মিজানুর রহমান, শরীয়তপুর। বুধবার, ১৮ মে ২০২২
শরীয়তপুরের নড়িয়া, জাজিরাসহ ৬টি উপজেলায় গত ৩ বছরে ৩০ জনরে মৃত্যু হয়েছে। আর নিখোঁজ হয়েছে প্রায় শতাধিক যুবক। আর ভু মধ্য সাগরে ডুবছে অনেকের উন্নত জীবনের স্বপ্ন। এ সকল ব্যাপাওে মামলা হলেও আইনের ফাক ফুকড়ে বেড়িয়ে যাচ্ছে অপরাধীরা। তাই নির্বিঘ্নে অবৈধ মানব পাচার কারীরা চালিয়ে যাচ্ছে তাদের কাজ। পুলিশ বলছেন, মানব পাচাররে মামলাগুলো হওয়ার পর দালালদের সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্থরা মীমাংসা করে ফেলে। ফলে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থ নেয়া সম্ভব হয় না।
নড়িয়া, জাজিরা থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অধীক আয় ও উন্নত ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখিয়ে স্থানীয় দালালদেও মাধ্যমে শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া, জাজিরা সহ জেলার ৬ টি উপজেলার তরণ-যুবকদরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ইতালি, গ্রীসসহ ইউরোপের বিভিন দেশে যেতে রাজি করাচ্ছেন। পথে পথে দালালদের হাতবদল হয়ে কেউ কেউ গন্তব্যে পৌঁছাতে পারলওে অনেকের ভু মধ্য সাগরে সলিল সমাধি হচ্ছে। আবার দালালদের নির্যাতনে অনেকে প্রাণ হারাচ্ছেন বিভিন্ন দেশে। সন্তান ও সম্পদ হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়ছে পরবিার। প্রথমে তাদের কে সাগর পথে লিবিয়া হয়ে ইতালী যাওয়ার জন্য ৬ থেকে ৭ লাখ টাকা চুক্তি করে। তার পর সেখানে নিয়ে লিবিয়ার মাফিয়া চক্রের সদস্যরা তাদেরকে লিবিয়ার গেইম ঘওে আটকিয়ে মার ধর করে। এরপর পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বলে ১০/১২ লাখ টাকা আদায় করে থাকে। এর পর সেখানে দীর্ঘদিন খাবার ও পানি না পেয়ে দুকে দুকে অনেকে মারা যায়। আবার অনেকে প্লাষ্টিকের নৌকা ডুনে ভুমধ্য সাগওে মারা যায়। মাসের পর মাস অপেক্ষা কওে অনেকের লাশ দেশে আসলে ও আবার অনেকে লাশ ও ফেরত আনতে পাওে না তাদেও পরিবার।
শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার জপসা ইউনিয়নের ঢালী কান্দি এলাকার হবি ঢালীর ছেলে বাসিরুল ঢালী(২২) দালালের মাধ্যমে ইতালী যাওয়া উদ্দ্যেশে চলতি বছরের গত ১৭ মার্চ রওনা দেন। লিবিয়ায় যাওয়ার পর দীর্ঘদিন দালারদের ঘরে আটকা থাকার পর খাবার পানি না পেয়ে তিনি মারা যান।
নড়িয়া পৌর এলাকার মুলপাড়া গ্রামের কামরুল হাসান (বাপ্পী)। গত নভম্বেরে ইতালি যাওয়ার উদ্দেেশ দেশ ছাড়নে ২২ বছররে এই তরুণ। ওই মাসইে সংযুক্ত আরব আমরিাত তথা দুবাই হয়ে লিবয়িায় পৌঁছান তিনি। কিন্তু কাংক্ষতি গন্তব্যে পৌঁছানো হয়নি তাঁর। লিবিয়া থেকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালরি লাম্পদুসা দ্বীপে যাওয়ার পথে গত ২৫ জানুয়ারি ঠান্ডায় জমে গিয়ে মারা যান তিনি।
