• শিরোনাম

    সুন্দরগঞ্জের চরাঞ্চলে তরমুজ চাষে সফলতার দ্বার উন্মোচনের সম্ভবনা

    রংপুর ব্যুরো: বুধবার, ২৯ মার্চ ২০২৩

    সুন্দরগঞ্জের চরাঞ্চলে তরমুজ চাষে সফলতার দ্বার উন্মোচনের সম্ভবনা

    apps

    ব্রহ্মপুত্র ও তিস্ত নদীর মধ্যবর্তী দুর্গম চরে তরমুজ চাষে দুই শিক্ষার্থীর সফলতার দ্বার উন্মোচনের সম্ভবনা দেখা দিয়েছে। লেখাপড়ার পাশাপাশি পারিবারিক বাঁধা থাকা সত্ত্বেও দুই শিক্ষার্থীর এমন উদ্দোগ কৃষি ক্ষেত্রে যেন নতুন এক সম্ভাবনা। জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলার খামার বাঁশ পাতা গ্রামের কৃষক ফজল হক এর ছেলে এরশাদুল হক ও মশিউর রহমানের উদ্যোগে ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তা নদীর মধ্যবর্তী দুর্গম চওে ৪ বিঘা জমিতে তরমুজ চাষ করে এলাকায় ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। এরশাদুল হক গাইবান্ধা জিয়েট কলেজ থেকে ডিপ্লোমা ইন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এ পড়াশুনা শেষ করে কৃষি কাজে নিজেকে নিয়োজিত করতেছে।
    কিন্তু কৃষি কাজের জন্য তিনি কৃষক বাবার নিকট বার বার টাকা চাইলে প্রথমে বাবার টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালেও পরবর্তী সময়ে ছেলের এমন আগ্রহ দেখে টাকা দিতে রাজি হয়। বাবার নিকট থেকে চাহিদা মতো ৯০ হাজার টাকা নিয়ে চার বিঘা জমিতে তরমুজ চাষ শুরু করে। তরমুজ চাষে পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকায় তিনি ধাপে ধাপে বিপদের সম্মুখীন হয়। তরমুজ গাছের বিভিন্ন রোগবালাই এর ফলে কখনো ডাল শুকিয়ে যাওয়া, কখনো ফুল ঝরে পরা, কখনো পোকার আক্রমণে গাছ নষ্ট হওয়া, কখনো ফল পঁচে যাওয়া এমন নানাবিধ সমস্যা দেখা দিলে তিনি তরমুজ চাষে হতাশ হয়ে পড়ে। এমন সমস্যার কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, যার কেউ নাই,তার আল্লাহ আছে।
    বর্তমানে প্রতিটি গাছে ৩/৪ টি করে তরমুজ ধরেছে,যা বিক্রি করার উপযোগী হয়েছে। প্রায় ২লক্ষ টাকার তরমুজ বিক্রয় করা যাবে হবে বলে তিনি আশা করচ্ছে। এতে খরচ বাদে লক্ষাধিক টাকা আয় হতে পারে। তরমুজ চাষের জমিটির অর্ধেক অংশ কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলার অষ্টমীর চর ইউনিয়নের খামার বাঁশপাতা গ্রামে আর বাকি অর্ধেক অংশ গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কাপাসিয়া ইউনিয়নের লাল-চামাড় মৌজার জমি হওয়ায় দুই উপজেলার কোন কৃষি কর্মকর্তারা কোন পরামর্শ ও সহযোগিতা করেনি। তরমুজ চাষী বলেন, যদি তিনি কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ ও সহযোগিতা পেতেন তাহলে তরমুজ চাষের সাফল্য আরো বেশি অর্জন করতেন।
    এখনও ক্ষেতের কিছু তরমুজ পঁচে নষ্ট হচ্ছে। সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কাপাসিয়া ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা লিটনের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে, তিনি তরমুজ চাষের বিষয়টি অবগত নন জানান। চিলমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কুমার প্রণয় বিষাণ দাসের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মাঠ কর্মকর্তাকে দেখার জন্য এখনি বলছি। অষ্টমীর চর ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা স্বপন মিয়ার সাথে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, দুর্গম এলাকায় এক বার গেলে আর যেতে ইচ্ছে করে না।
    তরমুজ এর গাছ নিয়ে অফিসে আসতে বলা হয়েছিল কিন্তু আসে নি। সুন্দরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাশেদুল কবির’র সাথে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, তরমুজ চাষির মোবাইল নাম্বার আমাকে দিলে আমি বিষয়টি দেখব। দুই দেশের মধ্যবর্তী স্থানে নয়,দুই উপজেলার মধ্যবর্তী স্থানে জমি হওয়ায় কৃষি সেবা থেকে বঞ্চিত হওয়ার ঘটনাকে ন্যাক্কার জনক বলেন মনে করেন সচেতন মহল।
    এছাড়া সংশ্লিষ্ট কৃষি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়। এরশাদুল হক ও মশিউর রহমানের এ সাফল্য দেখে এলাকার অনেক শিক্ষিত বেকার তরমুজ চাষসহ কৃষি ক্ষেত্রে আগ্রহী হয়ে উঠবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এমন দুর্গম চর অঞ্চলে কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ ও সহযোগিতা পেলে চর অঞ্চলে কৃষিতে বিপ্লব ঘটবে। যা জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তায় ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।

    বাংলাদেশ সময়: ১১:৫৭ অপরাহ্ণ | বুধবার, ২৯ মার্চ ২০২৩

    dainikbanglarnabokantha.com |

    এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

    আর্কাইভ