• শিরোনাম

    স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী সহ এলাকাবাসী

     মোঃ ফারুক হোসেন,ধামরাই প্রতিনিধি শুক্রবার, ২১ জানুয়ারি ২০২২

    স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী সহ এলাকাবাসী

    apps

    ঢাকার ধামরাইয়ে সুতিপাড়া ইউনিয়নের বেলিশ্বর মোহিনী মোহন উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে খোলা আকাশের নিচে কয়লা রেখে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে মাহাবুব গ্রুপের কেবিসি এগ্রো প্রডাক্ট প্রাইভেট লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান।এতে স্বাস্থ্য ঝুকিতে রয়েছে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীসহ এলাকাবাসির লোকজন। খোলা মাঠে কয়লা রেখে বিক্রির কারণে কয়লার ধুলা উড়ে স্কুলের কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের শ্বাস প্রশ্বাসের সাথে দেহে প্রবেশ করে শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হইয়ে পড়ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে আছে এলাকার জনগণ এবং সেই সাথে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। এই নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা কয়লার ব্যবসার কারণে ব্যাপক অসুবিধা পোহাতে হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (১৯জানুয়ারি) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তার পাশে খোলা আকাশে নিচে কয়লার স্তুপ করে ধামরাই উপজেলার বিভিন্ন ইটভাটাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করছে কয়লা। ফলে রাস্তা দিয়ে মানুষ পাঁয়ে হেঁটে চলা করতে পারে না। কারণ কয়লা উড়ে এসে গাঁ ভরে যায়। এতে পরিস্কার কাপড় নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়া সকালে কয়লার গাড়ি রাখার কারণে বিভিন্ন পেশার মানুষ অফিসে যাওয়ার সময় রাস্তায় যানযট লেগে যায়,ফলে লোকজন সঠিক সময়ে তাদের অফিসে আদালতে পৌঁছাতে পারে না। এলাকাবাসী জানায়, কেবিসি কারখানাটিকে পূর্বে র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেড সারওয়ার আলম বিভিন্ন অনিয়ম ও শুকরের চর্বি ব্যবহার করে মাছ, হাস মুরগির খাবার ও তৈল তৈরির অপরাধে ভ্রাম্যমাণ অভিযান পরিচালনা করে ৭৫ লাখ টাকা জরিমানা করেছিলেন। তারপরও তাদের অনিয়মের শেষ নেই। স্থানীরা জোর দাবি জানিয়ে বলেন, র‌্যাব ৭৫ লক্ষ টাকা কারখানাটির অনিয়মের কারণে জরিমানা করার পরও কারখানাটি আরো বেশি বেপরোয়া হয়ে পড়ে। এলাকার মানুষের কোন সমস্যা হচ্ছে কি না সেদিকে খেয়াল না করে তাদের ব্যবসায়ের সুযোগ সুবিধার কথাই বেশি বিবেচ্য। তারা আরো বলে, এই কয়লার কারণে মোহীনি মোহন উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা এবং ছোট শিশু, বয়স্ক লোকজনসহ সবাই বিভিন্ন রোগের স্বীকার হচ্ছে। শুধু তাই নয়, শত শত টন কয়লা আমদানি করে এনে ধামরাইয়ের বিভিন্ন ইটভাটায় তা বিক্রি করা হচ্ছে। এতে যেমন পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে তেমনি মানুষের জান মালের এবং রাস্তার ব্যাপক ক্ষতি করছে। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, এ কয়লায় আমাদের রাস্তায় যাতায়াতে সমস্যা হচ্ছে। ছোট বাচ্চাদের হাচি-কাশিসহ নানাবিধ ঠান্ডাজনিত রোগে ভোগছে। এ বিষয়ে অধির মন্ডল নামে এক পথচারি বলেন, আপনারা একটু দাড়িঁয়ে থেকে দেখেন, শরীরে নীমিশের মধ্যে কয়লার গুড়ো দিয়ে ভরে যাবে। তাহলে বুঝেন কয়লার কারণে আমাদের অবস্থা কি। এই রাস্তা দিয়ে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা কিভাবে যাতায়েত করবে। এ ব্যাপারে সূতিপাড়া ইউনিয়ননের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম রাজা বলেন,কেবিসি কারখানার কয়লা এনে বিভিন্ন ইটের ভাটায় বিক্রি করছে। এ বিষয়ে কারখানার কৃর্তৃপক্ষ আমাকে কোন কিছু জানায়নি।আমার ইউনিয়নে পরিবেশ দূষিত করে ব্যবসা করছে এটি খুবই অপরাধমূলক কাজ। আমি এ বিষয়টা নিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলবো। এ বিষয়ে বেলিশ্বর মোহিনী মোহন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আলী হোসেন বলেন, স্কুলের পাশে খোলা আকাশের নিচে কয়লা রেখে বিক্রি করার কারণে আমরা স্কুলের মাঠে থাকতে পারি না। কারণ কয়লার গুড়া এসে শরীর ভরে যায়। স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা হাচি-কাশিসহ নানাবিধ ঠাণ্ডাজনিত রোগসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।এই বিষয়ে আমি উপজেলা নির্বাহী বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিব। এই ব্যাপারে কেবিসি গ্রুপের এক কর্মকর্তা এডমিন সুবোধ চন্দ্র মন্ডল এর কাছে জানতে চাইলে তিনি দৈনিক বাংলার নবকন্ঠ কে বলেন,এটি আমাদের কোম্পানির আর একটি প্রতিষ্ঠান সৈনিক ট্রেডার্স।তবে এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারবো না। এ ব্যাপারে ধামরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকি বলেন, কেবিসি এগ্রো প্রডাক্ট প্রাইভেট লিমিটেড কারখানাটি পরিবেশ দূষণ করে কয়লার ব্যবসা করছে তা আমি জানতে পেরেছি।এখন কারখানা কর্তৃপক্ষ আইন মেনে ব্যবসা করছে কি না সে বিষয়ে তদন্ত করে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    বাংলাদেশ সময়: ১০:২৪ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ২১ জানুয়ারি ২০২২

    dainikbanglarnabokantha.com |

    এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

    আর্কাইভ