শুক্রবার ২১ মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৭ চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

>>

ডেমরা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দুর্নীতিতে অনিয়মের অন্যতম সাব রেজিস্ট্রার কাউসার খান।

শরীফ আহমেদ প্রতিবেদনঃ   |   শুক্রবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩   |   প্রিন্ট

ডেমরা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দুর্নীতিতে অনিয়মের অন্যতম সাব রেজিস্ট্রার কাউসার খান।

সম্প্রতি ডেমরা সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে ঘুষ ছাড়া কাজ হয় না। জমির নিবন্ধন, নামজারি, জাল দলিলে জমি দখলসহ নানা ঘটনায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন জমি রেজিস্টি করতে আসা ভুক্তঁভোগীরা। পিয়নরা জমির দলিল আটকে রেখে ভুক্তঁভোগীদের কাছে চাপের মুখে ঘুষ দাবি করে সাব-রেজিস্ট্রার কাউসার খানের এর পিওন ও কেরানী সহ ঘুষ নেওয়া নিয়মিত রুটিনে পরিণত হয়েছে। ঘুষ আদায়ের কৌশল হিসেবে সাব-রেজিস্ট্রারের রুটিন মাফিক কাজ নকলনবিশ, কেরানী ও পিওনদের দিয়ে করানো হচ্ছে। এই সুযোগে নকলনবিশ,কেরানী ও পিওন লক্ষ লক্ষ টাকার মালিক হচ্ছে। বাংলাদেশ সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধন ম্যানুয়াল-২০১৪ নিয়ম মানছেন না সাব-রেজিস্ট্রার কাউসার খান। সাব রেজিস্টার নিবন্ধন ম্যানুয়াল অনুযায়ী নিজের কাজ নকলনবিশ, কেরানী ও পিওনদের দিয়ে করাচ্ছে। দলিল চেক করার কাজ সাব-রেজিস্ট্রার করার নিয়ম থাকলেও তা মানছেন না ডেমরা সাব রেজিস্টার কাউসার খান। অনুসন্ধানে সরেজমিন দেখা যায়,ডেমরা সাব-রেজিস্টার কাউসার খান প্রতিটি দলিল সম্পাদনের ক্ষেত্রে সরকারে নির্ধারিত ফি চেয়ে অতিরিক্ত লাখ টাকা প্রতি ৫০০ টাকা করে সাব-রেজিস্ট্রারের নামে টাকা নেওয়া হয়।

এই সময়ে একাধিক দলিল লেখকের বক্তব্যে একই তথ্য পাওয়া গেছে। সরেজমিনে কিছু ভুক্তঁভোগী সাংবাদিকদের তাদের নানা সমস্যার কথা বললেন। বর্তমানে ডেমরা সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের দুর্নীতি ও অনিয়মের সিন্ডিকেটের পরিনত হয়েছে। তারা বলেন,আমরা স্হানীয় জমি কেনা বা বিক্রি জন্য ডেমরা সাব রেজিস্ট্রি অফিসে গেলে হয়রানির শিকার হচ্ছি। বর্তমানে ডেমরা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ঘুষ ছাড়া কাজ হয় নাহ সে কথা ডেমরা সাব রেজিস্ট্রি অফিসে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রকাশ্যে জানিয়ে দেন। এই সময় সাংবাদিক দেখে এক জমি গ্রাহক বলেন,আমরা জমির ক্রেতা বিক্রেতা ও বাড়ি মর্গেজ করতে আসা ভুক্তঁঁভোগী…যেই হইনা কেন!!আমরা জনসাধারণ এদের কাছে জিম্মিতে পরিনত হয়েছি। ভুক্তঁভোগী জনসাধারণের দাবি, নামজারি, খারিজ, জমির শ্রেণী পরিবর্তনসহ নানা কাজে জনগণের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে দুর্নীতি করে বাড়ি গাড়ি মালিক হচ্ছেন। ডেমরা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ। অসাদু কর্মকর্তারা কর্মকর্তা কর্মচারীরা সিন্ডিকেটের সাথে হাত মিলিয়ে সরকারি নিয়মনীতি দিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে জমির শ্রেণি পরিবর্তন দেখিয়ে, সাব-কবলা দলিলের পরিবর্তে হেবা দলিল, এওয়াজ বদল , অসিয়ত নামা, ঘোষণাপত্র, আমোক্তার নামা দলিল রেজিষ্ট্রি করে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। গোপন সূত্রে জানা যায়,নারায়ণগঞ্জ আড়াইহাজার সাব রেজিস্ট্রি অফিস হতে ডেমরা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে কাউসার খান যোগদানের পর থেকে এ দালাল সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাধ্যতামূলকভাবে প্রতি দলিল থেকে আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার টাকা সেরেস্তার নামে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে। এ টাকা দলিল লেখক সমিতি ও সাড়া বছরে বিভিন্ন জাতীয় দিবসের চাঁদা ছাড়া বাকি টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগ ভাটোয়ারা করে আত্মসাৎ করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য বেশ কয়েক মাস আগে দলিল সম্পাদনের নামে ঘুষ দাবির অভিযোগে ঢাকার ডেমরা সাব-রেজিস্ট্রারের অফিসে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এনফোর্সমেন্ট ইউনিট। তৎকালিন দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ভূঁইয়া ও মোহাম্মদ নুর আলম সিদ্দিকীর সমন্বয়ে গঠিত একটি এনফোর্সমেন্ট টিম এ অভিযান পরিচালনা করেন। দুর্নীতিবাজ সাব রেজিস্ট্রার কাউসার খানে ডেমরা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দুদকের অভিযানকালে ছদ্মবেশে কয়েকজন দলিল লেখককে জিজ্ঞাসাবাদ করেন দুদক কর্মকর্তারা। এতে দুদক জানতে পারেন, প্রতিটি দলিল সম্পাদনের ক্ষেত্রে সরকার নির্ধারিত ফির চেয়ে অতিরিক্ত লাখ প্রতি ৫০০ টাকা সাব-রেজিস্ট্রারের নামে সংগ্রহ করা হয়। দুদকের কয়েকবার অভিযানের পরও ডেমরা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের দুর্নীতিবাজ সাব রেজিস্টার কাউসার খান বহাল তরবিয়তে এখনো দুর্নীতি করে যাচ্ছেন।

Facebook Comments Box

Posted ১০:৫০ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩

dainikbanglarnabokantha.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

সম্পাদক

রুমাজ্জল হোসেন রুবেল

বাণিজ্যিক কার্যালয় :

১৪, পুরানা পল্টন, দারুস সালাম আর্কেড, ১১ম তলা, রুম নং-১১-এ, ঢাকা-১০০০।

ফোন: ০১৭১২৮৪৫১৭৬, ০১৬১২-৮৪৫১৮৬, ০২ ৪১০৫০৫৯৮

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

design and development by : webnewsdesign.com

nilüfer escort coin master free spins