• শিরোনাম

    কালীগঞ্জ থানা পুলিশের সহায়তায় মানসিক ভারসাম্যহীন নিখোঁজ যুবকে খুঁজে পেল পরিবার

    কালীগঞ্জ গাজীপুর প্রতিনিধিঃ শুক্রবার, ০৫ মে ২০২৩

    কালীগঞ্জ থানা পুলিশের সহায়তায় মানসিক ভারসাম্যহীন নিখোঁজ যুবকে খুঁজে পেল পরিবার

    apps

    কালীগঞ্জ বাইপাস সড়ক সংলগ্ন একটি বন্ধ হোটেলের বারান্দায় ঘুমন্ত অবস্থায় পড়ে ছিল মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত অচেনা এক যুবক (২৩)। এ অবস্থায় তাকে দেখে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল করেন এক পথচারী। এর কিছু সময়ের মধ্যেই কালীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাইফুল ইসলামের (১) নেতৃত্বে একদল পুলিশ গিয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন। ঘুম থেকে ডেকে তোলা হয় ওই যুবককে। ওই সময় সে নিজের নাম ও একটি মোবাইল নম্বর দিতে সক্ষম হলেও বিস্তারিত কিছু জানাতে পারেনি। পরে মোবাইল নম্বরে কল দিয়ে পুলিশ জানতে পারে দুই মাস পূর্বে সিলেট শহর থেকে নিখোঁজ হয়েছিল মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক সজল আহমেদ (২৩)। তাৎক্ষণিক তাকে উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান পুলিশ। দিনভর পুলিশ পাহারায় ও সহায়তায় হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে রাতে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয় সজলকে।

    এর আগে বৃহস্পতিবার (৪ মে) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কালীগঞ্জ বাইপাস সড়কের পাশে অবস্থিত নাভানা পাইপ এন্ড প্লাস্টিক কারখানার সংলগ্ন বন্ধ থাকা সামি হোটেলের বারান্দা থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।

    সজল আহমেদ হবিগঞ্জের মাধবপুর থানার রাজেন্দ্রপুর গ্রামের নশু মিয়ার ছেলে। সে তার বড় ভাইয়ের সঙ্গে সিলেট শহরের কাজীটোলার মক্তবগলি এলাকায় বসবাস করেন।

    জানা গেছে, সজল আহমেদ কিছুদিন মাদ্রাসায় পড়ালেখা করে। পরবর্তীতে সে বিগত প্রায় পাঁচ বছর তার বড় ভাই সজীব আহমেদের সঙ্গে বসবাস করে সিলেট বন্দর বাজার মহাজন পট্টি এলাকায় একটি পাওয়ার টুলসের দোকানে চাকরি করতো। প্রায় পাঁচ ছয়-মাস আগে তার চলাফেরা ও কথাবার্তায় অসঙ্গতি পরিলক্ষিত হয়। পরে তাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে জানা যায় সে মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ছে। এরপর থেকে চাকরি ছেড়ে সে বাসায় থেকেই মানসিক চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে ছিলো। গত ৭ মার্চ বাসা থেকে বের হয়ে সে আর ফেরেনি। এরপর তাকে খোঁজাখুঁজি করেও কোথাও সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি), এলাকায় মাইকিং এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিখোঁজ সংবাদ প্রচার করেও তার কোন সন্ধান পায়নি পরিবার।

    সত্যতা নিশ্চিত করে সজল আহমেদের ভাই সজীব আহমেদ বলেন, বৃহস্পতিবার আনুমানিক সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আমার মোবাইলে কল করেন কালীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাইফুল ইসলাম। সে সময় তিনি জানান সজল নামে একজনকে আহতাবস্থায় কালীগঞ্জে পাওয়া গেছে। প্রথমে এই কথা বিশ্বাসই হচ্ছিল না। পরে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো ছবি দেখে আমি নিশ্চই হই সে আমার নিখোঁজ ভাই সজল আহমেদ। পরে সিলেট থেকে রওনা হয়ে সন্ধ্যার পর কালীগঞ্জ থানায় পৌঁছাই। এরপর পুলিশের সঙ্গে হাসপাতালে গিয়ে আমার ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হয়। রাত সাড়ে ৮টার দিকে সজলকে আমাদের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। নিখোঁজের প্রায় দুই মাস পর ভাইকে খুঁজে পেয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে তিনি পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

    কালীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাইফুল ইসলাম (১) বলেন, জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর-৯৯৯ থেকে কল পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত অবস্থায় ঘুমিয়ে রয়েছে ওই যুবক। পরে ঘুম থেকে ডেকে পরিচয় জানতে চাইলে সে তার নিজের নাম সজল বলে জানালেও বিস্তারিত বলতে পারেনি। এছাড়াও কি করে সে কালীগঞ্জে এসছে তাও বলতে পারেনি। এর কিছু সময় পর সে কয়েকটি মোবাইল নম্বর বলতে পারলেও কনফার্ম করতে পারেনি। ধারণা করে ওই নম্বরে কল দিলে সজীব নামে এক ব্যক্তি রিসিভ করলে তাকে সজল নামের এক জনের সন্ধান জানিয়ে হোয়াটসঅ্যাপে তার ছবি পাঠানো হয়। পরে তিনি নিশ্চিত করেন খুঁজে পাওয়া যুবক তার নিখোঁজ ভাই সজল। সে মানসিক ভারসাম্যহীন। সে সময় সজলকে উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয় এবং একজন বিশেষ আনসার নিয়োগ করে পাহারায় রাখা হয়। সন্ধ্যায় সিলেট থেকে তার ভাই ও স্বজনরা এলে রাত সাড়ে ৮টার দিকে সজলকে হস্তান্তর করা হয়।

    বাংলাদেশ সময়: ৯:১০ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ০৫ মে ২০২৩

    dainikbanglarnabokantha.com |

    এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

    আর্কাইভ