• শিরোনাম

    শরীয়তপুরে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে নিয়ে এস এস সি পরীক্ষার্থীকে ধর্ষণ, ভিডিও ভাইরাল, লেখা পড়া বন্ধ,অভিযুক্তরা পলাতক।

    মিজানুর রহমান মোস্তফা, শরীয়তপুর প্রতিনিধি: রবিবার, ১৯ জুন ২০২২

    শরীয়তপুরে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে নিয়ে এস এস সি পরীক্ষার্থীকে ধর্ষণ, ভিডিও ভাইরাল, লেখা পড়া বন্ধ,অভিযুক্তরা পলাতক।

    apps

    শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার মহিষার ইউনিয়নের এক স্কুলছাত্রী কিশোরী (১৫) কে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অপর দুই বন্ধু ভিডিও কওে । ওই ছাত্রীক্ েবিষয়টি কাউকে না বলার জন্য হুমকি দেয় তারা । ঘটনার তিন মাস পর গত কয়েক দিন আগে সেই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইস বুকে ভাইরাল কওে দেয়। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর মেয়েটি গিয়ে থানায় মামলা কওে । এতে লোকলজ্জায় স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে ওই কিশোরীর।
    ভেদরগঞ্জ থানার উপ পরিদর্ষক রাজীব কুমার, সাজনপুর ইসলামীয় উচ্চবিদ্যালয় সুত্রে জানা যায়, গত ১৫ মার্চ ২০২২ সালের এস এস সি পরীক্ষার্থী কিশোরী ভেদরগঞ্জ উপজেলার সাজন পুর ইসলামীয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে যায়। স্কুল থেকে বাড়ী ফেরার পথে তাকে তার সহপাঠী অর্পন দাস, দুর্জয় দাস, মুবদি সরদার জন্মদিনের অনুষ্ঠানের কথা বলে সাজনপুর বাজার থেকে ওই স্কুলছাত্রীকে অর্পণ দাসের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে জন্মদিন অনুষ্ঠানের ফাঁকে ওই কিশোরীকে একটি রুমে নিয়ে যায়। একপর্যায়ে দুর্জয় ও মুবদির সহযোগিতায় ওই মেয়েটিকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে অর্পণ দাস। তাদের ওইসব কর্মকান্ড আবার মুঠোফোনে ধারন করে সহযোগীতাকারী দুই বন্ধু দুর্জয় ও মুবদি সরদার। ঘটনার পর থেকেই ওই স্কুলছাত্রীকে আবারও কুপস্তাব দিতে থাকে দুর্জয় ও মুবদি। তবে ওই কিশোরী তাদের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সেইদিনের ধারনকৃত ভিডিও ক্লিপটি গত ১৫ জুন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করে দেয় তারা। এ ঘটনার পর থেকে কিশোরীর মেয়ে টির স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। বিষয়টি জানা জানি হলে কিশোরী মেয়েটি বাদী হয়ে ভেদরগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ও পর্নোগ্রাফি আইনে একটি মামলা দায়ের করে। তবে মামলা হলেও এখনো আসামীদের গ্রেফতার করতে পারেনি ভেদরগঞ্জ থানা পুলিশ। আসামীরা প্রভাবশালী হওয়ায় উল্ট মামলা প্রত্যাহারের জন্য হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ ওই কিশোরীর পরিবারের।
    আসামীরা হলেন, ভেদরগঞ্জ উপজেলার মহিষার ইউনিয়নের সাজনপুর দাসপাড়া গ্রামের অশিম দাসের ছেলে অর্পণ দাস (১৯), একই এলাকার কোমল দাসের ছেলে দুর্জয় দাস(১৯), দক্ষিণ মহিষার গ্রামের মোক্তার সরদারের ছেলে মুবদি সরদার(১৮)। তারা সকলেই সাজনপুর ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং ১ ও ৩নং আসামীরা ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী।

    রোববার (১৯জুন) ধর্ষণের শিকার ওই কিশোরীর বাড়িতে গেলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, মামলার আসামীরা তার সাথে একই স্কুলে পড়ালেখা করে। সহপাঠি হওয়ায় জন্মদিনের অনুষ্ঠান যেতে রাজি হই। কিন্তু ওরা আমাকে নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে ও সেই ভিডিও ধারন করেছে। পরবর্তীতে আমাকে ওই ভিডিও দেখিয়ে ব্যাবহার করার চেষ্টা করছে। আমি রাজি না হওয়ায় ওরা ওই ধারনকৃত ক্লিপটি ভাইরাল করে দিয়েছে। ওরা আমার জীবনটাকে নষ্ট করে দিছে। ওদের আমি বিচার চাই। আসামীরা অনেক প্রভাবশালী হওয়ায় বিভিন্ন চাপের মধ্যে আছি। সামনে আমার এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারবো কি না জানিনা।
    ভিডিও করার কথা অস্বীকার কওে আসামী মুবদি সরদার বলেন , আমি এ ঘটনার সাথে জড়িত না । ওরা করেছে শুনে আমি ওদেও বকাবকি করেছি। এর বেশি কিছু আমি জানি না।
    সাজনপুর ইসলামীয় উচ্চ বিদ্যালয়ে নাম প্রকাশে একাধিক সহকারী শিক্ষক বলেন , আমাদেও স্কুলে যে ঘটনাটি ঘটেছে এটা খুবই দৃঃখ জনক । বিষয়টির কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন যাতে কখন ও এ ধরনের ঘটনা না ঘটে ।
    কিশোরীর মামা সুমন বলেন , আমরা ভেদরগঞ্জ থানায় মামলা করেছি । এখন ও কোন আসামী গ্রেফতার হয়নি । আমার ভাগনির জীবন নিয়ে আমরা শংকিত ।
    মামলার তদন্ত কারী কর্মকর্তা ভেদরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাজিব সূত্রধর বলেন, ধর্ষণ ও ওই ঘটনা ভাইরাল ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আমাদেও ওসি স্যারের কাছে ভিডিও টি রয়েছে।
    ভেদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি ) বাহালুল খান বাহার বলেন , ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার আমার কাছে আসছিল। আমি সাথে সাথে মামলা নিয়েছি । আসামীদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

    বাংলাদেশ সময়: ১০:১৮ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৯ জুন ২০২২

    dainikbanglarnabokantha.com |

    এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

    আর্কাইভ