• শিরোনাম

    প্রাথমিক শিক্ষায় নারী শিক্ষিকার গুরুত্ব

    মোঃ ওমর ফারুক : বুধবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৩

    প্রাথমিক শিক্ষায় নারী শিক্ষিকার গুরুত্ব

    apps

    Education commences at the mother’s knee and every word spoken within the hearsay of little children tends towards the formation of characters” (Hosea Ballou) শিক্ষা ব্যবস্থার মূল ভিত্তি হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা। প্রত্যেক শিশু জন্মগ্রহন করার পর থেকে শিক্ষিকা হিসাবে পায় তার মাকে। সেখান থেকেই তার জীবন যুদ্ধের প্রারম্ভ। শিশু চারপাশের পরিবেশকে চিনতে শিখে মায়ের সহায়তায়, সে জীবনে প্রথম বাইরের পৃথিবীকে বিস্ময়ে অবলোকন করে মায়ের মাধ্যমে। এই শিশুর প্রথম শিক্ষার স্তর হচ্ছে প্রাথমিক বিদ্যালয়।

    নারী শিক্ষিকাগণ এ দিকে নিজের মায়ের মত শিক্ষার্থীদের আদর-যত্ন করে শিক্ষাদান করেন। একজন শিশুর সব চাহিদা একমাত্র তার মা-ই বুঝে। তাই প্রাথমিক শিক্ষার নারী শিক্ষিকার শুরু অপরিসিম। কারন মায়েরা শিশুদেরকে আনন্দ দান করেন, যা শিখন ও শেখানের জন্য শিশুদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। একজন নারী শিক্ষিকা সবসময় চায় শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা ও উৎসবের মধ্যে দিয়ে শিক্ষা গ্রহণ করুক। স্কুলের প্রতি তারা আগ্রাহী ও আন্তরিক হোক। শিক্ষার্থীদেরকে ক্লাসের বাহিরেও পড়ালেখা ও ক্লাসের প্রতি মনোযোগী হতে শিক্ষিকাগণের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা প্রাথমিক শিক্ষাকে সৃজনশীল ও যুগোপযোগী করে তুলেছে। এর ফলে প্রাথমিক শিক্ষার দিন দিন উপস্থিতি বাড়ছে। নারী শিক্ষিকা বা পুরুষ শিক্ষক উভয়ের অবদান শিক্ষার্থীর জন্মমুল থেকে সারাজীবন তাদের প্রভাবিত করে। এ সম্পর্কে G. K Chastem বলেছেন- “Education is a simply the soul of a society and it passes form one generation to another” – আসলে শিক্ষা হল সমাজের আত্না কারন এটা বংশানুক্রমে চলতে থাকে । শিশুরা আলো-বাতাস, বাইরের প্রশস্ত মাঠ সমারোহ, খেলাধুলার সামগ্রী, বিভিন্ন উপকরন এবং উপযুক্ত স্নেহপূর্ন মাতৃ-পিতৃতুল্য শিক্ষক-শিক্ষিকার আদর্শ সমেত বিদ্যাপিঠ চাই এবং teacher গণের সহচার্য্য শিশুদেরকে পাঠদানে বিশেষ ভুমিকা পালন করে। শিক্ষক- শিক্ষিকাগন আন্তরিক ভাবে শিশুর জীবনের ক্রমবিকাশের স্তরভেদে আত্মবিকাশের জন্য পাঠদান করে থাকেন। আমেরিকার বিবেক এমারসন বলেছেন- “The Secret of education lies in respecting the pupil”. ফ্রোবেল (Frobel) এর মতে শিশুকে উপযুক্ত ভাবে গড়ে তুলতে হলে তার শিক্ষা তিন বছর বয়স থেকে আরম্ভ হওয়া উচিত। তার মতে শিশুর আকৃতি, প্রকৃতি, শ্রদ্ধা, সামর্থ্য, রুচি, অরুচি সর্বদা আলাদা ।

    তার শারীরিক, মানসিক, আবেগিক সব ধরনের শক্তির পুঞ্জীভুত সুষ্ঠু প্রকাশ খেলা-ধুলার মাধ্যমেই। স্কুলে এলেই যে জ্ঞান অর্জন করা যায়- সেই ধারনাটা শিশুর আছে এবং অভিভাবকগনও এই বিশ্বাস থেকে সন্তানকে প্রাথমিক স্কুলে পাঠিয়ে অনেকটা নিশ্চিন্তে থাকেন। শিশুদের মাঝে শৃংখলা প্রতিষ্ঠা করা, সিদ্ধান্ত নিতে সন্তানকে সহযোগীতা করা, সন্তানকে শর্তহীনভাবে ভালোবাসা, সন্তানের সাফল্যে সেলিব্রেট করা, কাজের মুল্যায়ন পজিটিভলি করা, সতর্কতা ও সাবধানবানী শোনানো, ধৈর্য্য ধরতে উৎসাহিত করা, মহৎ ব্যক্তিগণের গল্প পড়ে শুনানো-এই ভাবেই সন্তানের মধ্যে রসরোধ গড়ে তোলার মাধ্যমে অবশ্যই আত্যবিশ্বাসী মা-বাবা হওয়াই সকলের কাম্য

    শিশু যেন ভাবে “আমাদের স্কুল আনন্দের এক রঙ্গিন ফুল।” অবশেষে শিক্ষার্থীদের পড়া-লেখাসহ সৃজনশীল কাজের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করে আলোকিত, সুনাগরিক হিসাবে গড়ে তোলে দেশ ও জাতীর আস্থা পুরন করাই মা-বাবা, শিক্ষক-শিক্ষিকাগনের নৈতিক দায়িত্ব । এক কথায় বলা যায় প্রাথমিক শিক্ষায় নারী শিক্ষিকাগনের অবদান সমাধিক ।

    ডা. মোহাম্মদ নিজাম মোর্শেদ চৌধুরী (চিকিৎসক, শিক্ষানরাগী, সমাজকর্মী

    বাংলাদেশ সময়: ৬:২৯ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৩

    dainikbanglarnabokantha.com |

    এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

    আর্কাইভ