• শিরোনাম

    রাবি শিক্ষক ড. তাহেরের খুনি মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীরের ফাঁসি কার্যকর

    নিজস্ব প্রতিবেদক: শুক্রবার, ২৮ জুলাই ২০২৩

    রাবি শিক্ষক ড. তাহেরের খুনি মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীরের ফাঁসি কার্যকর

    apps

    রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এস তাহের আহমেদ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত দুই আসামি ড. মিয়া মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীর আলমের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।
    বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) রাত ১০.০১টায় পর্যায়ক্রমে ফাঁসি কার্যকর করা হয়। এ লক্ষে রাজশাহী কারাগারের আশেপাশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। রাতের যে কোন সময়ে দুই জনের লাশ তাদের পরিবারের নিকট হস্তান্তর করবে পুলিশ। দীর্ঘ ১৭ বছর পরে এই মামলার সুরহা হলো। এতদিন ধরে আসামী পক্ষ বিভিন্ন আদালতে এই মামলায় রায় পরিবর্তন বা দন্ড মওকুফের আবেদন করে যাচ্ছিলেন। সকল আদালতে আসামীদের পিটিশন খারিজ হয়ে মামলায় ফাঁসির দন্ড বহাল থাকে।

    এই মামলায় সরাসরি আইনজীবি হয়ে কাজ করেছেন অধ্যাপক ড. এস তাহের আহমেদ এর মেয়ে আইনজীবি সেগুফতা তাবাসুম আহমেদ। বাবার হত্যাকান্ডের বিচারের জন্য আইনজীবি হয়ে হত্যাকান্ডের সুবিচার নিশ্চিত করে তিনি ইতিহাস সৃষ্টি করলেন। এই মামলাটির সুরহার জন্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থী ও নিহতের পরিবার রাষ্ট্রপক্ষকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। এর আগে গত ২৫ জুলাই মঙ্গলবার দণ্ডপ্রাপ্তদের পরিবারের সদস্যরা আসামীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন।

    গত ৩ মে রাবি’র ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস তাহের হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও নিহত ড. তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীর আলমের রিভিউ আবেদন খারিজের রায় প্রকাশ করেন আপিল বিভাগ। এর ফলে এই দুই আসামির ফাঁসি কার্যকরে আইনগত কোনো বাধা ছিলোনা। প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন ৮ বিচারপতির বেঞ্চ ২১ পৃষ্ঠার এ রায় প্রকাশ করেন। গত ২ মার্চ ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামীর রিভিউ আবেদন খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন ৮ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

    আদালতে রিভিউ আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এন গোস্বামী ও এডভোকেট এস এম শাহজাহান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ। আদালতে ড. তাহেরের স্ত্রী সুলতানা আহমেদ, মেয়ে এডভোকেট সেগুফতা আহমেদ, তাদের পরিবারের আইনজীবী এডভোকেট নাহিদ সুলতানা যুথি ও শাকিলা রওশন উপস্থিত ছিলেন।

    এর আগে গত বছরের ৫ এপ্রিল আসামীদের ফাঁসি বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে ড. তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীর আলমের মৃত্যুদণ্ড এবং অন্য দুই আসামির যাবজ্জীবন দণ্ডও বহাল রাখেন আদালত। যাবজ্জীবন সাজা বহাল থাকা দুজন হলেন নাজমুল আলম ও আব্দুস সালাম। পরে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে রিভিউ আবেদন করেন আসামিরা।

    অধ্যাপক ড. তাহের হত্যা মামলায় ২০০৮ সালের ২২ মে রাজশাহীর দ্রুতবিচার আদালত চারজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং দুইজনকে বেকসুর খালাস দেন। আসামিরা এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন। ২০১৩ সালের ২১ এপ্রিল হাইকোর্ট দুই আসামির ফাঁসির দণ্ড বহাল রাখেন এবং অন্য দুই আসামির দণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন। এ রায়ের বিরুদ্ধেও আসামিরা আপিল করেন। আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বহাল রাখলেন।

    উল্লেখ্য ২০০৬ সালের পহেলা ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এলাকার ম্যানহোল থেকে উদ্ধার করা হয় নৃশংসভাবে হত্যার শিকার অধ্যাপক ড. তাহেরের মরদেহ। এর দুইদিন পর ঐ বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি নিহতের ছেলে সানজিদ আলভি আহমেদ রাজশাহী মহানগরীর মতিহার থানায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঐ মামলার প্রেক্ষিতে আসামীদের আটক করা হয় এবং দীর্ঘ সময় ধরে তদন্ত করে পুলিশ চার্জসিট দেন।

    বাংলাদেশ সময়: ৯:৫৩ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ২৮ জুলাই ২০২৩

    dainikbanglarnabokantha.com |

    এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

    আর্কাইভ