ভেদরগঞ্জ পৌরসভার পুটি জুড়ি এলাকার ইউনুছ হাওলাদারের ছেলে পারভেজ হাওলাদার (২৫)। গত ফেব্রুয়ারীর প্রথম দিকে দেশ থেকে রওয়ানা দেয়। এর পর ২২ ফেব্রুয়ারী ইতালী যাওয়ার উদ্দেশ্যে সাগওে নৌকা ডুবে সে মারা যায়। তার পর ২২ এপ্রিল তার লাশ দেশে আসে। এ রকম গত তিন বছরে অবধৈভাবে সমুদ্র পথে ৩০ জনের সলিল সমাধি হয়েছে। এর মধ্যে নড়িয়া ও জাজিরায় এর সংখ্যা সবচেয়ে বেশী। এর পর থানায় ও কোটে মামলা হলেও নানা কারনে ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে অপরাধীরা। তার ফলে থেমে নেই অবৈধ মানব পাচার।
পুলিশ ও পারবিারকি সূত্র জানায়, ২০১৯ সালে নড়িয়ার ১২ তরুণ নৌকাডুবেিত মারা যান। এ ছাড়া ২০২১ সালে নৌকাডুবিতে শরীয়তপুর জেলা শহরের দুজন, গরমে অসুস্থ হয়ে নড়িয়ার দুজন, ২০২২ সালের জানুয়ারীতে ঠান্ডায় নড়িয়ার আরেক তরুণ মারা যান।
ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি যাওয়ার পথে মৃত্যুর প্রধান কারণ প্লাষ্টিকের নৌকাডুবি, প্রচন্ড গরম ও ঠান্ডা, খাবার ও পানি না দেওয়া।
পরবিারগুলো নিঃস্ব
আবুল বাশার ও লাভিল বাশাররে একমাত্র ছলে কামরুল হাসান। তাঁকে ইতালি পাঠাতে স্থানীয় এক দালালরে সঙ্গে আট লাখ টাকায় চুক্তি হয় এ পরবিাররে। তখন একমাত্র ছলে ও র্অথ হারিয়ে অসহায় কামরুল হাসানরে বাবা আবুল বাশার কাজী। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ছেলে পড়ালখো বন্ধ করে দিয়েছিল। অভাব-অনটনরে সংসারে সচ্ছলতা ফেরাতে বিপদ জেনেও ছেলেেেক সমুদ্রপথে ইতালি পাঠাই। কি›তু ছেলে আমার লাশ হয়ে ফিওে আসলো। আমার সন্তান ও সম্পদ হারিয়ে আজ আমি নিঃস্ব। এ রকম গত ২৫ মার্চ ভূমধ্যসাগরে ঠান্ডায় মারা যাওয়া বাছিরুল ঢালী, ১৩ জানুয়ারী আতাউর রহমান আরো অনেকেই।
২০১৯ সালে ১৫ মে নড়িয়ার ১২ তরুণ ভূম-ধ্যসাগররে তিউনসিয়িা উপকূলে নৌকাডুবেিত মারা যান। তাঁদরে একজন পারভজে মৃধা। তাঁর মা পারভনি আক্তার বলনে, স্থানীয় দালালরে মাধ্যমে ৯ বন্ধুর সঙ্গে পারভজে সমুদ্রপথে ইতালি রওনা হন। সমুদ্রে নৌকা ডুবে সবার সঙ্গে তাঁর ছেলেও মারা যান। ছেলেরে লাশটাও খুঁজে পাওয়া যায়নি। তিনি বলনে, ‘জমি বিক্রি করে ছেলেকে পাঠাতে সাড়ে সাত লাখ টাকা দালালরে হাতে তুলে দেই। ছেলে ও সম্পদ হারিয়েছি। শোকে আমার স্বামীও মারা গছেনে।’
মামলার হালহককিত :
পুলিশ জানায়, ইতালি যাওয়ার পথে মৃত্যু ও নিখোঁজরে ঘটনায় গত তিন বছরে মামলা হয়েেছ ৪৭টি মাত্র। এর মধ্যে ২৫টির অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে। ১২টিতে চূড়ান্ত প্রতবিদেন দিয়েছে পুলশি। ১০টি মামলার তদন্তকাজ চলছে। অভিযোগপত্র দেয়া ২৫টি মামলার মধ্যে ৯টি নিষ্পত্তি হয়েছে। এসব মামলার আসামিরা খালাস পেয়েছেনে। আর বাকি ১৬টি মামলার বিচারকাজ চলছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, মৃত ও নিখোঁজ ব্যক্তদিরে অনকে স্বজন অভযিুক্ত ব্যক্তদিরে সঙ্গে মীমাংসা করে ফেলেছেন। যার ফলে অপরাধীরা আইনের ফাক ফোকড়ে বেড়িয়ে এসে দ্বিগুন উৎসাহে চালিয়ে যাচ্ছে তাদেও অবৈধ মানব পাচার।
শরীয়তপুররে পুলিশ সুপার এস এম আশ্রাফুজ্জামান বলনে, মানব পাচাররে মামলাগুলো হওয়ার পর দালালচক্র ক্ষতগ্রিস্থদরে সঙ্গে মীমাংসা করে ফেলছে। এতে সাক্ষী-প্রমাণরে অভাবে মামলাগুলো বেশি দূর এগিয়ে নেয়া যায় না।
বাংলাদেশ সময়: ২:০৯ অপরাহ্ণ | বুধবার, ১৮ মে ২০২২
dainikbanglarnabokantha.com | Romazzal Hossain Robel