• শিরোনাম

    দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে গ্রাম বাংলার চির ঐতিহ্যের নিদর্শন মাটির ঘর হারিয়ে যাচেছ

    শেখ সাইফুল ইসলাম কবির: বৃহস্পতিবার, ০১ এপ্রিল ২০২১

    দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে গ্রাম বাংলার চির ঐতিহ্যের নিদর্শন মাটির ঘর হারিয়ে যাচেছ

    দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে গ্রাম বাংলার চির ঐতিহ্যের নিদর্শন মাটির ঘর হারিয়ে যাচেছ

    apps

    দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বাগেরহাট সহ ১০ জেলায় হারিয়ে যাচেছ গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী মাটির ঘর। মাটির ঘরের কদর কমিয়ে দিয়েছে সাম্প্রতিক বন্যা আর প্রাকৃতিক দুর্যোগ। অথচ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বাগেরহাট অঞ্চলের প্রতিটি গ্রামেই দেখা যেত নজর কাড়া মাটির একতলা কিংবা দোতলাবাড়ি। শুধু মাটির বাড়িই নয়, ছিল ধান-চাল রাখার জন্য মাটির তৈরী গোলা ঘর ও কুঠি । তবে দিন দিন প্রাকৃতিক দুর্যোগ পরিবেশ পরিস্থিতির কারণে এসব আজ হারাতে বসেছে।
    সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বাগেরহাট জেলার বিভিন্ন এলাকায় এক সময় প্রতিটি ঘর ছিল মাটির তৈরি। কিন্ত আধুনিকতার স্পর্শে এখন মানুষের জীবন যাত্রার মান বেড়েছে। গ্রামেগ্রামে পৌঁছে গেছে বিদ্যুৎ। গ্রামীণ অর্থনীতির গতি সচল হওয়ায় মাটির ঘরের পরিবর্তে তৈরিহচেছ পাকা ঘর।  কয়েকবছর পর পর মাটির ঘর সংস্কারের ঝক্কি-ঝামেলা ও ব্যয়বহুল দিক পর্যবেক্ষণ করে মাটির ঘরের পরিবর্তে দালান-কোটা বানাতে উৎসাহী হয়ে উঠেছেন এখান কার মানুষ। মাটির ঘর তৈরি করতে প্রথমে এঁটেল বা আঠালো মাটি কাদায় পরিণত করে দুই-তিন ফুট চওড়া করে দেয়াল তৈরি করা হতো।  ১০-১৫ ফুটউঁচু দেয়ালে কাঠ বা বাঁশের সিলিং তৈরি করে তার ওপর খড় অথবা টিনের ছাউনি দেওয়াহতো। এসব মাটির ঘর তৈরি করতে কারিগরদের সময় লাগতো দেড় থেকে দু’মাস। এক সময় আমাদের এলাকার প্রতিটা ঘর মাটি দিয়ে তৈরি করা হত। অনেকেই মাটি, বাঁশ, টিন সংগ্রহ করে নিজেরাই মাটির ঘর তৈরি করত।

    ভূমিকম্প বা বন্যা না হলেএকটি মাটির ঘর শতবছরেরও বেশি স্থায়ী হয়। কিন্তু বর্তমান সময়েকালের বিবর্তনে ইটের দালানকোটা আর বড় বড় অট্রালিকার কাছে হারমানছে মাটির বাড়ি ঘর। মাটির ঘরে দেয়ালে কাঠ বা বাঁশেরশিলিং তৈরিকরে তারওপর খর বাটিনের ছাউনি দেয়া হতো। মাটিরবাড়ি ঘর অনেক সময় দোতলা পর্যন্ত করা হতো। সব ঘর বড় মাপের হয়না। গৃহিনীরা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মাটির দেয়ালে বিভিন্ন রকমের আল্পনা এঁকেঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতেন। প্রাকৃতিক দূর্যোগ ও বর্ষা মৌসুমে মাটির ঘরের ক্ষতি হয় বলে বর্তমান সময়ে দীর্ঘ স্থায়ীত্বের কারণে গ্রামের মানুষরা ইটের বাড়ি নির্মাণের আগ্রহী হন। এদিকে সদরের আজিজুল হক এর বাড়িতে দেখা মিলেছে মাটির তৈরি ঘর।

    অনেকেই মাটির তৈরি ঘর পেয়েছেন পৈত্রিক ভাবে। তাদের পূর্ব পুরুষরাও এই মাটির তৈরি বাড়িতেই জীবন কাটিয়ে গেছেন। তবে মাটির বাড়ি বসবাসের জন্য আরামদায়ক হলেও যুগের পরিবর্তনে আধুনিকতার সময় অধিকাংশ মানুষ মাটির বাড়ি ভেঙে অধিক নিরাপত্তা ও স্বল্প জায়গায় দীর্ঘস্থায়ী ভাবে অনেক লোকের নিবাসকল্পে গ্রামের মানুষরা ইটের বাড়ি-ঘর তৈরি করছেন বলে অনেকের ধারণা। কিন্তু এখন আর মাটির ঘর তেমন একটা দেখাযায়না। সময়ের সঙ্গে মাটির ঘরগুলোহারিয়ে যাচেছ যা জানান এলাকাবাসী।

    বাংলাদেশ সময়: ২:২৪ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০১ এপ্রিল ২০২১

    dainikbanglarnabokantha.com |

    এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

    আর্কাইভ