• শিরোনাম

    পবা উপজেলায় গবাদিপশু পালনে আগ্রহী হচ্ছে মানুষ হ্রাস পাবে বেকারত্ব শক্তিশালী হবে স্থানীয় অর্থনীতি

    ইউসুফ চৌধুরী-রাজশাহী: মঙ্গলবার, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

    পবা উপজেলায় গবাদিপশু পালনে আগ্রহী হচ্ছে মানুষ হ্রাস পাবে বেকারত্ব শক্তিশালী হবে স্থানীয় অর্থনীতি

    apps

    গবাদিপশু পালনে রাজশাহীর পবা উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল কর্তৃক প্রশিক্ষণ, জরুরী সেবা ও কাঙ্খিত চিকিৎসাসেবা পেয়ে এই এলাকার খামারিরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। কর্তৃপক্ষের নানামুখি উদ্যোগগ্রহণ, সেবার মানোন্নয়ন ও উদ্বুদ্ধকরণের কারণে স্থানীয় সাধারণ মানুষদের মাঝে আগ্রহ বৃদ্ধি পাচ্ছে পশুপালন ও খামার ব্যবসায়। এলাকার স্থানীয় খামারী ও সেবাগ্রহীতাদের সাথে কথা বলে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। সত্যতা জানার জন্য সরেজমিনে গিয়ে দেখাগেছে, প্রতিদিন প্রায় দেড় শতাধিক খামারি ও সাধারণ মানুষ অসুস্থ গবাদিপশুর প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিচ্ছেন প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল।

    প্রতিদিন হাঁস-মুরগির টিকাদান, পশুপাখির চিকিৎসা প্রদান, উন্নত কৃত্রিম প্রজনন কার্যক্রম ও উন্নত জাতের ঘাস চাষ সম্প্রসারণ এবং প্রশিক্ষণ সহ জরুরী সেবা প্রদান করে আসছে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল। পাশাপাশি গবাদিপশু পালনে উদ্বুদ্ধ করছেন যুবসমাজসহ সাধারণ মানুষকে। প্রাত্যহিক ও নিয়মিত চিকিৎসা সেবার মধ্যে অন্যতম হলো পশুপাখির পেটফুলা, পেট ফাপা, হাত-পা ভাঙ্গা, জ্বর সহ অন্যান্য চিকিৎসা। এছাড়াও হাঁস-মুরগীর ভ্যাকসিন নিতে নিয়মিত ভীড় করেন খামারি ও সাধারণ মানুষরা।

    উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডাঃ সুব্রত কুমার সরকার বলেন, প্রতিদিন উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভার প্রত্যন্ত এলাকা থেকে দেড় শতাধিক খামারি ও সাধারণ মানুষ অসুস্থ গবাদিপশু নিয়ে হাসপাতালে এসে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়াও অসহায় ও হত-দরিদ্রদের মাঝে উন্নতজাতের গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগি বিতরণ এবং পুনর্বাসন ও উপকরণ সহায়তা প্রদান অব্যাহত আছে। তিনি আরো জানান, মোবাইল ভেটেরিনারি ক্লিনিকের মাধ্যমে দুর দুরান্তে গবাদিপশুর জরুরী চিকিৎসা প্রদান করা হয়। চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি মাঠ পর্যায়ে রোগ অনুসন্ধান কার্যক্রম, গবাদিপশু লালন পালন, টিকা প্রদান, উন্নতজাতের ঘাস চাষ, গবাদিপশুর প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য উল্লেখিত দপ্তর নিয়মিত উঠান বৈঠক, মতবিনিময় সভা সহ গবাদিপশুর জাত উন্নয়নে প্রতিটি পৌরসভায় ও ইউনিয়নে কৃত্রিম প্রজনন কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। উপজেলায় প্রায় ছোট বড় পাঁচ শতাধিক গরুর খামার, ছয় শতাধিক ছাগল ও ভেড়ার খামার এবং পাঁচ শতাধিক হাঁস-মুরগীর খামার রয়েছে। ইদানিং অনেকেই খামার স্থাপনে আগ্রহী হচ্ছেন। এরমধ্যে বেকার যুবকেরা আগ্রহী হচ্ছে এই পেশাতে। বিষয়টি একদিকে যেমন বেকারত্ব দূরীকরণে ভাল ভূমিকা রাখবে। ঠিক তেমনি ভাবে স্থানীয় অর্থনীতিকেও শক্তিশালী করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এমন ভাল উদ্যোগ। এই সেক্টরের যে কোন উদ্যোগতাকে খামারের সেড র্নিমাণ হতে শুরু করে খামারের ব্যবস্থাপনা, চিকিৎসা সম্পর্কিত যাবতীয় পরামর্শ সহ অন্যান্য প্রয়োনীয় সেবা প্রাণিসম্পদ দপ্তর থেকে দেয়ার আশ্বাস দেন তিনি।

    উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডাক্তার সুব্রত কুমার সরকার বলেন, জনবল সংকট থাকলেও বিভিন্ন এলাকার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে নিয়ে আসা গবাদিপশুর চিকিৎসা সেবা দিকে কোন অনীহা নেই কর্মরতদের। কোন সেবাগ্রহীতা বা উপকারভোগী যেনো হয়রানির স্বীকার না হন সেজন্য নিয়মিতভাবে তিনি সার্বিক বিষয়ে তদারকি করেন থাকেন। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বেশ আন্তরিকতার সাথে সেবা দিয়ে থাকেন বলেও জানান তিনি।

    প্রয়োজনের সময় ভালমানের কাঙ্খিতসেবা পাওয়ায় উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে আগের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে গবাদিপশু ও খামার ব্যবসায়ীদের কর্মযজ্ঞ। বৃদ্ধি পেয়েছে গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগির খামারসহ গরু মোটাতাজাকরন ও গাভী পালনের পরিধি। সেবারমানে আস্থা থাকার কারণে, স্থানীয় যুবসমাজের আগ্রহ বাড়ছে এই পেশাতে। আগ্রহী হচ্ছে সাধারণ মানুষরাও। সৃষ্টি হচ্ছে নতুন কর্মসংস্থানের। হ্রাস পাচ্ছে বেকারত্বের বলে মন্তব্য স্থানীয়দের। এভাবে চলতে থাকলে এই অঞ্চলের মানুষরা স্বাবলম্বী হবে; শক্তবস্থানে যাবে স্থানীয় অর্থনীতির বিষয়টিও।

    সেবা নিতে আসা নওহাটা পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ড চোবাড়িয়া গ্রামের রেনুকা বেগম ও আব্দুল হামিদ দম্পতি জানান, গর্ভবতী ছাগল বাড়ীতে প্রসব করানোর সময় পা বেরিয়ে এলেও মাথা আটকে যায়। তাড়াতাড়ি পবা উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস ও ভেটেরিনারি হাসপাতালে নিয়ে আসি। ডাক্তারের চিকিৎসা সেবায় সফলভাবে বাচ্চা প্রসব হয়। ডাক্তার এর তাৎক্ষনিক চিকিৎসার কারণে আমার ছাগলের বাচ্চা খালাস (প্রসব) হয়েছে। এমন ধরণের কাঙ্খিত সেবা পেয়ে আমরা খুশি। পারিলা ইউনিয়নের সারাংপুর গ্রামের তাসকিরা বেগম ও একরামুল হক দম্পতি জানান, কয়েকদিন আগে আমাদের পালিত ছাগলের বাচ্চা হয়। মলদ্বার না থাকায় দুইদিন পর বাচ্চার পেট ফুলে যায়। এখানে এসে বিস্তারিত বললে ডাক্তার অপারেশনের মাধ্যমে মলদ্বার বের করেন এবং চিকিৎসা দেন। এখন বাচ্চা সুস্থ আছে। এখানকার চিকিৎসা সেবায় আমরা মুগ্ধ।

    বাংলাদেশ সময়: ১০:০০ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

    dainikbanglarnabokantha.com |

    এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

    আর্কাইভ