• শিরোনাম

    মোকারিমপুর ইউপিতে টিসিবির নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অধিক মূল্যে পণ্য বিক্রয়ের অভিযোগ।

    রফিকুল ইসলাম, কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : বুধবার, ১৫ মার্চ ২০২৩

    মোকারিমপুর ইউপিতে টিসিবির নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অধিক মূল্যে পণ্য বিক্রয়ের অভিযোগ।

    apps

    কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার মোকারিপুর ইউনিয়নে টিসিবির পণ্য বিক্রয়ে ব্যাপক অনিয়ম, স্বজন প্রীতি ও পণ্যের নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অধিক মূল্যে পণ্য বিক্রয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় চাঁদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সোমবার (১৩/০৩/২০২৩-ইং) টিসিবির পণ্য বিক্রয়ে এই অনিয়মের কথা ভুক্তভোগীরা স্থানীয় সাংবাদিকদের নিকটে বিবৃত করেছেন।

    কার্ড হোল্ডার সুবিধাভোগীরা দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে সাংবাদিকদের কাছে বলেন, আমরা জানি দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখার উদ্দেশ্যে সরকার দুঃস্থ ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মাঝে টিসিবির মাধ্যমে স্বল্প মূল্যে পণ্যের যোগান দিয়ে থাকে। এই পণ্য বিক্রয়ের সময় গতকাল তাদের সাথে প্রতারণামূলকভাবে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অধিক মূল্য রাখা হয়েছে। টিসিবি ডিলার ও স্থানীয় ইউপি মেম্বারদের পরস্পর যোগসাজসে এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে বলে তারা জানান।

    স্থানীয় ভুক্তভোগী আব্দুল হাকিম পিতা মৃত মোসলেম, ভুক্তভোগী কাবুল পিতা মৃত আবুল হাশেম, ভুক্তভোগী জনি পিতা আব্দুল হান্নান, শাহীন পিতা ইন্তাজ প্রামানিক, ভুক্তভোগী খবির পিতা ভাষা মালিথা সংবাদ মাধ্যমকে দেয়া তাদের ভিডিও বক্তব্যে জানান, গতকাল টিসিবি তে ২ কেজি ডাল, ২ লিটার তেল, ১ কেজি ছোলা ও এক কেজি চিনি দেয়া হয়। যার সরকার নির্ধারিত মূল্য ছিল ৪৬০/৪৭০ টাকা। তারা টিসিবির পণ্য ক্রয় করতে যেয়ে লক্ষ্য করেন, মেম্বার ও ডিলার নির্ধারিত মূল্যের অধিক দামে পণ্য বিক্রয় করছেন। প্রত্যেককে ৫০০ টাকা করে দিতে বলা হলে সবাই বাধ্য হয়ে ৫০০ টাকা মেম্বার ও ডিলারের হাতে দেন।
    ভুক্তভোগীরা বলেন, টিসিবির পণ্য বিতরণের পূর্বে কোন ধরনের মাইকিং বা অন্য কোন বিশেষ ব্যবস্থায় তাদেরকে অবহিত করা হয়নি। লোকোমুখে শুনে খুব অল্প সংখ্যক লোক টিসিবির পণ্য ক্রয়ের জন্য চাঁদ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উপস্থিত হন। ৪৬০/৪৭০ টাকার জায়গায় ৫০০ টাকা কেন দিতে হবে এমন প্রশ্ন করলে স্থানীয় মেম্বার গন গ্রাহকদেরকে বলেন এটা নিয়ে কোন ধরনের প্রতিবাদ করলে কার্ড বাতিল করে দেয়া হবে। কার্ড বাতিলের হুমকি পাওয়ায় গ্রাহকগণ তাদের দাবিকৃত অর্থ দিয়ে ক্রয় করতে বাধ্য হন। ভুক্তভোগীরা আরো জানান, স্বজনপ্রীতি করে কোন কোন ব্যক্তিকে তাদের প্রাপ্যতার চেয়ে অধিক পরিমাণে পণ্য দেয়া হয়েছে।

    অনিয়ম করে মোকারিমপুর ইউনিয়নের বাইরের লোকজন কেও পণ্য দেয়ার অভিযোগ করেছেন তারা সংবাদমাধ্যমের কাছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ডিলার আমিনুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ৫০০ টাকা করে আদায় করার কথা স্বীকার করেন। ‌ তিনি ভুল স্বীকার করে বলেন, অতিরিক্ত টাকা শীঘ্রই গ্রাহকদের ফেরত দেবার ব্যবস্থা করবেন তিনি। ভেড়ামারা উপজেলার মোকারিপুর ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার শরিফুল ইসলাম রনি বলেন, অধিক মূল্য রাখার দায়-দায়িত্ব তিনি নেবেন না।
    এ দায় দায়িত্ব সম্পূর্ণরূপে ডিলারের।
    তিনি নিজেও গ্রাহকদের কাছ থেকে ৫০০ টাকা করে নিয়েছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন কোন ব্যক্তি আমাকে টাকা দিলে এবং পণ্য নিয়ে দিতে বললে আমি না করতে পারি না। আমি টাকা নিয়ে পণ্য দিতে তাদেরকে সহায়তা করেছি মাত্র। একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে পণ্যের সুষম বন্টনে ঘটনা স্থলে উপস্থিত থেকেও তিনি ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন কিনা এই প্রশ্নের জবাবে তিনি সন্তোষ জনক জবাব দিতে পারেননি।

    এব্যাপারে মোকাররিম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ জানান, টিসিবির পণ্য ৪৭০ টাকা নিবে, ৫০০টাকা নিবে কেন! ৫০০টাকার নেওয়ার বিষয়টি তার জানা নেই।

    এব্যাপারে ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসিনা মমতাজ জানান, ভুক্তভোগীদের নিকট থেকে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে তিনি এই বিষয়ে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

    বাংলাদেশ সময়: ২:১১ অপরাহ্ণ | বুধবার, ১৫ মার্চ ২০২৩

    dainikbanglarnabokantha.com |

    এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

    আর্কাইভ