
মহসিন সোহাগ : | সোমবার, ১৭ জুলাই ২০২৩ | প্রিন্ট
খুলনায় তারুণ্যের সমাবেশস্থলে বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে নেতা-কর্মীরা জড়ো হয়েছেন। ‘ঝামেলা এড়াতে’ সমাবেশের আগের রাতেই সমাবেশস্থলে হাজির হয়েছেন অনেকে। গতকাল রোববার রাতে উপস্থিত নেতা-কর্মীরা সমাবেশস্থলের রাস্তা ও ফুটপাতে প্লাস্টিকের বস্তা-পাটি পেতে ঘুমিয়েছেন। সকালেও অনেককে সেখানে ঘুমিয়ে থাকতে দেখা গেছে।
সমাবেশে আসা নেতা-কর্মীরা আজ সোমবার বলেন, আগের সময়গুলোয় তাঁদের সমাবেশে আসার অভিজ্ঞতা সুখকর নয়। গত অক্টোবরে খুলনায় বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশে যোগ দিতে তাঁদের নানা বাধার মুখে পড়তে হয়েছিল। সরকারদলীয় নেতা-কর্মীদের বাধার পাশাপাশি ছিল পরিবহন ধর্মঘট। এবার সমাবেশস্থলে পৌঁছাতে যেন বাধার মুখে না পড়া লাগে, সে জন্য আগেভাগে এসেছেন তাঁরা।
খুলনা নগরের প্রাণকেন্দ্র ডাকবাংলো মোড়ের সোনালী ব্যাংক চত্বরে আজ এই ‘তারুণ্যের সমাবেশ’ করছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল। চট্টগ্রাম, বগুড়া, বরিশাল ও সিলেটে সমাবেশ শেষে খুলনায় পঞ্চম সমাবেশ হতে যাচ্ছে। এরপর রাজধানী ঢাকায় সমাবেশের মাধ্যমে এ কর্মসূচি শেষ হবে।
এ সমাবেশে প্রধান অতিথি থাকবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় নেতারাও সমাবেশে বক্তব্য দেবেন। নির্দলীয়–নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন নির্বাচনসহ বিভিন্ন দাবিতে তরুণদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে ‘তারুণ্যের সমাবেশ’ করা হচ্ছে বলে তিন সংগঠনের দাবি।
আজ সকাল সাতটার দিকে সমাবেশস্থলে গিয়ে দেখা যায়, কেউ ঘুমিয়ে আছেন, কেউ সেখানে বসে নাশতা সারছেন, কেউ ব্যস্ত ছবি ও সেলফি তোলায়। মঞ্চ প্রস্তুত শেষ হয়েছে। মঞ্চের সামনে থাকা চেয়ারে কেউ কেউ বসে আছেন। মঞ্চ থেকে কিছুটা দূরে বাঁশের ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে। মঞ্চ ও আশপাশের এলাকায় অসংখ্য প্রচার মাইক টাঙানো হয়েছে। বাজানো হচ্ছে দেশাত্মবোধক গান। সমাবেশে আসা নেতা-কর্মীদের কাছে ধানের শীষের ধাতব ব্যাজসহ নানা পদের ব্যাজ ও ব্যান্ড বিক্রি করছেন কয়েকজন বিক্রেতা। নেতা-কর্মীরা আগ্রহ নিয়ে সেগুলো দেখছেন, কিনছেন।
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার ইউনিয়ন শ্রমিক দলের নেতা মো. তরিকুল ইসলামসহ ১৫ থেকে ২০ জন মঞ্চের সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছিলেন। তিনি বলেন, তাঁরা আগেও খুলনার সমাবেশে এসেছেন। কালীগঞ্জ থেকে বাস ও ট্রেনে করে এক হাজারের মতো নেতা-কর্মী সমাবেশে আসার প্রস্তুতি নিয়েছেন। গতকাল রাতে অনেকেই চলে এসেছেন।
সমাবেশে আসা বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার শিবপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মো. আলিমুন শরীফ বলছিলেন, গতকাল রাতে চিতলমারী উপজেলার সাতটা ইউনিয়ন থেকে মাহেন্দ্রতে করে তাঁরা ১২০ জন এসেছেন। উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মমিনুল হক বিশ্বাসের তত্ত্বাবধানে এসেছেন তাঁরা। রাতে সমাবেশস্থলে ছিলেন। আলিমুন বলেন, ‘বাধাবিঘ্ন হবে, এটা জানা কথা। তাই আগে আসছি। আসার সময় আমরা বাধায় পড়িনি। তবে সকালে আরও লোকজন আসার কথা। এলাকা থেকে খবর পাচ্ছি, সকালে সমাবেশে আসতে বাধা দেওয়া হচ্ছে।’
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের হোগলাবুনিয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সুলতান মাহমুদও আগের খারাপ অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে আগেভাগে সমাবেশস্থলে এসেছেন।
চিতলমারী থেকে সমাবেশে আসা কলাতলা ইউনিয়ন যুবদলের নেতা মো. আসাদ শেখ সমাবেশমঞ্চের কিছুটা দূরে রাখা চেয়ারে বসে কয়েকজনের সঙ্গে গল্প করছিলেন। তাঁদের দলের অনেকে তখন ঘুমিয়ে আছেন। আসাদ শেখ বলেন, ‘রাত আটটার দিকে চিতলমারী থেকে বের হয়েছিলাম। আমরা এমন সময় বের হয়েছি, যাতে বাধা দেওয়ার সুযোগ না থাকে। আগের প্রোগ্রামগুলো থেকে আমাদের ভালো শিক্ষা হয়েছে। এ জন্য এখন প্রোগ্রামগুলোয় আগেভাগে পৌঁছানোর চেষ্টা থাকে। রাতে কয়েল জ্বালিয়ে ৭০ জনের মতো এখানে ঘুমিয়েছি। এখনো অনেকে ঘুমাচ্ছেন। অনেকে আবার আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে গেছেন।
Posted ৮:৩৮ অপরাহ্ণ | সোমবার, ১৭ জুলাই ২০২৩
dainikbanglarnabokantha.com | Romazzal Hossain Robel
এ বিভাগের আরও খবর
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।