শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৫ আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

>>
আদালতের ব্যতিক্রমী রায়:

৪৯ শিশু-কিশোরের সাজার বদলে মিললো বই

আব্দুল্লাহ আল মামুন,স্টাফ রিপোর্টার   |   বৃহস্পতিবার, ২১ জানুয়ারি ২০২১   |   প্রিন্ট

৪৯ শিশু-কিশোরের সাজার বদলে মিললো বই

সুনামগঞ্জে একসঙ্গে ৩৫টি মামলার রায় দিয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালত। রায়ে ৪৯ জন অভিযুক্ত শিশু-কিশোরকে সাজার বদলে সুন্দর জীবনে ফিরে আসার সুযোগ দিয়ে পরিবারের কাছে হস্তান্তরের আদেশ দেওয়া হয়। বুধবার (২০ জানুয়ারি) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জাকির হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন।

অভিযুক্ত শিশু, তাদের অভিবাবক ও আইনজীবীদের উপস্থিতিতে রায় ঘোষণা করা হয়। এসময় আদালতের পক্ষ থেকে প্রত্যেকের হাতে ১০০ মনীষীর জীবন নামে বই উপহার দেওয়া হয়।
বিচারক জাকির হোসেন রায়ের পাশাপাশি পরিবারের সদস্যদের শিশু-কিশোরদের অপরাধ প্রবণতা থেকে দূরে রাখতে ও সুন্দর পরিবেশ দেওয়ার আহবান জানান। একই সঙ্গে আগামীর বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিতে তাদের প্রস্তুত হওয়ার জন্য উৎসাহ দেন।

আদালত রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেন, শিশুরা হলো জাতির ভবিষ্যত। তারা বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত হয়ে নানান মামলায় জড়িত ছিল। আদালত শিশু আইনের বাস্তবায়ন ও শিশু অধিকার রক্ষায় এ রায় দিয়েছে। শিশুদের প্রতি বিশেষভাবে খেয়াল রাখার জন্য অভিবাবকদের আদেশ দেওয়া হলো। যাতে শিশুরা আবারও অপরাধে জড়িয়ে না পড়ে।

বাবা-মায়ের কাছে পাঠাতে ১০টি শর্ত দিয়েছেন আদালত- ১. প্রবেশনে থাকাকালে ‘একশ মনীষীর জীবনী’ নামক গ্রন্থটি পাঠ করা ২. বাবা-মাসহ গুরুজনদের আদেশ নির্দেশ মেনে চলা ৩. বাবা-মায়ের সেবা যতœ করা এবং কাজেকর্মে তাদের সাহায্য করা ৪. ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলা ৫. নিয়মিত ধর্মগ্রন্থ পাঠ করা ৬.প্রত্যেকে কমপক্ষে ২০টি করে গাছ লাগানো এবং গাছের পরিচর্যা করা ৭. অসৎ সঙ্গ ত্যাগ করা ৮. মাদক থেকে দূরে থাকা ৯. ভবিষ্যতে কোন অপরাধের সাথে নিজেকে না জড়ানো ১০. স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা।
এসব শর্ত প্রতিপালিত হচ্ছে কিনা তা প্রবেশন কর্মকর্তা মো. শফিউর রহমান পর্যবেক্ষণ করবেন এবং প্রতি তিনমাস অন্তর অন্তর অবহিত করার নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত।

এবিষয়ে সুনামগঞ্জ জেলার প্রবেশন কর্মকর্তা মো. শফিউর রহমান বলেন, আদালত যে রায় দিয়েছেন সেটি শিশুদের ভবিষ্যতে বেড়ে উঠতে কাজে দিবে এতে করে শিশুরা অপরাধ থেকে নিজেকে দূরে রাখতে পারবে। আদালত তাদের ১০টি শর্ত দিয়েছেন এবং আমি তাদের প্রতি নজর রাখবো।
এ বিষয়ে সুনামগঞ্জ সনাকের সভাপতি অ্যাডভোকেট আইনুল ইসলাম বাবলু বলেন, সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও শিশুদের অধিকার রক্ষায় আদালতের রায় দেশের বিচারিক ইতিহাসে একটি মাইল ফলক হয়ে থাকবে। স¤প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে প্রায় প্রতিটি মামলায় শিশুদের অভিযুক্ত করা হয়। দেশের বিভিন্ন স্থানে লেখাপড়ায় থাকা শিশুদের বাড়ির ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে মামলা দেওয়া হচ্ছে। এটি মূলত দুই কারণে করা হয়। একটি হলো শিশুর জীবনকে নষ্ট করে দেওয়া ও পরিবারের সুন্দর আগামীকে অন্ধকার করে দিতে এমন করা হচ্ছে। মামলায় আসামি করার আগে তদন্ত কর্মকর্তাদের আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহŸান জানান তিনি।
শিশু আদালতের পিপি নান্টু রায় বলেন, পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে থেকে সুষ্ঠু জীবনে ফিরে আসার সুযোগ করে দিতে আদালত রায় দিয়েছেন। শিশু আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন এর আগেও ১৪ জন শিশুকে শর্তযুক্ত মুক্তি দিয়েছেন।আদালত সূত্র জানায়, মামলাগুলো দীর্ঘদিন ধরেই চলমান ছিল। রায়ে বাদী এবং বিবাদী পক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

