরিলক্ষিত। মুসলিম পারিবারিক বন্ধন ও ইসলামি মূল্যবোধ কম-এমন পরিবারের সদস্যরা অতি সামান্য কারণে মাদকদ্রব্যে অধিকতর আসক্ত হচ্ছে। যারা নেশা করে তাদের অধিকাংশই জানে, নেশা কোনও রকম উপকারী বা ভালো কাজ নয় এবং তা মানুষের জীবনীশক্তি বিনষ্ট করে। এসব জেনেশুনেও মাদকাসক্ত মানুষ নেশার অন্ধকার জগতের মধ্যে থাকতে চায়। মাদকাসক্ত তরুণ প্রজন্ম ধর্ম-কর্ম সবকিছু বিসর্জন দিয়ে হতাশাকে সঙ্গী করে জীবনের চলার পথ থেকে বিভ্রান্ত হয়ে পড়ছে এবং বিবেক-বুদ্ধি হারিয়ে সামাজিকতা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। ইসলাম মানুষকে নেশা গ্রহণ ও মাদক সেবন হতে সম্পূর্ণ নিষেধ করে। মানুষকে ধ্বংস ও করুণ পরিণতি হতে রক্ষা করার জন্য ইসলামী অনুশাসন মেনে চলার কোনো বিকল্প নাই। তাই আমাদের জানতে হবে ইসলাম মাদক সম্পর্কে কি দিক-নির্দেশনা দেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‌আলাইহি ওয়াসাল্লাম সতর্কবাণী উচ্চারণ করে বলেছেন,

    “যে কোনো ধরনের নেশাজাত পানীয় হারাম”।মানবসভ্যতার প্রতি মারাত্মক হুমকি সৃষ্টিকারী দেশের অন্যতম অভিশাপ মাদকাসক্তি। মাদকদ্রব্যের নেশার ছোবল এমনই ভয়ানক যে তা ব্যক্তিকে পরিবার, সমাজ, দেশ থেকেই বিচ্ছিন্ন করে না; তা সমগ্র জীবন ধ্বংস করে দেয়। মাদক কেবল সমাজ, জাতি ও রাষ্ট্রেরই ক্ষতি করে না; সভ্যতা ও সংস্কৃতিকেও বিপন্ন করে। পরিমাণে অল্প হোক আর বেশি হোক-পান বা অন্য কোনোভাবে গ্রহণ করা হোক, নেশা ও চিত্ত-বিভ্রমক হলেই তা ইসলামে সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। মানবতার মুক্তির কাণ্ডারি ইসলামই সর্বনাশা মাদক সম্পর্কে মানব জাতিকে সর্বোচ্চ সতর্ক করছে। এদিকে দেশকে মাদকমুক্ত করতে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার কঠোর অবস্থান পালন করছে। এ বিষয়ে দেশরত্ন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকার মাদক প্রায় জিরো টলারেন্সে নেমে এসেছে। সরকারের মাদক বিরোধী কার্যকরী কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক ভাবে প্রশংসার জায়গা দখল করে নিয়েছে। তাপসের দাবি এই “হলদিয়া পার্টি রেস্টুরেন্ট মদের” বারটি দ্রুত যাতে বন্ধ হয় সে ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ও স্থানীয় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী জনপ্রতিনিধিসহ সকলের সুদৃষ্টি কামনা করছেন এলাকাবাসী।

    বাংলাদেশ সময়: ১১:৪৩ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩

    dainikbanglarnabokantha.com |

    এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

    আর্কাইভ