• শিরোনাম

    শিবপুরের ঐতিহ্যবাহী আফসার উদ্দিন ভূইয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান উন্নয়নে ও শহিদ মিনারে প্রানের সঞ্চার হলো দীর্ঘ দের যোগ পর।

    সোহরাব হোসেন খাঁনঃ বুধবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

    শিবপুরের ঐতিহ্যবাহী আফসার উদ্দিন ভূইয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান উন্নয়নে ও শহিদ মিনারে প্রানের সঞ্চার হলো দীর্ঘ দের যোগ পর।

    apps

    নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার পাহাড়িয়া সবুজ ছায়াঘেরা অঞ্চল হিসেবে জেলায় পরিচিত জয়নগর ইউনিয়ন। অত্র ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী একটিই মাত্র স্কুল ছিলো যার নাম জয়নগর আলহাজ্ব আফসার উদ্দিন ভূইয়া উচ্চ বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টিতে দূরদূরান্ত থেকে আশা সতসত ছাত্র-ছাত্রীরা পড়ালেখা করতো। কালের বিবর্তনে ধীরে ধীরে স্কুলের সংক্ষা বৃদ্ধি হওয়ায় এক সময়কার প্রাণবন্তময় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংক্ষাও কমতে থাকে।

    পরিচালনা পরিষদের তেমন তৎপরতা না থাকায় শিক্ষার মানও নিচের দিকে নেমে আশে। এই ভাবে চলতে থাকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান উন্নয়নের লক্ষে তৎপর হোন প্রাক্তন ছাত্র’রা। যারা আজ বিভিন্ন ভাবে প্রতিষ্ঠিত। তাদের নিরলস প্রচেষ্টা আর ৯৪ ব্যাচের ছাত্র একজন সাদা মনের মানুষ, গ্রিন হীল ফার্মাসিউটিক্যাল লিঃ, আব্দুল্লাহ পোল্ট্রি ফিড মিলস্ এর এমডি ও গিলাবের সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন সফল সভাপতি বিশিষ্ট শিল্পপতি আলহাজ্ব মোঃ মাসুদুল হক তার হাত ধরে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার মান উন্নয়নের পথে অগ্রসর হবে সেই ঐতিহ্যবাহী জয়নগর আলহাজ্ব আফসার উদ্দিন ভূইয়া উচ্চ বিদ্যালয়।

    বিশিষ্ট শিল্পপতি মোঃ মাসুদুল হক স্বপ্নদেখেন আলোকিত সমাজ গড়ার, ঝিমিয়ে পরা শিক্ষাব্যাবস্থাকে উজ্জীবিত করে জেলার শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপিঠ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা। এলাকার যুব সমাজকে মাদক থেকে রক্ষা করে একটি সুশিক্ষিত সমাজ গড়ার । আর সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতেই প্রথমে তার নিজ গ্রাম গিলাবের সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নজর দেন। কমল মতি শিশুদের মেধাবি ছাত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে নিজ অর্থায়নে শিক্ষকদের বেতন ভুক্ত করে চালো করেন রাত্রি কালিন স্কুল । যেখানে অত্র বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থী একদম ফ্রীতে পড়ালেখা করছে। রাত্রি কালিন স্কুল চালো হওয়ার পর থেকে আমূল-পরিবর্তন আশে শিক্ষার্থীদের মাঝে। ছাত্র-ছাত্রীদের ভালো রেজাল্ট করায় উপজেলায় শ্রেষ্ঠ সভাপতি হিসেবেও নির্বাচিত হয়েছেন মোঃ মাসুদুল হক।

    সেই দিকে লক্ষ্য রেখে তিনি আফসার উদ্দিন ভূইয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র ৯৪ ব্যাচ ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় বিদ্যালয়ের পরিত্যাক্ত জরাজীর্ণ ভবন নিজ অর্থায়নে সংস্কার করে এখানে “গ্রিন হার্ট শ্যাডো এডুকেশন” নামক একটি রাত্রি কালিনী স্কুল প্রতিষ্ঠান চালো করেন। যেখানে অত্র স্কুলের শিক্ষার্থীরা রাত্রি কালিন পড়ালেখা করবে একদম ফ্রী’তে। এই প্রতিষ্টানটিও পরিচালিত হচ্ছে তার নিজ অর্থায়নে। শিক্ষকদের বেতন সহ সকল প্রকার ব্যায় বহন করছেন শিক্ষানুরাগী মোঃ মাসুদুল হক।

    “গ্রিন হার্ট শ্যাডো এডুকেশন” নামক এই প্রতিষ্ঠানে যে সমস্ত শিক্ষকগণ পাঠদান করছেন, সবাই সুনাম ধন্য মেদাবী শিক্ষক।

