• শিরোনাম

    চার হাজার মানুষের দুর্ভোগের সঙ্গী ৩ কিঃমিঃ মাটির রাস্তা!! (বর্ষায় হাঁটু কাঁদা! দুর্ভোগের শেষ নেই!)

    আলী হোসেন রুবেল, স্টাফ রিপোর্টার ভোলা: বৃহস্পতিবার, ১৭ আগস্ট ২০২৩

    চার হাজার মানুষের দুর্ভোগের সঙ্গী ৩ কিঃমিঃ মাটির রাস্তা!! (বর্ষায় হাঁটু কাঁদা! দুর্ভোগের শেষ নেই!)

    apps

    চার হাজার মানুষের নিত্যদিনের দুর্ভোগ সঙ্গী ৩ কিলোমিটার মাটির রাস্তা। যেখানে কিনা সাধারণ সময়েই চলাফেরা খুবই দুরুহ। এমনকি গ্রীষ্মকালীন প্রশান্তির একটু বৃষ্টি হতেই পুরো রাস্তায় কাঁদা হয়ে চলাচলের একেবারেই অনুপযোগী হয়ে পড়ে । আর বর্ষা মৌসুমের কথা বলে তো কোন লাভ নেই, বর্ষা মৌসুমে রাস্তাগুলো পানিতে তলিয়ে যায়। এবছর ও তার ব্যতিক্রম নয় রাস্তাগুলো ইতোমধ্যে পানিতে তলিয়ে গেছে এবং রাস্তায় হাঁটু পরিমাণ কাঁদা। দুর্ভোগের শেষ নেই সেখানকার বসবাসকারী বাসিন্দাদের। যদিও স্থানীয় প্রশাসন বলছে, একাধিকবার রাস্তা গুলো উপজেলার মাধ্যমে স্থানীয় সাংসদ ভোলা -১ আসনের সংসদ সদস্য তোফায়েল আহমেদের প্রজেক্টের দিয়েছি।
    বলছিলাম ভোলা সদর উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত আলীনগর ইউনিয়নের রুহিতা গ্রামের কবি সাংবাদিক নাসির আহমেদের বাড়ির দরজার তিন কিলোমিটার মাটির রাস্তার কথা। যেখানে নিয়মিত প্রায় তিন থেকে চার হাজার লোকের বসবাস। তবে দুর্ভাগ্যবশত হলেও সত্য, সরকারের ধারাবাহিকতায় এ ইউনিয়নে বিভিন্ন বিভাগে উন্নয়নের ছোঁয়া কিছুটা লাগলেও রাস্তাঘাটের উন্নয়ন তেমন একটা চোখে পড়ার মতো নয়। যদি তাই হতো তাহলে যুগের পর যুগ এই রাস্তা গুলোর এমন নাজেহাল অবস্থা থাকত না। এই ইউনিয়নে পাকা রাস্তা যাও আছে, সরকারের এমন সুসময়েও মেরামতের অভাবে অধিকাংশ রাস্তাগুলো চলাচলের অনুপযোগী বলা যায়। প্রতিনিয়ত ঘটছে কোথাও না কোথাও ঘটছে ছোটখাটো দুর্ঘটনা।

    তবে দুর্ভাগ্যবশত হলেও সত্য, যেখানে কিনা ভোলা সদর উপজেলার ১৩ টি ইউনিয়নে খুঁজে কোথাও কাঁচা রাস্তার দেখা পাওয়া না গেলেও আলীনগরের রুহিতা গ্রামে প্রায় তিন কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা রয়েছে। যা কিনা প্রতি বর্ষা আসতেই পানিতে ডুবে গিয়ে হাটু পরিমান কাঁদা হয়ে চলাচলের একেবারে অনুপযোগী হয়ে পড়ে।

    ১৬ আগস্ট বুধবার সকাল১২ ঘটিকার সময় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় পানিতে ডুবে যাওয়া রাস্তাগুলোর করুন এবং নাজেহাল অবস্থা। সংবাদ কর্মীকে দেখতেই ছুটে এসে বিভিন্ন অভিযোগ করতে শুরু করে সংবাদ কর্মীদের কাছে স্থানীয় ভুক্তভোগীরা। এমনকি কেউ কেউ খোদ বলেই ফেলে আপনারা সাংবাদিকরা এই রাস্তা নিয়ে লেখেন না কেন? আপনারা এক কলম লিখলে তো রাস্তাগুলোর এ অবস্থা থাকেনা। এছাড়াও ভুক্তভোগীরা জানায়, প্রতি বছর বর্ষার মৌসুমে এই রাস্তাগুলো পানিতে তলিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি হাঁটু পরিমাণ কাঁদা হয়ে যায়। এসময় রাস্তাগুলো দিয়ে চলাচল করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং রিস্কি হয়ে যায়। তারপরও অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে বর্ষার মৌসুমে প্রতিদিন এ-সব রাস্তা দিয়ে হোন্ডা এবং বাইসাইকেল ও রিক্সা নিয়ে চলতে হচ্ছে রুহিতা গ্রামের প্রায় তিন থেকে চার হাজার লোকের এমনটি আমাদের জানিয়েছে,স্থানীয় ভুক্তভোগী বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল কলেজের একজন প্রভাষক মোঃ হোসাইন রুবেল,সহ আল-আমিন রারী লিটন রারী,সাইফুল,রাকিব বকশি, নাজিমউদ্দীন বকশি,মাওলানা বায়েজিদ, ও ফখরুল বকশিসহ স্থানীয় বাসিন্দা ভুক্তভোগী অনেকে।

