• শিরোনাম

    সিরাজগঞ্জে আড়াইশ’ বছরের ঐতিহ্যবাহী দইমেলা অনুষ্ঠিত

    জেলা প্রতিনিধি সিরাজগঞ্জ বৃহস্পতিবার, ২৬ জানুয়ারি ২০২৩

    সিরাজগঞ্জে আড়াইশ’ বছরের ঐতিহ্যবাহী দইমেলা অনুষ্ঠিত

    apps

    সিরাজগঞ্জের তাড়াশে প্রায় আড়াইশ’ বছরের ঐতিহ্যবাহী দইমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিদ্যাদেবী সরস্বতী পূজা উপলক্ষে এ দই মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
    বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারী) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তাড়াশ বাজার ও সিরাজগঞ্জ শহরের মুজিব সড়কে এ দইমেলা অনুষ্ঠিত হয়। সাজ সাজ রব পড়ে যাওয়া মেলায় ক্ষীরসা দই, শাহী দই, টক দই, শ্রীপুরী দইসহ বাহারি নাম ও স্বাদের দই কিনতে ভিড় করেন বিভিন্ন স্থানের ক্রেতারা। এ মেলায় বাহারি আকার ও স্বাদের দইয়ের পসরা সাজিয়ে বসেন দই বিক্রেতারা। একই দিনে সিরাজগঞ্জ শহরের মুজিব সড়কে দইমেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় যুগ যুগ ধরে অনুষ্ঠিত হয়ে আসা এই মেলা আগামী দিনে আরও প্রসারিত হবে এমনটাই প্রত্যাশা দই প্রেমীদের।
    জানা যায়, চলনবিল অধ্যুষিত সিরাজগঞ্জের তাড়াশের তৎকালীন জমিদার পরম বৈঞ্চব বনোয়ারী লাল রায় বাহাদুর প্রথম দই মেলার প্রচলন করেছিলেন। এলাকায় জনশ্রতি আছে জমিদার রাজা রায় বাহাদুর নিজেও দই ও মিষ্টান্ন পছন্দ করতেন। তাই জমিদার বাড়িতে আসা অতিথিদের আপ্যায়নে এ অঞ্চলে ঘোষদের তৈরি দই পরিবেশন করতেন। আর সে থেকেই জমিদার বাড়ির সম্মুখে রশিক রায় মন্দিরের মাঠে স্বরস্বতী পূজা উপলক্ষে দিনব্যাপী দই মেলার প্রচলন শুরু করেন। সে থেকে প্রতি বছর শীত মৌসুমের মাঘ মাসে সরস্বতী পূজার দিন শ্রী পঞ্চমী তিথিতে দই মেলার শুরু হয়।

    সেই ধারাবাহিকতায় সিরাজগঞ্জ শহরেও বসে দইয়ের মেলা।
    মেলায় দই নিয়ে আসা এনায়েতপুরের রনি মিষ্টান্ন ভান্ডারের রনজিত ঘোষ বলেন, আজ ১০ মণ দই নিয়ে এসেছি। দইয়ের চাহিদা থাকায় দুপুরের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে। তবে দুধের দাম, জ্বালানি, শ্রমিক খরচ, দই পাত্রের মূল্য বৃদ্ধির কারণে দইয়ের দামও বেড়েছে।

    বেলকুচি উপজেলার রাজাপুরের রনজিত ঘোষ বলেন, জেলার রাজাপুরের দইয়ের একটা সুনাম রয়েছে। তাই আমাদের দইয়ের চাহিদা বেশি। মেলা এক দিনব্যাপী হওয়ায় কোনো ঘোষের দই অবিক্রিত থাকে না।’

    রায়গঞ্জের চান্দাইকোনা থেকে আসা দই বিক্রেতা দিলীপ ঘোষ জানান, বাপ-দাদার আমল থেকেই তিনি দই নিয়ে মেলায় আসেন। প্রতিবছর ১০ থেকে ১২ মণ দই বিক্রি করেন তিনি।

    দই কিনতে আসা অমল সাহা বলেন, ‘প্রতি বছর সকালে এই মেলা থেকে দই কিনি। স্বরস্বতি পূজা উপলক্ষে বাড়িতে অনেক অতিথি এসেছে। তাদের আপ্যায়নের জন্য দই কিনছি।’

    দই কিনতে আসা সঞ্জয় সাহা বলেন, ‘গতকাল বোন ও জামাইসহ অনেক আত্মীয় স্বজন এসেছে। এখানকার দই খুব সুস্বাদু। প্রতি বছর ১০ থেকে ১২ কেজি দই কিনে থাকি। তবে এবার একটু দাম বেশি।’

    সিরাজগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সন্তোষ কুমার কানু বলেন, ‘শীত মৌসুমের মাঘ মাসে শ্রী পঞ্চমী তিথিতে সরস্বতী পূজা উপলক্ষে এ দই মেলা বসে থাকে। সিরাজগঞ্জ ও তাড়াশ উপজেলার এই মেলা প্রায় আড়াইশো বছরের ঐতিহ্য।

    বাংলাদেশ সময়: ৮:৩৯ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৬ জানুয়ারি ২০২৩

    dainikbanglarnabokantha.com |

    এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

    আর্কাইভ