    প্রতিষ্ঠানটির বিতর বাহিরের পরিবেশ দেখলে মনে হবে যেনো ঢাকার উচ্চ বেতনে পরিচালিত ইংলিশ মিডিয়াম। ফুলের সৌন্দর্য আর মনোরম পরিবেশে একদম ফ্রী তে পড়ালেখা করানো প্রতিষ্ঠান জেলায় এই প্রথম চালো হলো।

    শুধু গ্রিন হার্ট শ্যাডো এডুকেশনের সৌন্দর্য নয় আলহাজ্ব আফসার উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে অবস্থিত অত্র ইউনিয়নের মাঝে সব থেকে উঁচু একমাত্র শহিদ মিনার তাও আজ অবহেলিত আর পরিত্যাক্ত অবস্থায় দাড়িয়ে আছে। যেখানে একসময়কার প্রাণবন্তর উৎসবমুখর পরিবেশে অত্র ইউনিয়নের সকল পেশাজীবির দেশ প্রেমিকরা এই মিনারে ফুল দিয়ে শহিদদের শ্রদ্ধা নিবেদন করতো। মিনারটি দীর্ঘ দের যোগেরও বেসি হয় পরিত্যক্ত। শহিদ দিবস গুলোতে মানুষের উপস্থিতি আর আনুষ্ঠানিকতা নেই বললেই চলে। অত্র বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নাম মাত্র অংশগ্রহণ থাকলেও অবহেলিত আর বিভিন্ন স্থানে ফাটল নিয়ে দাড়িয়ে থাকা শহিদ মিনারটি’র সামনে ফুলের তোরা কিংবা দামী কোনো ফুল জুটতো না।

    এবছর একুশে ফেব্রুয়ারি মহান শহিদ দিবস উপলক্ষে বিশিষ্ট শিল্পপতি মোঃ মাসুদুল হক তার নিজ অর্থায়নে মিনারটিরও সংস্কার করেন। দাড়িয়ে থাকা শহিদ মিনারটি পূণরায় যথাযোগ্য মর্যাদা পেলো দের যোগ পর ২০২৩ সালে। গত ফেব্রুয়ারীর ২০ তারিখ দিবাগত রাত ১২:০১ মিনিটে ৫২ ভাষা শহিদদের শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আশা উপস্থিতি আর আনুষ্ঠানিক আপ্যায়নই প্রমান করে।

    দীর্ঘদিন পর জয়নগর আলহাজ্ব আফসার উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের সেই শহিদ মিনারটি আবারও প্রাণের সঞ্চার ফিরে পেলো। প্রানবন্ত পরিবেশে দিবসটি উদযাপন করতে নিরলসভাবে প্রচেষ্টা করেছেন প্রাক্তন ছাত্র ও স্থানীয় সচেতন মহল। মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করার আগমূহু্তে জয়নগর ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি মোঃ দেলোয়ার হোসেনের সঞ্চালনায় অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আলা ভুলা’র সভাপতিত্বে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

    এসময় উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন জয়নগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ নাসিম সরকার, জয়নগর অনার্স কলেজের অধক্ষ্য মোঃ হুমায়ুন কবির, উপাধ্যক্ষ ড. এম জামাল উদ্দিন, গ্রিন হার্ট শ্যাডো এডুকেশন এর এ্যাডমিন মোঃ তাইজুল ইসলাম, চৈতন্যা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোঃ দেলোয়ার হোসেন, জয়নগর ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং ওয়ার্ড সদস্য গাজী বজলুর রহমান, সাবেক ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য মোঃ আঙ্গুর মিয়া, ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মোক্তার হোসেন, ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোঃ বিপ্লব মিয়া, ইউনিয়ন ছাত্র লীগের সাবেক আহবায়ক মোঃ ছানা উল্লাহ সহ প্রমুখ। আলোচনা শেষে আগত সত সত সকল পেশা জীবি, শিক্ষক, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, স্থানীয় সুশীল সমাজ সহ শিক্ষার্থীরা এক মিনিট নিরবতা পালন শেষে ১২ঃ০১ মিনিটে একের পর এক ফুলের তোরা নিয়ে শহিদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করতে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ হতে মিনারে পূস্পস্থপক অর্পণ করেন।
    পূস্পস্থপক অর্পণ শেষে ভাষা শহিদ তথা দেশের জন্য যারা শহিদ হয়েছেন সবার রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

    অন্যদিকে আগত অতিথি সহ স্থানীয় এলাকাবাসীরা- বিশিষ্ট শিল্পপতি শিক্ষানুরাগী আলহাজ্ব মোঃ মাসুদুর হকের এমন মহত উদ্যোগের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। এবং তারা বলেন, মোঃ মাসুদুল হকের মতো সন্তান যেনো দেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে একজন করে জন্ম হয়।

    বাংলাদেশ সময়: ৯:৫১ অপরাহ্ণ | বুধবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

    dainikbanglarnabokantha.com |

    এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

    আর্কাইভ