    দক্ষিণ রুহিতা এ রহমানিয়া দাখিল মাদ্রাসার একজন সিনিয়র শিক্ষক মাকসুদুর রহমান বলেন,সবচেয়ে বড়ো পরিতাপের বিষয় হল, ৭০ দশকের অন্যতম খ্যাতনামা কবি, বাংলা একাডেমি পুরস্কার প্রাপ্ত সাহিত্যিক সাংবাদিক,কলামিস্ট,ও সাবেক পরিচালক (বার্তা) বাংলাদেশ টেলিভিশন নাসির আহমেদ এর বাড়ির দরজার রাস্তা হওয়া সত্বেও দীর্ঘ প্রায় পঞ্চাশ বছর ধরে একে-ত কাঁচা তার পর আবার অবহেলিত। যা কিনা বর্ষার মৌসুমে চলাচলের একেবারেই অনুপযোগী। এটা সত্যি মেনে নিতে খুব কষ্ট হচ্ছে।

    নাসিম আহমেদের ছোট ভাই ভোলা বিএডিসির একজন কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন,আমাদের বাড়ির সামনে প্রায় তিন কিলো রাস্তা কাঁচা। বর্ষা আসতেই রাস্তাগুলো পানিতে ডুবে গিয়ে হাটু পরিমাণ কাঁদা হয়ে যায়। আমাদের দুর্ভোগের জন্য শেষ নেই। নাসিম ভাই প্রায় সময় সরকারি গাড়ি নিয়ে বাড়ি আসে। এতে করে বর্ষার মৌসুমে যখনই তিনি গাড়ি বাড়ি এসেছেন তখনই তিনি মহা বিপদে পড়েছেন। এমনকি গাড়ি মেইন রাস্তায় রেখে জুতা হাতে নিয়ে পায়ে হেঁটে বাড়ি যেতে হয়েছে।

    এব্যাপারে নাসিম আহমেদের কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি ঘটনার সত্যতা প্রকাশ করে বলেন, রাস্তাটি এলজিডির আওতায় হলে আমি এলজিআরডি মন্ত্রীকে দিয়ে টেন্ডার করে দ্রুত পিজ করার ব্যবস্থা করতাম। রাস্তাটি ইউনিয়নের আওতায় হওয়ায় আমি কয়েকবার স্থানীয় চেয়ারম্যান বশির আহাম্মদকে বলছি,তোফায়েল ভাইয়ের সাথে কথা বলে রাস্তাটিকে উপজেলা তার প্রজেক্টের ভিতরে দিয়ে যে করে হোক পিচের রাস্তা করে দেয়ার জন্য। পড়ে আবার আমি বশিরের কাছে রাস্তার বিষয় খোঁজ নিলে সে আমাকে জানায়, রাস্তাটি একাধিক বার নেতার প্রজেক্টে দিয়েছি। হওয়ার কথা শুনেছি কিন্তু আদৌ হবে কি-না,হলেও কবে নাগাদ টেন্ডার হবে তা জানিনা।

    এই বিষয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান বশির আহাম্মদ বলেন,আমি তৃতীয় বারের মতো চেয়ারম্যান হয়ে এলাকায় মোটামুটি অনেক কাজ করলেও রুহিতা গ্রামের সাংবাদিক নাসির ভাইর বাড়ি অর্থাৎ বকশি বাড়ির দরজা সহ প্রায় তিন থেকে চার কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা রয়েছে যা, বর্ষার মৌসুমে খুবই নাজেহাল অবস্থা। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো আমি একাধিক বার রাস্তাগুলোকে উপজেলায় নেতার প্রজেক্টে দিলেও এখনো টেন্ডার হয়নি। আদৌ হবে কিনা জানি। আমি উপজেলায় খোঁজ নিলে তারা হবে বলে আশ্বাস দেয়। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করে যাচ্ছি তবে হাল ছাড়িনি। আপনাদের এ প্রতিবেদনটির মাধ্যমে প্রিয় নেতার কাছে জোর দাবি অন্তত ভোলার খ্যাতনামা কবি সাংবাদিক নাসির ভাইর বাড়ির কথা বিবেচনা করে যে করেই হোক রাস্তাগুলোকে অতি দ্রুত টেন্ডারের ব্যবস্থা করা হয়।

    এ ব্যাপারে উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার মোঃ জাফর বলেন,রাস্তাগুলোর ব্যাপারে স্থানীয় চেয়ারম্যান বশির ভাই আমাকে জানালে আমি থানা ইঞ্জিনিয়ার কে নিয়ে পুরো রাস্তা চেইন মেপে নেতা তোফায়েল আহমেদ এর প্রজেক্টে দিয়ে দিয়েছি। প্রজেক্ট পাস হয় আসলে আশা করি রাস্তাগুলো অচিরেই হয়ে যাবে।

    বাংলাদেশ সময়: ৯:৪৩ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৭ আগস্ট ২০২৩

    dainikbanglarnabokantha.com |

    এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

    আর্কাইভ