• শিরোনাম

    ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টারে সিটি টোলের নামে ব্যাপক চাঁদাবাজি, মুল হোতা আবুল ওরফে জামাই আবুল।

    শরীফ আহমেদ প্রতিবেদনঃ সোমবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৩

    ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টারে সিটি টোলের নামে ব্যাপক চাঁদাবাজি, মুল হোতা আবুল ওরফে জামাই আবুল।

    apps

    রাজধানী ঢাকার প্রবেশমুখে ডেমরা-স্টাফকোয়ার্টার-রামপুরা-বনশ্রী ও সুলতানা কামাল সেতু হয়ে রুপগঞ্জ অন্যদিকে কোনাপাড়া-ডেমরা-যাত্রাবাড়ী প্রধান সড়কে এলাকায় দীর্ঘদিন ধরেই আইনশৃংখলা বাহিনীর নাকের ডগায় চলছে সিটি টোলের নামে ব্যাপক চাঁদাবাজি।

    দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৭০ নং ওর্য়াডে টোলের নামে চাঁদাবাজি করছে স্থানীয় সরকার দলীয় নেতা ও তাদের পালিত সন্ত্রাসীরা , রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রচ্ছায়ায় ও স্থানীয় ট্রাফিক বিভাগ দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তাদের মদদে নীল রংয়ের রশিদ দিয়ে সিটি টোলের চাঁদা তোলা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন জড়িত ব্যক্তিদের দাবি, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্রপোরেশন নাম বিক্রি করে বছরের পর বছর ব্যাপী অবৈধ সিটি টোল আদায় করছে ডেমরার স্হানীয় আওয়ামীলীগ নেতা আবুল ওরফে জামাই আবুল গং,
    চাঁদাবাজ জামাই আবুল নিজেকে স্হানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজী মনিরুল ইসলাম মনু ঘনিষ্ঠ জন বলে প্রচার করেন।
    সরেজমিনে বাস্তবে দেখা যায়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের কর্মীরা সিটি কর্রপোরেশনের নির্দেশনার তোয়াক্কা না করে নির্দিষ্ট অর্থের চেয়ে দুই থেকে তিন গুণ বেশি জোঁড়পূর্বক চাঁদা আদায় করছে চাঁদাবাজ জামাই আবুল এর লোকজন।

    অনুসন্ধানে দেখা যায়, যাত্রাবাড়ী হতে ডেমরা-রামপুরা-বনশ্রী সড়ক ও ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার এলাকায় স্হানীয় রাসেল সিএনজি পাম্প ও হাজী হোসেন প্লাজা মার্কেট সংলগ্ন রাস্তায় দুই-তিনটি দলে ভাগ হয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সিটি টোলের নামে বিভিন্ন পিকআপ,ট্র্যাক,লরি মালবাহী পন্য গাড়ী হতে সিটি টোলে রঙিন ছিল্পিপ দিয়ে চাঁদা আদায় করছেন চাঁদাবাজরা।

    যাত্রীবাহী লেগুনা, সিএনজি, অটোরিকশা, বাস, মালবাহী ট্রাক, অবৈধ ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক, অটোরিকশাসহ সব ধরনের যানবাহন থেকেই আদায় করা হচ্ছে অতিরিক্ত অর্থ। অভিযোগ রয়েছে,প্রতিদিন সকাল সন্ধ্যা হতে গভীর রাত পর্যন্ত সিটি টোলের দৈনিক চাঁদার তোলার পাশাপাশি মাসিক হিসেবেও চাঁদা আদায় করচ্ছে সিটি টোলের জামাই আবুল চাঁদাবাজ গং।

    ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন টোল প্রদানকারী পণ্যবাহী লরির চালক শাহআলম বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন পণ্য নিয়ে রাতের বেলা স্টাফ কোয়ার্টার দিয়ে ডেমরা-রামপুরা-রূপগঞ্জ সড়কে ঢুকলেই গাড়ি প্রতি ২০০ থেকে ৮০০ টাকা জোঁর করে রেখে দেয় চাঁদাবাজরা।

    এদিকে চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তখন চাঁদাবাজ জামাই আবুল এর লোকজন আমাদের গাড়িতে হামলা করে গ্লাস ভেঙে দেয় গাড়ির পণ্য ছিঁনিয়ে নেয় এবং আমাদের মারধর করে।

    বিশেষ করে বড় বড় কাঠের লরি বা ট্রাক পিকআপ এলেই টাকা দিতে হয়। এতে করে সড়কে সাধারণ জনগণের চলাচলের বিশৃঙ্খলা লেগেই থাকে। দীর্ঘ সময় ধরে যানজটে বসে থাকতে হচ্ছে যাত্রীদের।

