শরীয়তপুর প্রতিনিধি ঃ মঙ্গলবার, ১০ মে ২০২২
শরীয়তপুরের জাজিরায় স্ত্রীর সিজারের টাকা পরিশোধ না করায় শাশুরিকে পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগ ঊঠেছে জামাতার বিরুদ্ধে। এ সময় স্ত্রীকে মারধর করে ঘরের মধ্যে আটকিয়ে রাখার অভিযোগও স্বামী ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে আজ মঙ্গলবার দুপুরে শরীয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলার পূর্ব নাওডোবা ইউনয়নের চৌকিদার কান্দি এলাকায়। পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করেছে।
নিহত হলেন, জাজিরা উপজেলার সেনের চর ইউনিয়নের বয়াতী কান্দি গ্রামের বাচ্চু দেওয়ানের স্ত্রী জবেদা বেগম (৪০)। এ ঘটনায় এখনো কোন মামলা হয়নি।
নিহতের চাচাতো ভাই হুমায়ন কবির, জাজিরা থানা ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, গত ৪ বছর পূর্বেশরীয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলার পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের চৌকিদার কান্দি গ্রামের আব্দুস সালাম খালাসী ছেলে পারভেজ খালাসীর সাথে একই উপজেলার সেনের চর ইউনিয়নের বয়াতী কান্দি গ্রামের বাচ্চু দেওয়ানের মেয়ে লিমা আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে পারভেজ খালাসী যৌতুককের দাবী করে আসছে। একাধিকবার তাকে লিমার পরিবার ৫ লাখ টাকা যৌতুক প্রদান করে। গত এপ্রিল মাসে তার স্ত্রী লীমা বেগমের ঢাকার মগবাজার এলাকায় আদ্বদীন হাসপাতালে সিজারের মাধ্যমে পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। তার স্ত্রীর সিজারের খরচ বাবদ প্রায় দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবী করে। এরপর তারা শরীয়তপুরের জাজিরায় পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের চৌকিদার কান্দি গ্রামে চলে আসেন। আজ মঙ্গলবার সকালে লিমার মা জবেদা বেগম জামাতা পারভেজ খালাসীর বাড়ীতে মেয়ে ও নানীতে দেখতে যান। শাশুরি জবেদা বেগমকে দেখে সিজারের দুই লাখ টাকা দাবী করে। সিজারের দাবীকৃত টাকা না নিয়ে আশায় ক্ষিপ্ত হয়ে বাশ দিয়ে শাশুরির মাথায় আঘাত করে। এর পর শাশুরি জবেদা বেগম মাটিতে লুটিয়ে পরে। তখন জামাতা পারভেজ খালাসীর তার মা মনজিলা বেগম, ও বাবা ছালাম খালাসী মিলে জবেদা বেগমকে উপুর্যপরি পিটাতে থাকে। এতে করে সে ঘটনা স্থলেই মারা যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে জাজিরা উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষনা করেন। এ সময় স্থানীয় লোকজন ঘাতক পারভেজ খালাসীর মা মনজিলা বেগমকে আটক করে জাজিরা থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে।
নিহতের ভাগ্নি ফারহানা বেগম বলেন, আমার খালাতো বোন লিমার বিয়ের পর থেকে বোন জামাই পাভেজসহ ওর শশুর বাড়ীর লোকজন যৌতুকের টাকার জন্য বিভিন্ন ভাবে চাপ প্রয়োগ করতো। প্রায় সময় টাকাও দিতো। অনেক সময় দাবীকৃত টাকা না দিলে লিমাকে মারধর করতো। আজ সকালে সিজারের টাকা নিয়ে না যাওয়া আমার খালা জবেদা বেগমকে পিটিয়ে হত্যা করেছে।
নিহতের মেয়ে লিমা বেগম বলেন, গত ১ মাস পূর্বে আমার ঢাকার আদ্বদীন হাসপাতালে সিজারের মাধ্যমে ছেলে হয়। সে চিকিৎসার খরচের জন্য আমার স্বামী ও শশুর বাড়ীর লোকজন ২ লাখ টাকা দাবী করে আমার বাবা ও মা কাছে। সে টাকার জন্য আমাকে আজ সকালে ঘরে আটকিয়ে রেখে মারধর করে। খবর পেয়ে আমার মা আসলে তাকে আমার স্বামী ও শশুর বাড়ীর লোকজন পিটিয়ে হত্যা করেছে।্ আমি এর বিচার চাই।
জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি ) মিন্টু মন্ডল বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করেছি। লাশের শরীরে একাধিক জখমের চিহ্ন রয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।
বাংলাদেশ সময়: ৯:৫৪ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১০ মে ২০২২
dainikbanglarnabokantha.com | Romazzal Hossain Robel