মিন্টু খন্দকার নকলা প্রতিনিধি: শনিবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২২
এক বৃদ্ধা মাকে সন্তানরা বাড়ি থেকে বের করে খোলা আকাশের নিচে ফেলে যায়।
ঘটনাটি ঘটেছে শেরপুর নকলা পৌরসভার কলাপাড়া এলাকায়।
মা সন্তানের সবচেয়ে আপনজন। আবার মায়ের কাছেও সন্তানের থেকে প্রিয় কেউ নেই।
সৃষ্টির শুরু থেকেই মা-সন্তানের বন্ধন চিরন্তন, শাশ্বত। সন্তান জন্মের সঙ্গে সঙ্গেই এ বন্ধন তৈরি হয়ে যায়।
মা সন্তানের এই বন্ধনকে মিথ্যা প্রমান করে কুলাঙ্গার সন্তানরা বাড়ি থেকে রাস্তার পাশে ফেলে যায় ৭০ বছরের বৃদ্ধা অসহায় মাকে।
বৃদ্ধা মায়ের নাম ফাতেমা(৭০) চার ছেলের ঘরে ১০জন নাতি থাকার পরও বৃদ্ধা মায়ের ছেলেদের ঘরে জায়গা হয়নি, দুই দিন পূর্বে ঘর থেকে বের করে রাস্তায় ফেলে আসে ছেলে এবং ছেলের বৌ।
রাত্রে প্রচন্ড শীত এবং দিনে রৌদ্রে পুড়ে খোলা আকাশের নীচে অবস্থান করায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। স্থানীয় সাংবাদিকগন উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে দেন।
বৃদ্ধা ফাতেমা(৭০)সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার জন্য পিতার বাড়ী থেকে পাওয়া দশ শতক জমি সন্তানদের নামে লিখে দিয়েছেন।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, বৃদ্ধা ফাতেমা বেগমের ছেলে মেয়ে আত্মীয় স্বজনদের অনুরোধ করে ঘরে তুলতে পারেনি।
স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে বিষয়টি শুনে নকলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বুলবুল আহমেদ বৃদ্ধাকে নকলা হাসপাতালে দেখতে যান।
৩রা ডিসেম্বর শনিবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার বুলবুল আহমেদ, নকলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডাঃ গোলাম মোস্তুফা সহ নকলা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ রিয়াদ আহাম্মেদ সহ বৃদ্ধা মহিলার বাড়িতে যান। বৃদ্ধার সন্তানদের কাছে মায়ের পালন লালন কেন করবেন ছেলে এবং ছেলের বউদের কাছে আইনের ব্যাখা প্রদান করেন।
বৃদ্ধা মাকে দেখবাল না করলে আইনের আশ্রয় নিবেন বলে জানালে পরিবারের সদস্যরা তাদের ভূল বুঝতে পেরে বৃদ্ধা মা কে ঘরে তুলে নেয় এবং থাকা খাওয়ার নিশ্চয়তা দেন।
নকলা উপজেলায় নির্বাহী অফিসার বুলবুল আহমেদ এই বৃদ্ধা মায়ের ঘরের জন্য ২ বান্ডেল ঢেউ টিন ও নগদ ৬ হাজার টাকা অর্থ সহায়তা ও ২ টি শাড়ি প্রদান করেন। ভবিষ্যতে এই নারীর খবর রাখার জন্য কয়েক জনকে দায়িত্ব দেন। আগামি জুন মাসে মহিলার জন্য একটি পাঁকা ঘর দেওয়া হবে বলে এলাকাবাসির কাছে জানান এই মানবিক কর্মকর্তা।
ইউএনও বুলবুল আহম্মেদ বলেন, ‘একজন মানুষ হিসেবে আরেকজন অসহায় মানুষকে সাহায্য করাই ধর্ম। আমি শুনে হতবাক হলাম, দুই দিন রাস্তার পড়ে থাকার পরও পরিবারের কেউ এই মায়ের জন্য সাহায্যে এগিয়ে আসে নি।
নকলা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার গোলাম মোস্তুফা বলেন,বৃদ্ধা মা ফাতেমা যত দিন পৃথিবীতে বেঁচে থাকবেন তত দিন বিনামূল্যে চিকিৎসা দিবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১০:০৩ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২২
dainikbanglarnabokantha.com | Romazzal Hossain Robel