    এভাবে চাঁদা নেওয়া যায় কি না, তা জানতে ডেমরায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি টোলের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি দৈনিক বাংলার নবকন্ঠে বলেন, ‘তিন চাকা সাদৃশ্য যেকোনো যানবাহন থেকে ১০ টাকা সিটি টোল আদায় করার অনুমতি রয়েছে। একই সঙ্গে ছোট সব প্রকার যানবাহন ও যাত্রীবাহী বাস কিংবা মালবাহী ট্রাক থেকে ৩০ টাকা টোল আদায়ের অনুমতি রয়েছে বলেই জানি।

    প্রকাশ্যে দেখা যায়, ছোট পিকআপ থেকে ৩০ টাকা, যাত্রীবাহী বাস থেকে ৬০ টাকা, বড় গাড়ি থেকে ৬০ টাকা, সিএনজি থেকে ১০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া রাতে ও দিনে বড় পণ্যবাহী পিকআপ ৩০/৫০ টাকা ও ট্রাক-লরি ও যানবাহন থেকে ২০০ থেকে ৮০০ পর্যন্ত টাকা নেওয়া হয় জানা যায়। এই টাকার একটা অংশ স্হানীয় থানা-ট্রফিক পুলিশ পায় বলে স্হানীয় ভাবে অভিযোগ রয়েছে। ডেমরা থানা স্টাফ কোয়ার্টার সিএনজি স্ট্যান্ড থেকে ও ২০০ টাকা করে দিতে হয় থানা-পুলিশকে। ট্রাফিক পুলিশকে চাঁদা দিতে হয় আলাদা করে। তা ছাড়া, স্থানীয় প্রভাবশালী নেতা আব্দুর রহমান এর নামে। যাত্রীবাহী বাস থেকে দৈনিক ১২০-১৫০ টাকা চাঁদা তুলে পুলিশকে ম্যানেজ করেন। ডেমরা টু চঁনপাড়া চলাচলকারী সিএনজি থেকে ৫০ টাকা ও নন্দীপাড়া টু স্টাফ কোয়ার্টার চলাচলকারী সিএনজি থেকে ৫০ টাকা চাঁদা আদায় করা হয়। আর ইজিবাইক নামানো বাবদ ৫ থেকে ১০ হাজার রুট ভেদে দিতে হয় প্রভাবশালীদের। আর প্রতি মাসে থানার জন্য প্রতিটি ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক, অটোরিকশা ও মিশুক বাবদ ৫০০ টাকা করে দিতে হয়।

    এমনকি এক রুটের গাড়ি অন্য রুটে ঢুকলেই দিতে হয় বাড়তি চাঁদা। এ ছাড়া স্থানীয়ভাবে লাইনম্যানরা ২০ থেকে ৩০ টাকা করে চাঁদা তুলে থাকেন।

    ডেমরায় সারুলিয়ায় আন্তজেলা ট্রাক ইউনিয়ন অফিসের নামে দূর থেকে আসা পণ্যবাহী ট্রাক-লরি থেকেও চাঁদাবাজি করছে, স্থানীয় ডেমরা বাস চালক জুয়েল বলেন, ‘চাঁদার কারণে আমরা ভাড়াও বেশি নিই। দিন শেষে আমাদের আয়ও কমে যায়।

    এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্রপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৬৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সালাহ্ উদ্দিন আহম্মেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘এভাবে চাঁদা আদায়ের ফলে রাস্তায় যানজট সারাক্ষণ লেগেই থাকে । অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের বিষয়টি দুঃখজনক। আব্দুর রহমান আমার সাথে রাজনীতি করে কিন্তু আব্দুর রহমান আমার কথা শোনে না।

    ডেমরা ট্রাফিক জোনের টিআই মো. জিয়া উদ্দিন বলেন, সিটি টোল এবং অন্যান্য যানবাহন থেকে ট্রাফিক পুলিশকে টাকা দেওয়ার বিষয়টি মিথ্যা। গভীর রাতে ট্রাফিক ডিউটি না থাকার সে সুযোগ নিয়ে চাঁদাবাজরা এসব করছে।

    ওয়ারী জোনের পুলিশের ডিসি মোঃ জিয়াউল আহসান তালুকদার বলেন, প্রায়ই আমরা চাঁদাবাজদের গ্রেপ্তার করছি ও সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা রুজু হলে তখন আমরা আদালতে পাঠাই। আমি স্থানীয় সকল সংশ্লিষ্ট থানা অফিসার ইনচার্জদের নির্দেশনা দিয়েছি চাঁদাবাজ যে হোক তাকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার জন্য।

    বাংলাদেশ সময়: ১০:৫১ অপরাহ্ণ | সোমবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৩

    dainikbanglarnabokantha.com |

    এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

    আর্কাইভ