• শিরোনাম

    কাজী মো. মাজহারুল ইসলাম বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক

    অনলাইন ডেস্ক মঙ্গলবার, ১৭ নভেম্বর ২০২০

    কাজী মো. মাজহারুল ইসলাম বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক

    apps

    শান্ত বণিক, বিশেষ প্রতিনিধি: আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগের ২০১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। কমিটি অনুমোদন দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। শনিবার (১৪ নভেম্বর) আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডি রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকা গ্রহণ করেছে সংগঠনটির নেতারা। দলটির সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

    অনুমোদন পাওয়া কমিটিতে নরসিংদীর ৮জন কৃতি সন্তান স্থান করে নেন এরা হলেন, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মো. মাজহারুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সোহেল পারভেজ, সহ-সম্পাদক তোফায়েল আহমেদ, সহ-সম্পাদক বেলাল হোসেন ফিরোজ, নির্বাহী সদস্য ব্যারিস্টার তৌফিকুর রহমান, নির্বাহী সদস্য মন্জুরুল মজিদ মাহমুদ সাদি, নির্বাহী সদস্য নাদিম উদ্দিন, নির্বাহী সদস্য বেলাল অনিক।

     

    এ কমিটিতে জায়গা পেয়েছেন কয়েকজন সংসদ সদস্য, সাবেক ছাত্রলীগ ও বিভিন্ন জেলা থেকে ওঠে এসেছে নতুন মুখ, সিসি কমিটির সদস্য ও সাবেক কমিটির বেশ কয়েকজন। নতুন কমিটিতে বাদ পড়েছেন যুবলীগের গত কমিটির বিতর্কিত নেতারা। পাশাপাশি বয়স ৫৫ বছরের বেশি হওয়ায় বাদ পড়েছেন ৭০ জনের বেশি।

     

    এর আগে ২০১৯ সালের ২৩ নভেম্বর যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়। যুবলীগের সপ্তম কংগ্রেসে সংগঠনটির সভাপতি পদে আসেন শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক পদে আসেন মাঈনুল হোসেন খান নিখিল। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ঘোষণার এক বছর পর পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

     

    জানা গেছে, এবারের কমিটিতে প্রায় ১ হাজার ৬শত সিভি বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে ত্যাগী নেতা ও ক্লিন ইমেজের ব্যক্তিদের স্থান দেয়া হয়েছে।

     

    উল্লেখ্য, ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাকাণ্ডে একইসঙ্গে বাবা-মাকে হারান যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাগ্নে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলুল হক মণি এবং বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নি আরজু মণির জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ পরশ। ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডে বঙ্গবন্ধুসহ নিজের বাবা-মা এবং পরিবারের অনেককে হারালেও প্রাণে বেঁচে যান দুই ভাই শেখ পরশ ও শেখ তাপস।

     

    মাইনুল হোসেন খান নিখিলের জন্ম মতলব উত্তর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের হরিণা গ্রামে। তার বাবা মরহুম মোফাজ্জল খান দুর্গাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। চাচা মরহুম মনির হোসেন খান ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ছিলেন। চাঁদপুরের সন্তান হলেও তিনি ঢাকার রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয়। তৃণমূল থেকে উঠে আসা এই রাজনীতিক বৃহত্তর লালবাগ থানা ছাত্রলীগের সদস্য হিসেবে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতিতে অভিষিক্ত হন।

     

    কাজী মো. মাজহারুল ইসলাম বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক উপ-শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও পাঠাগার সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি এবং চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কাজী মাজহারুল ইসলাম গত দশ বছর ধরে বিভিন্ন সামাজিক, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক কর্মসূচী পালনের মাধ্যমে মনোহরদী-বেলাববাসীর জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।

    কাজী মাজহার বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী, দেশরত্ন শেখ হাসিনার কারণে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। বাংলাদেশ আজ আর তলাবিহীন ঝুড়ি নয়। বাংলাদেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশ। মানুষের আয় ও জীবন যাত্রার মান বেড়েছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়কে। আর এ উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে এবং শেখ হাসিনার হাতকে আরো শক্তিশালী করতে হবে। পদ্মা সেতু, রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর, ঢাকা মেট্রো রেলসহ দেশের মেগা পরিকল্পনা সমূহের কাজে দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়েছে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ মহাকাশে উৎক্ষেপন করা হয়েছে। দেশরত্ন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শক্ত ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বর্তমান সরকার ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালে মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।

    তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রশিবিরের তান্ডবের কারণে সেখানে ছাত্রলীগ সহজে কোন কর্মসূচী পালন করতে পারতোনা। দীর্ঘ ২৬ বছর পর ১৯৯৭ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জামাত-শিবিরের ঘাটিতে আঘাত হানা হয়। সেই জামাত-শিবির বিরোধী আন্দোলনে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে গিয়ে বারবার হামলা-মামলার শিকার হন এবং বেশ কয়েকবার দলীয় কর্মসূচী পালন করতে গিয়ে শিবিরের আক্রমণে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে।

