• শিরোনাম

    হবিগঞ্জে দিন দিন চাহিদা কমেছে স্কুলভ্যানের

    লিটন পাঠান, হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি বুধবার, ১১ জানুয়ারি ২০২৩

    হবিগঞ্জে দিন দিন চাহিদা কমেছে স্কুলভ্যানের

    apps

    হবিগঞ্জ এক সময় বেশ জনপ্রিয় ছিল স্কুলভ্যান তখন শহরে ছিল না তেমন যানজট ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকও ছিল না কিন্ডার গার্টেন স্কুলের সংখ্যাও ছিল অনেক কম। তাই চাহিদা অনেক বেশি দিন দিন কিন্ডারগার্টেনের সংখ্যা বেড়েছে এখন প্রতিটি এলাকায়ই একাধিক কিন্ডারগার্টেন স্কুল রয়েছে। এছাড়া ভ্যান চালিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পাওয়া টাকায় খরচ বহনও অসম্ভব হয়ে পড়েছে। যানজটের কারণে সময় বাঁচাতে অভিভাবকরাও সন্তানদের রিকশা বা বিকল্প যানবাহনে নিয়ে যান। তবে কেউ কেউ ভ্যানের পরিবর্তে এখন গাড়ি কিনে নিয়েছেন। ভ্যান বন্ধ থাকলেও কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কাছেই মন পড়ে থাকে এগুলোর চালকদের। তারা আবারও শিক্ষার্থীদের নিয়েই চলতে চান। নিজের সন্তান নেই, নিজের ভ্যানে নিয়ে চলা শিক্ষার্থীদেরই সন্তান মনে করেন। তাই আবারও এসব শিশুকে নিয়ে চলতে চান বলে জানান সাবেক ভ্যানচালক মো. সঞ্জব আলী বয়স প্রায় ৫৩ বছর। বাড়ি শহরতলির তেঘরিয়া ২নং পুল এলাকায় সাত ভাই বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয় সবাই পৃথক ২৩

    বছর আগে ১৯৯৯ সালে বিয়ে করেছেন স্ত্রীকে নিয়েই তার সংসার কোনো সন্তান নেই। ২০১৭ সাল পর্যন্ত টানা ১২ বছর ভ্যান চালি য়েছেন। তখন থেকেই বন্ধ জেলা সদরের সবচেয়ে পুরোনো বাডস্ কেজি অ্যান্ড হাইস্কুলের ভ্যানগুলো। সঞ্জব আলী জানান এ বিদ্যালয়ে ১০টি স্কুলভ্যান ছিল। এখন সবগুলোই বন্ধ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে যে টাকা পাওয়া যায় তাতে খরচ ওঠে না। এছাড়া শহরে যানজট বেড়েছে। ফলে স্কুলের সময় বাঁচাতে অভিভাবকরা রিকশায় সন্তানদের স্কুলে নিয়ে যান। এখন কোনো স্কুলেই আর পায়ে চালানো ভ্যান নেই। স্কুলগুলো ভ্যান বন্ধ করে দেওয়ার পর চালকদেরও চাকরি থেকে বাদ দেওয়া হয়। তিনি বলেন, কিন্তু আমরা যেন বেকার না হই তাই এ স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা পুরোনো চালকদের বাদ দেননি অন্য কাজে লাগিয়েছেন। আমরা আবারও শিক্ষার্থীদের কাছে ফিরতে চাই। তাদের নিয়েই থাকতে আমাদের ভালো লাগে তাই আমরা দাবি জানিয়েছি যেন আবারও স্কুলভ্যান চালু করা হয়।

    এর পরিপ্রেক্ষিতে দু’টি ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক (টমটম) কেনা হয়েছে। আশা করছি আবারও শিশুদের কাছে ফিরতে পারবো বাডস্ কেজি অ্যান্ড হাইস্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও অধ্যক্ষ মো. নূরউদ্দিন জাহাঙ্গীর বলেন, সবচেয়ে বড় সমস্যা যানজট। এ কারণে একেক বাসা থেকে একেজন শিক্ষার্থী গাড়িতে তুলতে গিয়ে অনেক সময় নষ্ট হয়। কোনো কোনো সময় ক্লাস শুরুর আগেও ভ্যান পৌঁছাতে পারে না এছাড়া খরচও পোষানো সম্ভব হয় না। তাই আমাদের ১০টি ভ্যানের সবগুলোই বন্ধ করে দিয়েছি। আমরা দু’টি হায়েস (মাইক্রোবাস) কিনেছি দূর-দুরান্তের শিক্ষার্থীদের এগুলো দিয়ে আনা-নেওয়া করা হয়। চালকদেরও আসলে শিশুদের কাছে মন পড়ে থাকে। তাই তাদের জন্যই মূলত দু’টি ইজিবাইক কিনেছি কয়েকদিনের মধ্যেই সেগুলো চালু করা হবে তিনি জানান।

    জেলা সদরের সবচেয়ে প্রাচীন এ স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করা হয় ১৯৯৫ সালে তিনি এবং তার বন্ধু আহমদুল কবীর বারভূইয়া পুলক এটি প্রতিষ্ঠা করেন। ২০০০ সালে এটিকে আরও বৃহৎ পরিসরে নেওয়া হয়। করা হয় হাইস্কুল এ বছরও স্কুলটি থেকে এসএসসিতে চারজন জিপিএ-৫ পেয়েছে জানা গেছে, এখন শহরের প্রতিটি এলাকায়ই একাধিক কিন্ডারগার্টেন স্কুল রয়েছে। তবে দু-একটি ছাড়া বাকি প্রায় সবগুলোই প্লে থেকে দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী পায়। তৃতীয় শ্রেণিতে ওঠার পরই তাদের নিয়ে যাওয়া হয় বিভিন্ন সরকারি হাইস্কুলে যারা প্রতিযোগিতায় টিকতে পারে না তারা শুধু এখানে থাকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত কয়েকজন শিক্ষার্থী নিয়ে তাদের চলতে হয় ফলে চাহিদা কমেছে স্কুলভ্যানের।

    বাংলাদেশ সময়: ৯:৫৯ অপরাহ্ণ | বুধবার, ১১ জানুয়ারি ২০২৩

    dainikbanglarnabokantha.com |

    এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

    আর্কাইভ