• শিরোনাম

    কেসিসিতে ভোটযুদ্ধ ভাগ্য নির্ধারণ হবে ১৮০ প্রার্থীর

    মোঃ রেজওয়ান, খুলনা প্রতিনিধি: রবিবার, ১১ জুন ২০২৩

    কেসিসিতে ভোটযুদ্ধ ভাগ্য নির্ধারণ হবে ১৮০ প্রার্থীর

    apps

    খুলনা সিটি করপোরেশনে (কেসিসি) ভোট যুদ্ধ সোমবার। সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এরই মধ্য দিয়ে ফলাফল নির্ধারণ হবে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের। ৫ মেয়র প্রার্থীসহ ১৮০ জন এ ভোট যুদ্ধে অংশ নিচ্ছেন।
    এদিকে, নির্বাচন অবাধ, স্ষ্ঠুু ও শান্তিপূর্ণভাবে করতে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
    কেসিসির রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন বলেন, কেসিসি নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও ভয়হীন করতে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
    তিনি জানান, রোববার বেলা ১১টায় কেন্দ্রে কেন্দ্রে ইভিএমসহ নির্বাচনি সরঞ্জাম পাঠানো হয়েছে। নির্বাচনে পুলিশ, র‌্যাব আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় সাড়ে ৮ হাজার সদস্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। সব মিলিয়ে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
    এবার কেসিসি নির্বাচনে ৫জন মেয়র প্রার্থী, ৩১টি সাধারণ ওয়ার্ডে ১৩৬জন কাউন্সিলর প্রার্থী ও সংরক্ষিত ১০টি ওয়ার্ডে ৩৯জন নারী কাউন্সিলর প্রার্থীসহ মোট ১৮০জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে, কাউন্সিলর পদে সাধারণ ওয়ার্ডের দুজন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
    কেসিসির মেয়র প্রার্থীরা হলেন, আওয়ামী লীগের তালুকদার আব্দুল খালেক (নৌকা), জাতীয় পার্টির (জাপা) শফিকুল ইসলাম মধু (লাঙ্গল), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাওলানা আব্দুল আউয়াল (হাতপাখা), জাকের পার্টির এস এম সাব্বির হোসেন (গোলাপ ফুল) ও স্বতন্ত্রপ্রার্থী এসএম শফিকুর রহমান (দেয়াল ঘড়ি) প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন।
    এবারের নির্বাচনে কেসিসির মোট ভোটার সংখ্যা ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫২৯জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ২ লাখ ৬৮ হাজার ৮৩৩জন ও নারী ভোটারের সংখ্যা ২ লাখ ৬৬ হাজার ৬৯৬জন। ভোটাররা ২৮৯টি ভোটকেন্দ্রের ১ হাজার ৭৩২টি কক্ষে ইভিএমে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণের জন্য ২৮৯জন প্রিজাইডিং অফিসার, ১ হাজার ৭৩২ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও ৩ হাজার ৪৬৪ জন পোলিং অফিসারসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট প্রায় ৬ হাজার কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
    কেসিসি নির্বাচনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে খুলনা মহানগরীতে ১১ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। গত শনিবার সকাল থেকে বিজিবি সদস্যরা ভোটকেন্দ্রসহ নগরীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে টহল দিচ্ছে। পাশাপাশি ৪ হাজার ৮০০ পুলিশ সদস্য, ৩ হাজার ৮৪৮জন আনসার সদস্য ও র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় সাড়ে ৮ হাজার সদস্যের সমন্বয়ে নিরাপত্তার চাদরে মুড়িয়ে ফেলা হয়েছে পুরো খুলনা মহানগরীকে।
    ১৬১টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ :
    কেসিসির ২৮৯টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ১২৮টি কেন্দ্রকে সাধারণ ও ১৬১ কেন্দ্রকে গুরুত্বপূর্ণ (ঝুঁকিপূর্ণ) হিসেবে চিহ্নিত করেছে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি)। সাধারণ কেন্দ্রের তুলনায় ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করছেন প্রায় সাড়ে ৮ হাজার পুলিশ ও আনসার সদস্য।
    ভোটের মাঠে ৩১ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট
    কেসিসির নির্বাচনি এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি বিভিন্ন অপরাধ প্রতিরোধ এবং নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন প্রতিরোধে দায়িত্ব পালন করছেন ৩১ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এছাড়া ১০জন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। প্রতি তিনটি ওয়ার্ড মিলে একজন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করছেন।
    আজ সাধারণ ছুটি :
    কেসিসি নির্বাচন উপলক্ষ্যে আজ সোমবার খুলনা মহানগরী এলাকায় ছুটি ঘোষণা করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, নির্বাচন কমিশনের চাহিদা মোতাবেক ভোট গ্রহণের দিন অর্থাৎ ১২ জুন (সোমবার) সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হলো।
    বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কাউন্সিলর নির্বাচিত আওয়ামী লীগের দুই নেতা :
    কেসিসি নির্বাচনে দুটি ওয়ার্ডে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দুইজন আওয়ামী লীগ নেতা কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। তারা হলেন, নগরীর ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে এস এম খুরশিদ আহম্মেদ টোনা ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে জেড এ মাহমুদ ডন।
    গত ১৬ মে ১৩নম্বর ওয়ার্ডে একজনমাত্র প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। এছাড়া ঋণখেলাপীর কারণে ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী মো. শমসের আলী মিন্টুর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। আপিলেও তার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে।
    ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর টোনা ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত কাউন্সিলর ডন মহানগর আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক।
    বৈধ অস্ত্র বহন, প্রদর্শন ও চলাফেরায় নিষেধাজ্ঞা :
    নির্বাচনকে প্রভাবমুক্ত, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে কেসিসি এলাকার মধ্যে ১০ জুন থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত বৈধ অস্ত্র বহন, প্রদর্শন ও চলাফেরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এছাড়া মোটরসাইকেল ও যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এই আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। শনিবার খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি) কমিশনার মাসুদুর রহমান ভূঞা স্বাক্ষরিত পৃথক তিনটি গণবিজ্ঞপ্তিতে এ সব তথ্য জানানো হয়েছে।

    বাংলাদেশ সময়: ১১:০১ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১১ জুন ২০২৩

    dainikbanglarnabokantha.com |

    এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

    আর্কাইভ