    তিনি কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশে চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের বিভিন্ন কর্মসূচীতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাহসের সাথে নেতৃত্ব দেওয়ায় নজরে পড়েন তৎকালীন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের। শুরু হয় তাঁর নেতৃত্ব দেওয়ার পালা। ২০০১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরবর্তীকালে বিএনপি, জামাত-শিবিরের অত্যাচারে যখন কোন দলীয় অনুষ্ঠান করা যাচ্ছিল না, তখন তিনি দলের হাল ধরে ছাত্রলীগকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে দাড় করান। তিনি ২০০২-২০০৪ সালের কমিটিতে চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে জামাত-শিবিরের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগকে তিনি একটা শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে আসেন। যার ফলশ্রুতিতে ২০০৪-২০০৬ সালে কমিটি গঠনকালে ছাত্রলীগের সম্মেলনে সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০০৬ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়ে তৃতীয় সর্বোচ্চ ভোট পান। ২০০৬-২০১২ পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে উপ-শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও পাঠাগার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বিএনপি সরকারের সময় ২০০৬ সালে সেপ্টেম্বর মাসে তৎকালীন নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ঘেরাওকালে তিনি পুলিশ ও দলীয় সন্ত্রাসীদের আক্রমণে আহত হয়ে প্রথমে সেন্টাল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে পরবর্তীতে বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা নেন। এ সময় তাঁর মাথার ডান পাশে প্রায় ২৫টি সেলাই লাগে। জামাত-শিবিরের বিরুদ্ধে লড়াই, সংগ্রাম, আন্দোলন আর ছাত্রলীগের কর্মসূচী পালন করতে গিয়ে এই দুঃসাহসী ছাত্রনেতা বহুবার হামলা ও নির্যাতনের শিকার হন এবং তাঁর বিরুদ্ধে প্রায় ৪১টি মামলা দেয়া হয়। তিনি ১/১১ সময় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রেফতারের পর ঢাকার রাজপথে দলের পক্ষে নেত্রীকে মুক্ত করার সব ধরনের কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করেন।

    একটি আদর্শ শিক্ষক পরিবারের পিতা-মাতার লক্ষ্য থাকে তার সন্তান বড় হয়ে ডাক্তার/প্রকৌশলী বা বড় কোন সরকারি চাকুরীজীবি হবে। কিন্তু কাজী মাজহারুল ইসলাম ছোট বেলা থেকেই স্বপ্ন দেখেন নিজেকে জনসেবায় আত্মনিয়োগ করবেন। আর এ জন্যই দেশ ও সমাজের জন্য কিছু করার লক্ষ্যে তাঁর রাজনীতির অঙ্গনে পদচারণা করেন ছাত্র জীবন থেকেই। গত দশ বছরে কাজী মাজহারুল ইসলাম মনোহরদী ও বেলাব উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামে প্রায় ২৫০০টি দলীয় অনুষ্ঠান, বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন। গরীব দুঃখীদের মাঝে প্রায় ৩৫০০ কম্বল বিতরণ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের “অসমাপ্ত আত্মজীবনী” ও “কারাগারের রোজ নামচা” বই প্রায় দশ হাজার মানুষের মধ্যে উপহার স্বরূপ প্রদান করেছেন। দরিদ্র শিক্ষার্থীদের অনুদান, চিকিৎসা সহযোগিতা, মনোরহরদী-বেলাব উপজেলার সবগুলো সংসদ নির্বাচন, উপজেলা নির্বাচন, পৌরসভা নির্বাচন ও ২০টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নিজে মাঠে নেমে সব সময় দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করে বিজয়ী করতে ভূমিকা রেখেছেন। মনোহরদী-বেলাব উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ড তুলে ধরে প্রায় আড়াই লক্ষ পোস্টার, দশ হাজার বিলবোর্ড, পাঁচ লক্ষ লিফলেট, স্টিকার, সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছেন।

    কাজী মাজহার বলেন, তাঁর পূর্ব পুরুষগণ প্রাচীন আমল থেকে রাজা-বাদশাদের প্রতিনিধি হিসেবে কাজীর (বিচারকের) দায়িত্ব পালন করতেন। বংশগত ধারাবাহিকতায় স্বাধীনতার পূর্ব সময়ে আউয়াল কাজী বৃহত্তর চন্দনবাড়ী (চালাকচরসহ) ইউনিয়নের ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। পরবর্তীতে তাঁর জ্যাঠা মরহুম কাজী হাফিজ উদ্দিন একজন সামাজিক বিচারক ছিলেন। তাঁর পিতা কাজী মো. কফিল উদ্দিন মনোহরদী মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। তিনি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির মনোহরদী উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব সুনামের সহিত পালন করেন।

    মনোহরদী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ও চন্দনবাড়ী এস এ পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন কালে বহু গরীব ছাত্র-ছাত্রীদের নানা ভাবে উপকার করেন। কাজী মাজহারুল ইসলামের মাতা মিসেস রহিমা আক্তার চন্দনবাড়ী এস.এ পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষিকা ছিলেন। কর্মজীবনে তিনি সুনামের সহিত শিক্ষকতা করেন। শিক্ষক পরিবারের সন্তান হিসেবে বাল্যকালে থেকেই মেধাবী হিসেবে কাজী মাজহারুল ইসলাম গড়ে উঠেন। তিনি প্রাথমিক, জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষায় বৃত্তি লাভ করেন। মনোহরদী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে প্রথম বিভাগে এস.এস.সি পাস করে ভর্তি হন ঢাকার নটরডেম কলেজে। সেখান থেকে প্রথম বিভাগে এইচ.এস.সি পাস করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে ভর্তি হন এবং অত্র বিশ্ববিদ্যালয় হতে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন।

    বাংলাদেশ সময়: ৪:৪৪ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৭ নভেম্বর ২০২০

    dainikbanglarnabokantha.com |

    এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

    আজ বিজয়া দশমী

    ২৬ অক্টোবর ২০২০

    আর্কাইভ