• শিরোনাম

    প্রান্তিক জনগোষ্ঠির চিকিৎসা সেবাকেন্দ্র শিবপুর ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

    অনলাইন ডেস্ক বৃহস্পতিবার, ১৬ জুন ২০২২

    প্রান্তিক জনগোষ্ঠির চিকিৎসা সেবাকেন্দ্র শিবপুর ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

    apps

    এম. ওবায়েদুল কবীর: নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার প্রাণকেন্দ্র কলেজরোড হতে ৫০ গজ পশ্চিমে অবস্থিত শিবপুর ৫০ শয্যা বিশিষ্ট্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। হাসপাতালটি ১৯৮২ সালে নির্মিত হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, উপজেলার প্রায় পাঁচলাখ মানুষের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে ৩১ শয্যার হাসপাতালটিকে ৫০ শয্যায় উন্নীতকরণে নতুন ভবন নির্মাণ হয়। ২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসে ৫০ শয্যার এই ভবনটি উদ্বোধন করেন তৎকালিন নরসিংদী ২ আসনের সংসদ সদস্য জহিরুল হক ভঁইয়া মোহন। ৫০ শয্যার প্রশাসনিক অনুমোদন পেয়ে কার্যক্রম চললেও সকল অবকাঠামো ও জনবল এখনও ঘাটতি রয়েছে।
    সরেজমিনে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, শয্যা না পাওয়ায় বিভিন্ন সময়ে রোগিরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেঝেতে থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছে। তাছাড়া এক শয্যায় কয়েকজন রোগীকে চিকিৎসা নিতেও দেখা গেছে। পুরনো ভবনের পাশেই ৫০ শয্যার নতুন ভবন। আধুনিকভাবে গড়ে তোলা ভবন থাকা সত্ত্বেও চিকিৎসকের অনুপস্থিতির কারনে রোগিরা অনেক সময় স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
    সংশ্লিষ্ট সূত্রের দেয়া তথ্যে ২২ জন চিকিৎসকের তালিকায় ১৬ জনের নাম রয়েছে। এর মধ্যে প্রেষনে রয়েছেন ৪ জন, ১ জানুয়ারি ২০২২ হতে অনুপস্থিত ১জন, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২২ হতে মাতৃত্ব ছুটিতে ১জন, ১ মার্চ ২০২২ হতে অনুপস্থিত ১জন, শূন্য পদ রয়েছে ৬ টি। তাছাড়া অধিকাংশ ডা. নিয়মিত হাসপাতালে না আসার কারনে চিকিৎসাসেবা ব্যহত হচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানায়।
    চিকিৎসা নিতে আসা কয়েকজন রোগির সাথে কথা বললে তারা জানান, প্রাইভেট হাসপাতাল বা ক্লিনিকে চিকিৎসা খরচ বহন করার সামর্থ তাদের নেই বলেই বাধ্য হয়ে এ হাসপাতালে আসতে হয়। আবার অনেককে এখানে এসেও চিকিৎসকের ঘাটতিতে কাঙ্খিত চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে।
    হাসপাতেলর পাশের এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘৫০ শয্যা হাসপাতালের কার্যক্রমটি চালু হওয়ায় আমরা একটু ভালো চিকিৎসা নেয়ার সুযোগ পেয়েছি। চিকিৎসক ও লোকবল বাড়ালে উপজেলাবাসী আরও উন্নত সেব পেত।’
    এদিকে হাসপাতালের কয়েক দিনের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, প্রায় প্রতিদিনই ওয়ার্ডগুলোতে নির্ধারিত শয্যার অতিরিক্ত রোগী থাকছেন। শয্যার অভাবে রোগীদের ঠাঁই নিতে হয় মেঝেতে।
    হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন অন্তঃবিভাগে তিন শতাধিক এবং বহিঃর্বিভাগে ৭শ থেকে ৮শ রোগী চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন।
    আর. এম. ও ডা. ডলার জানান,‘ আমরা রোগীদের উন্নত চিকিৎসাসেবা দিতে চেষ্টা করি, ডাক্তার ও লোকবলের অভাব থাকায় অনেক সময় যথাযথ সেবা প্রদান সম্ভব হয়না। ডেন্টাল সার্জন না থাকায় আমাদরে হাসপাতালে অনেক রোগী সেবা নিতে এসেও ফিরে যায়। করোনা পরীক্ষাসহ করোনার ১ম ধাপ থেকেই এ হাসপাতালে টিকাদান কর্মসূচী চালু হয় এবং এ সেবা এখনও অব্যাহত রয়েছে।’
    উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফারহানা আহমেদ বলেন, ‘৫০ শয্যা হাসপাতাল পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও লোকবল চেয়ে উর্ধ্বতন র্কর্তৃপক্ষকে বারবার অবহিত করেও কোন সদুত্তর পাওয়া যায়নি। শয্যা সংকটের কারণে প্রায় সময় বারান্দার মেঝেতেই দিনের পর দিন চিকিৎসাসেবা দেিত হচ্ছে রোগীদের। তালিকায় নাম থাকা অনেক চিকিৎসক ঢাকা মেডিকেল, জেলা হাসপাতালসহ অন্যান্য হাসপাতালে চিকিৎসার কজে রয়েছেন।
    জেলা পাবলিক হেল্থ নার্স সালেহা খাতুন জানান, এ হাসপাতালে ২ জন নার্সিং সুপারভাইজারসহ ২৫ জন নার্স বিভিন্ন ওয়ার্ডে কর্মরত রয়েছেন।
    জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. ইূূরুল ইসলাম বলেন, ‘ক্রমান্বয়ে সকল শূন্য ও চিকিৎসক নিয়োগ হবে, তাছাড়া অনেক নিয়োগই এখনও হয়নি।’ জেলা সিভিল সার্জনের তথ্য অনুযায়ী, হাসপাতালের কার্ডিওলজি, চক্ষু, ইএনটি, চর্ম ও যৌন, মেডিকেল অফিসারসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে চিকিৎসকের পদ খালি রয়েছে।
    সামগ্রিক বিষয়ে হাসপাতালের প্রধান সহকারী রাশেদূল কমল বলেন, ‘আমরা ২০১৭ সালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পুরস্কার পেয়েছি, কিছুদিন আগেও স্বাস্থ্যমন্ত্রী থেকে পুরস্কার পেয়েছি। সার্বক্ষণিক পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ অব্যাহত রেখে হাসপাতালটির পরিচ্ছন্ন পরিবেশ ধরে রাখছি। লোকবল বাড়ানো হলে আমাদের চিকিৎসাসেবা ফলপ্রসূ হবে।’
    সর্বোপরি এলাকার চিকিৎসা উন্নয়নের স্বার্থে হাসপাতালটিতে চিকিৎসক ও অন্যান্য লোকবল বাড়ালে উপজেলার নি¤œ আয়ের রোগীরা নিয়মিত চিকিৎসাসেবা পাবে বলে চিকিৎসাবিদদের ধারনা।

    বাংলাদেশ সময়: ১২:৪২ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৬ জুন ২০২২

    dainikbanglarnabokantha.com |

    এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

    আর্কাইভ