বুধবার ৯ অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৪ আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

>>

৯ বছরেও হয়নি সাতক্ষীরা জেলা যুবলীগের পুর্ণাঙ্গ কমিটি, গ্রুপিং এ চরম অস্বস্থি তৃণমূলে

মোঃ আবু সাইদ সরদার, সাতক্ষীরার প্রতিনিধি :   |   রবিবার, ২৮ মে ২০২৩   |   প্রিন্ট

সাতক্ষীরা জেলা যুবলীগের পদ প্রত্যাশী একাধিক ব্যক্তি বলেন, ‘আন্দোলন, সংগ্রামে সামনের কাতারে থাকে যুবলীগ। যুবলীগ শক্তিশালী হলে আ’লীগও শক্তিশালী হয়। দীর্ঘ ৯ বছর সাতক্ষীরা জেলা যুবলীগের কোন পূর্ণাঙ্গ কমিটি নেই। এছাড়া সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। প্রত্যেক নির্বাচনে যুবলীগের একটা ব্যাপক ভ’মিকা থাকে। নির্বাচনের আগে সাতক্ষীরা জেলা যুবলীগের কমিটিটা অত্যন্ত প্রয়োজন। বর্তমানে সাতক্ষীরা জেলা যুবলীগের কমিটি না থাকায় দিনদিন আমরা হতাশ হয়ে যাচ্ছি। কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতৃবৃন্দের কাছে আমরা করজোরে অনুরোধ জানাচ্ছি অতিদ্রুত সাতক্ষীরা জেলা যুবলীগের কমিটি ঘোষণা করা হোক।’ এদিকে দীর্ঘ ৯ বছরেও পুর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়ায় সাতক্ষীরা জেলা যুবলীগের কার্যক্রম ঝিমিয়ে ঝিমিয়ে। জেলা যুবলীগের ভাইটাল পদ প্রত্যাশী যুবলীগ নেতা মিজানুর রহমান মিজান ও জাহিদ হোসেন বাপ্পীর নেতৃত্বে প্রায় সকল কর্মসূচী এবং মাঝে মাঝে আমিনুর রহমান বাবু ও তানভীর হোসেন সুজন এবং মাহী আলম ও তামিম আহম্মেদ সোহাগ জেলা যুবলীগের ব্যানারে কেন্দ্রীয় নির্দেশনায় কার্যক্রম পালন করলেও তৃণমূল নেতাকর্মীদের তেমন একটা সাড়া মিলছে না। এছাড়া সাতক্ষীরা জেলা যুবলীগের ব্যাপক গ্রুপিং এর কারণে চরম বিপাকে পড়েছেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা। গ্রুপিং এর ভয়ে জেলা যুবলীগের নেতাকর্মীদের আহবানে প্রোগ্রামে উপজেলা বা ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের উপস্থিতি তেমন একটা নেই বললেই চলে। তাছাড়া প্রায় সকল উপজেলা ও ইউনিয়নে যুবলীগের প্রোগ্রাম প্রায় পালনই হচ্ছেনা। মুলত জেলা যুবলীগের কর্ণধার কারা হবেন সেদিকেই তাকিয়ে আছেন যুবলীগের তুণমূল নেতৃবৃন্দ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০০৩ সালে মাহমুদ আলী সুমনকে আহবায়ক ও আব্দুল মান্নানকে ১ নম্বর যুগ্ম আহবায়ক এবং আসাদুজ্জামান বাবুকে ২ নম্বর যুগ্ম আহবায়ক করে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় কমিটি। ২০০৬ সালে সম্মেলনের মাধ্যমে যুবলীগ নেতা-কর্মীদের ভোটে আব্দুল মান্নান সভাপতি এবং আসাদুজ্জামান বাবু সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে গঠিত হয় ৭১ সদস্য বিশিষ্ট সাতক্ষীরা জেলা যুবলীগের কমিটি। ২০১৪ সাল পর্যন্ত একটি শক্তিশালী সংগঠন হিসেবে যুবলীগের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। সে সময় সাতক্ষীরা জেলা যুবলীগের বিভিন্ন প্রোগ্রামে স্বতঃস্ফূর্তভাবে দলে দলে তৃণমূল নেতাকর্মীরা অংশ গ্রহণ করে। তবে ২০১৪ সালের ৩০ নভেম্বর সাতক্ষীরা জেলা যুবলীগের কমিটি ভেঙে দিয়ে আব্দুল মান্নানকে আহবায়ক ও জহিরুল ইসলাম নান্টুকে যুগ্ম-আহবায়ক করে ৩১ সদস্য বিশিষ্ট নতুন আহবায়ক কমিটি গঠন করে কেন্দ্রীয় কমিটি। ৯০ দিনের মধ্যে প্রতিটি ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, পৌরসভা এবং উপজেলা কমিটির সম্মেলন সম্পন্ন করে জেলা শাখার সম্মেলন সম্পন্ন করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করার কথা ছিল। তবে গত ৯ বছরেও সেটি করতে ব্যর্থ হয় ওই আহবায়ক কমিটি। তারপরও সাতক্ষীরা জেলা যুবলীগে তেমন একটা গ্রুপিং না থাকায় তখন বিভিন্ন প্রোগ্রামে যুবলীগের নেতাকর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতি ছিল। এছাড়া ২০২০ সালের ৩ আগস্ট সংগঠন বিরোধী কর্মকান্ডের অভিযোগে আহবায়ক আব্দুল মান্নানকে বহিষ্কার করার পরেও পরপরই সাতক্ষীরা জেলা যুবলীগের শুরু হয় ব্যাপক গ্রুপিং। সেই গ্রুপিং উপজেলা, ইউনিয়ন এমনকি ওয়ার্ডেও ছড়িয়ে পড়ে। ফলে আস্তে আস্তে স্থবির হয়ে পড়ে সাতক্ষীরা জেলা যুবলীগের কার্যক্রম। যা এখন পর্যন্ত চলমান আছে।

