• শিরোনাম

    তিস্তার ধু-ধু বালুচর এখন সবুজের বিপ্লব

    বাসুদেব রায়, ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি: বুধবার, ০১ মার্চ ২০২৩

    তিস্তার ধু-ধু বালুচর এখন সবুজের বিপ্লব

    apps

    তিস্তার ধু-ধু বালুচর। এই বালুর মধ্যেই অক্লান্ত পরিশ্রম করে নানা ধরনের সবজি উৎপাদন করছেন চাষিরা। ফলে এক সময়ের পরিত্যাক্ত জমি এখন কৃষকদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে উঠেছে। নদীর জলরাশির বুকচিরে জেগে ওঠা বালি যেন কৃষকদের কাছে সাদা সোনায় পরিণত হয়েছে। বেশ কিছু বছর ধরে নীলফামারীর জেলার ডিমলা উপজেলার তিস্তা বেস্টিত খগা খড়িবাড়ী, টেপা খড়িবাড়ী, ঝুনাগাছ চাপানী, খালিশা চাপানী পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের প্রায় ৩ হাজার হেক্টর ধু-ধু বালুচরে এখন সবুজের বিপ্লব। চরের জমিতে এখন চাষ হচ্ছে- আলু, মিষ্টি কুমড়া, মরিচ, পেঁয়াজ, রসুন, স্কোয়াস, ওলকপি, গম, বাদম, ভুট্টাসহ নানা ধরনের ফসল। তপ্ত বালুচরে সবজির আবাদ করে তাই কৃষকরা দেখছেন অর্থনৈতিক মুক্তির পথ।

    উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, তিস্তার চরসহ উপজেলায় ৩ হাজার হেক্টর চরের জমি এখন আবাদ যোগ্য হয়েছে। এর মধ্যে চলতি মৌসুমে ৩ হাজার হেক্টর চরের জমিতে বিভিন্ন জাতের ফসল চাষাবাদ এখন মধ্যম সময়ে রয়েছে।

    সরেজমিনে ডিমলা উপজেলার তিস্তা ব্রীজ এলাকা সহ বিভিন্ন চর ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি চরেই কৃষকরা বিভিন্ন ফসল উৎপাদনে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কাক ডাকা ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চরে কাজ করেন কৃষক-কৃষানী। তিস্তা চরের বালু মাটি যেন সাদা সোনায় পরিনত হয়েছে তাদের জন্য। বর্তমানে নদীতে পানি কমে যাওয়ায় নদী ভিত্তিক জীবিকা নির্বাহকারীরা পলি ও দোআঁশ মাটিতে চাষাবাদ করে নিজেদের অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী করে তুলছেন।

    উপজেলার টেপা খড়িবাড়ী ইউনিয়নের চর খড়িবাড়ী, পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের ছাতনাই কলোনী, ঝাড়সিংহেশ্বর, ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের বাইশপুকুরসহ বিভিন্ন চরে গিয়ে দেখা গেছে, খরস্রোতা তিস্তায় জেগে ওঠা বালু চরের পলি ও দোআঁশ মাটিতে চাষ হচ্ছে আলু, ভুট্টা, পেঁয়াজ, রসুন, মরিচ, মিষ্টি কুমড়াসহ নানান জাতের ফসল। ফসল পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।

    তিস্তা সেতু এলাকায় চরের খেত পরিচর্যা করা কৃষক দরবেশ আলী, চরে আলু, পিয়াজ ভুট্টা, মরিচ, লাউ চাষ করেছি। ফলনও ভালো হয়েছে। আশা করছি দামও ভালো পাবো।

    চর খড়িবাড়ী এলাকার চাষী হুরমুজ আলী, সেকেন্দার আলী, বাদশা মিয়াজানান গত বছর মিষ্টি কুমড়ার দাম বেশি পাইনি। এবার আশা করছি ভালো দাম পাওয়ার। আবহাওয়া ভালো থাকলে ফলন ভালো হবে। এই তিস্তা চরে আবাদ করে আমাদের নদীপাড়ের মানুষের সংসার চলে। চাষাবাদের জন্য তেমন কোনো জমি নেই আমাদের। তাই প্রতিবছর নদীতে চর জাগলে চাষাবাদ করি।’

    উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সেকেন্দার আলী জানান, ডিমলা উপজেলার চরাঞ্চলের প্রায় ৩ হাজার হেক্টর জমিতে ভুট্টা, পেয়াজ, রসূন সহ নানা জাতের ফসল চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চরের কৃষকদের কৃষি বিভাগ থেকে সার্বিক সহযোগিতাসহ কৃষককে বিভিন্ন ধরনের সার দেওয়া হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ফলন ভালো হবে। তিস্তার নদীর জেগে উঠা চরকে ঘিরে নদী পাড়ের মানুষের ভাগ্যের দুয়ার খুলেছে। চলতি মৌসুমে তারা সবজির বাম্পার ফলনের পাশাপাশি ও দাম ভালো পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

    তিনি আরও জানান, দিনদিন চরে চাষাবাদ যোগ্য জমির পরিমাণ বাড়ছে। ফলে অনেক কৃষক বালুচরে সবজি উৎপাদন করে নিজেদের সাবলম্বী করে তুলছেন।

    বাংলাদেশ সময়: ২:৪৯ অপরাহ্ণ | বুধবার, ০১ মার্চ ২০২৩

    dainikbanglarnabokantha.com |

    এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

    আর্কাইভ