
খুরশীদ আলম, পীরগাছা | বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | প্রিন্ট
গত সোমবার রংপুরের পীরগাছায় হিজবুত তাওহীদ কর্মীদের সাথে এলাকাবাসীর সংঘর্ষের ঘটনায় সংগঠনটিকে নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরের পর উপজেলার পারুল ইউনিয়নের নাগদাহ সিদাম থেকে এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে দেউতি বাজারে প্রায় ২০ মিনিটের মত পীরগাছা – রংপুর মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। এ সময় হিজবুত তাওহীদ নিষিদ্ধের দাবিতে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে দেখা যায় বিক্ষুব্ধদের। পরে ওই বাজারে মানববন্ধন থেকে সংগঠনটিকে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে নিষিদ্ধের দাবিতে আল্টিমেটাম দেওয়া হয়।
ঘন্টাব্যাপী চলা ওই মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, হিজবুত তাওহীদ আওয়ামী লীগের মদদপুষ্ট একটি সংগঠন। তারা নবী-রাসুল, হাদিস মানেন না। তারা ইসলাম ধর্মকে বিতর্কিতভাবে উপস্থাপন করে। আমাদের এলাকায় ওই সংগঠনের নেতাকর্মীরা সোমবার সকালে গোপন বৈঠক করছিল। এলাকাবাসী বাধা দেওয়ায় তারা এলাকাবাসীর উপর হামলা করে। এতে এলাকাবাসীর অনেকে গুরুতর আহত হন। আমরা এর বিচার চাই।
মিজানুর রহমান নামে একজন তার বক্তব্যে বলেন, মহানবীকে (সাঃ) অবমাননাকারী ইসলাম বিরোধী ওই সংগঠনকে আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে নিষিদ্ধ করতে হবে। নয়তো তারা বৃহত্তর কর্মসূচি গ্রহণ করবেন।
এর আগে গত সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে উপজেলার নাগদাহ ছিদাম এলাকায় হিযবুত তাওহীদের রংপুর বিভাগীয় সভাপতি আবদুল কুদ্দুস শামীমের বাড়িতে একটি সভা আয়োজনকে কেন্দ্র করে হিযবুত তাওহীদের কর্মীদের সঙ্গে এলাকাবাসীর সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের অন্ততঃ ১৫ জন আহত হন। এ সময় ৭টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ-ভাংচুর ও প্রায় ২০টি মোটর সাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়। পরে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় মিজানুর রহমান নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে হিজবুত তাওহীদের ৩৯ জন কর্মী-সমর্থক ও ৩-৪শ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামী করে পীরগাছা থানায় একটি মামলা করেছেন। পুলিশ ওই ঘটনায় এযাবত ৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
এদিকে এক ভিডিও বার্তায় হিজবুত তাওহীদ এর রংপুর বিভাগীয় সভাপতি আবদুল কুদ্দুস শামীম অভিযোগ করে বলেন, তিনি হিজবুত তাওহীদের বিভাগীয় সভাপতির দায়িত্ব পাওয়ায় তার বাড়িতে মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) নেতাকর্মীদের নিয়ে একটি অনুষ্ঠান করার কথা ছিল। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাদের ওপর হামলা করা হয়েছে। তাদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। এঘটনার সাথে স্থানীয় জামায়াতের নেতাকর্মীরা জড়িত বলে অভিযোগ করেন তিনি।
তবে জামায়াত নেতারা তার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তারা বলছেন, স্থানীয় সাধারণ মানুষের সঙ্গে হিযবুত তাওহীদের সদস্যদের সংঘর্ষ হয়েছে।
এ বিষয়ে পীরগাছা উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর বজলুর রশীদ বলেন, কারো ধর্মীয় আবেগকে কাজে লাগিয়ে স্বার্থ হাসিল করা জামায়াতের আদর্শের পরিপন্থী। এ ঘটনার সঙ্গে জামায়াতের লোকজনের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। বরং জামায়াতের লোকজন প্রত্যক্ষভাবে প্রশাসনকে সহযোগিতা করেছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য।
Posted ৬:২৯ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
dainikbanglarnabokantha.com | Shanto Banik
এ বিভাগের আরও খবর
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।