আরো জানা যায়, গত বছরের ১ জানুয়ারি এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আহবায়ক/যুগ্ম-আহবায়ক পদের জন্য ৩ জানুয়ারী থেকে ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত যুবলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাতক্ষীরা জেলা যুবলীগের পদপ্রত্যাশীদের জীবন বৃত্তান্ত জমা দেয়ার জন্য আহবান করেন কেন্দ্রীয় যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ। তখন আহবায়ক পদে মিজানুর রহমান মিজান, জহিরুল ইসলাম নান্টু, আব্দুল মান্নান, মীর মহি আলম, নাজমুল হৃদা পলাশ, তানভীর হুসাইন সুজন, রেজা আল আমিন শুভ, ওয়াহিদ পারভেজ, মোরর্শেদ আলী, কাজী নজরুল ইসলাম হিল্লোল, সোহরাব হোসেন সাজু, ওয়াহেদুজ্জামান ওয়াহেদ, সোহাগ হোসেন, শেখ রফিকুল ইসলাম রানা, খায়রুল আলম সবুজ ও আব্দুস সাত্তার এবং যুগ্ম আহবায়ক পদে আমিনুর রহমান বাবু, জাহিদ হেসেন বাপ্পী, মনোয়ার হোসেন অনু, মঈনুল হোসেন, শেখ তামিম আহম্মেদ, রেজাউল ইসলাম রেজা, সরদার জাকির, শেখ ইমরান, হাফিজুর রহমান সবুজ, ইমরান বাহার বুলবুল, জনি জাবেদ, ইনজামুল ইসলাম ইনজা, আব্দুল মজিদ, আব্দুস সালাম, কাজী নুর হোসেন রনি, আব্দুল্লাহ্ আল মামুন ও জাহিদ হোসেন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জীবন বৃত্তান্ত জমা দেন। তবে জীবন বৃত্তান্ত জমা নেওয়ার ১ বছর ৫ মাস অতিবাহিত হতে চললেও এখনও আলোর মুখ দেখেনি সাতক্ষীরা জেলা যুবলীগের কমিটি। ফলে দিনদিন হতাশ হয়ে ঝিমিয়ে যাচ্ছেন ত্যাগী নেতাকর্মীরা।
সাতক্ষীরা জেলা আ’লীগের সংগঠনিক সম্পাদক কাজী আক্তার হোসেন বলেন, ‘সামনে সংসদ নির্বাচন। এই মুহূর্তে সাতক্ষীরা জেলা যুবলীগের কমিটি অত্যন্ত প্রয়োজন। প্রত্যাশা করছি বিষয়টি অনুধাবন করে অতিদ্রুত সাতক্ষীরা জেলা যুবলীগের কমিটি ঘোষণা করবে কেন্দ্রীয় কমিটি।

এছাড়াও তৃনমূলকর্মীরা কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে এই অস্বস্তিকর পরিস্থিতি থেকে মুক্তির জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জোর দাবি জানান।

Facebook Comments Box

Posted ১১:৫১ অপরাহ্ণ | রবিবার, ২৮ মে ২০২৩

dainikbanglarnabokantha.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

সম্পাদক

রুমাজ্জল হোসেন রুবেল

বাণিজ্যিক কার্যালয় :

১৪, পুরানা পল্টন, দারুস সালাম আর্কেড, ১০ম তলা, রুম নং-১১-এ, ঢাকা-১০০০।

ফোন: ০১৭১২৮৪৫১৭৬, ০১৬১২-৮৪৫১৮৬

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

design and development by : webnewsdesign.com

nilüfer escort coin master free spins