প্রদীপ কুমার দেবনাথ, বেলাব (নরসিংদী) মঙ্গলবার, ০৪ এপ্রিল ২০২৩
নিত্যপন্যের পাগলা ঘোড়া ছুটছে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে। প্রচন্ড রুদ্ধশ্বাসে লাগামহীন ছুটে চলা দ্রব্যমূল্যের সাথে পাল্লা দিতে না পেরে পিছনে কাতরাচ্ছে দরিদ্র, মধ্যবিত্ত অসহায় মানুষগুলো। হিসেবি আয়ে বেহিসাবি ব্যয় কঠিন সমস্যায় ফেলে দিয়েছে মানুষকে। প্রতিমাসেই ধার দেনা করে চলতে হচ্ছে তাদেরকে। সবচেয়ে ভয়াবহ সময় কাটাচ্ছে রোজাদার মানুষগুলো। একেতো দ্রব্যমূল্যের চোখ রাঙানি তার উপর বিদ্যুতের ভেলকিবাজি যেন অসহনীয় করে দিচ্ছে মানুষকে। কোথাও কোন নিয়ম নেই। অনিয়মের মহাসমুদ্রে খাবি খাচ্ছে মানুষ। পবিত্র রমজানে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য আর বিদ্যুতের আসা যাওয়া প্রতিনিয়ত মানুষের ধৈর্য্যর চরম পরীক্ষা নিচ্ছে। এ যেন এক অরাজক পরিস্থিতি, অস্থির অবস্থা।
কোথাও স্বস্তি নেই, নেই প্রতিকার পাওয়ার সুযোগ। বাঁচতে হলে অভাবের মধ্যেই বাঁচতে হবে। বেতন বা উপার্জন যাই থাক পরিবারের চাহিদা ধারদেনা করে হলেও মেটাতে হবে। দাম বৃদ্ধির মহড়ায় সাধারণ মানুষের চিলেচ্যাপ্টা অবস্থা। এমন কোন পন্য দ্রব্য নেই যে দাম বাড়েনি। সাধারণ মানুষ জানান, রমজান শুরুর আগেই দাম বাড়িয়ে মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে নিয়ে গেছে সিন্ডিকেট। মাংস তো আগেই বাড়িয়েছে। সরকার কমানোর কথা বললেও বাড়ছে বৈ কমছে না। আর মাছের কোন লিমিটেশন নেই। ইলিশের আগুন দাম, দেশি প্রজাতির শিং, কই, মাগুর এসবের দামের কোন সীমা নেই। এদের সাথে পাল্লা দিয়ে রুই, কাতলা, পুটি, টেংরা এসবের দাম ৫০ থেকে ১০০ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে ব্যবসায়ীরা। অপরদিকে বিদ্যুতের বাজে সার্ভিস চরম ভোগাচ্ছে সাধারণ মানুষদের।
সারাদিনে কমপক্ষে ১০ থেকে ১২ বার আসাযাওয়া তো আছেই। দিনে ৭/৮ ঘন্টা লোডশেডিং রাতেও চলে বিদ্যুতের চরম ভেলকিবাজি। এই আসে এই যায়। বিদ্যুতের চরম অমাবিকতার চরম শিকারে পরিণত হচ্ছে রোজাদার মানুষগুলো। সেহরি, ইফতারে তো বিদ্যুতের খবর থাকেনা এরপর একটু আরামে ঘুমাবে তারও সুযোগ থাকেনা। তার উপর ছোট ছোট কলকারখানায় উৎপাদন বন্ধ হয়ে মানুষের আয়ের পথও বন্ধ হচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে ফ্রিজে রাখা নানা সামগ্রী। পাটুলীর আমিনুল হক বলেন, সবদিকে এভাবে কষ্ট দিলে মানুষের যাওয়ার জায়গা কই? বাজারে গেলে দামের দাপটে কিনতে পারছিনা প্রয়োজনীয় জিনিস আবার বিদ্যুতের খারাপ সার্ভিসে কিছুই করতে পারছিনা ঠিকমতো। ছলমার সুমন বলেন, সীমিত আয় দিয়ে এত চাহিদা পূরণ করতে পারছিনা। বিদ্যুতের চরম লোডশেডিং আমার খামারের জন্য চরম বিপর্যয় ডেকে আনছে।
এসব বিষয়ে কথা হলে ইউএনও আয়েশা জান্নাত তাহেরা বলেন, আমি দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি। সরকার নির্ধারিত মূল্যের বাইরে কেউ জিনিসপত্র বিক্রি করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাছাড়া বিদ্যুতের বিষয়ে অভিযোগটির বিষয়ে তাদের সাথে কথা বলে কি ব্যবস্থা নেওয়া যায় দেখবো।
বাংলাদেশ সময়: ৫:৩২ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৪ এপ্রিল ২০২৩
dainikbanglarnabokantha.com | Romazzal Hossain Robel