এদিকে অভিযুক্ত শিশু-কিশোররা জানান, তাদের নামে মামলা থাকার কারণে প্রতিমাসে আদালতে হাজিরা দিতে হতো। লেখাপড়া বাদ দিয়ে আদালতে হাজির হওয়ায় তাদের পড়ার ক্ষতি হচ্ছিলো। এখন আদালতের আদেশে স্বাভাবিক জীবন যাপন করা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করে তারা।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আদালতের ব্যতিক্রমী রায়:
৪৯ শিশু-কিশোরের সাজার বদলে মিললো বই
আব্দুল্লাহ আল মামুন,স্টাফ রিপোর্টার
সুনামগঞ্জে একসঙ্গে ৩৫টি মামলার রায় দিয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালত। রায়ে ৪৯ জন অভিযুক্ত শিশু-কিশোরকে সাজার বদলে সুন্দর জীবনে ফিরে আসার সুযোগ দিয়ে পরিবারের কাছে হস্তান্তরের আদেশ দেওয়া হয়।
বুধবার (২০ জানুয়ারি) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জাকির হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন।
অভিযুক্ত শিশু, তাদের অভিবাবক ও আইনজীবীদের উপ¯ি’তিতে রায় ঘোষণা করা হয়। এসময় আদালতের পক্ষ থেকে প্রত্যেকের হাতে ১০০ মনীষীর জীবন নামে বই উপহার দেওয়া হয়।
বিচারক জাকির হোসেন রায়ের পাশাপাশি পরিবারের সদস্যদের শিশু-কিশোরদের অপরাধ প্রবণতা থেকে দূরে রাখতে ও সুন্দর পরিবেশ দেওয়ার আহবান জানান। একই সঙ্গে আগামীর বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিতে তাদের প্র¯‘ত হওয়ার জন্য উৎসাহ দেন।
আদালত রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেন, শিশুরা হলো জাতির ভবিষ্যত। তারা বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত হয়ে নানান মামলায় জড়িত ছিল। আদালত শিশু আইনের বাস্তবায়ন ও শিশু অধিকার রক্ষায় এ রায় দিয়েছে। শিশুদের প্রতি বিশেষভাবে খেয়াল রাখার জন্য অভিবাবকদের আদেশ দেওয়া হলো। যাতে শিশুরা আবারও অপরাধে জড়িয়ে না পড়ে।
বাবা-মায়ের কাছে পাঠাতে ১০টি শর্ত দিয়েছেন আদালত- ১. প্রবেশনে থাকাকালে ‘একশ মনীষীর জীবনী’ নামক গ্রš’টি পাঠ করা ২. বাবা-মাসহ গুরুজনদের আদেশ নির্দেশ মেনে চলা ৩. বাবা-মায়ের সেবা যতœ করা এবং কাজেকর্মে তাদের সাহায্য করা ৪. ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলা ৫. নিয়মিত ধর্মগ্রš’ পাঠ করা ৬.প্রত্যেকে কমপক্ষে ২০টি করে গাছ লাগানো এবং গাছের পরিচর্যা করা ৭. অসৎ সঙ্গ ত্যাগ করা ৮. মাদক থেকে দূরে থাকা ৯. ভবিষ্যতে কোন অপরাধের সাথে নিজেকে না জড়ানো ১০. স্বা¯’্যবিধি মেনে চলা।
এসব শর্ত প্রতিপালিত হ”েছ কিনা তা প্রবেশন কর্মকর্তা মো. শফিউর রহমান পর্যবেক্ষণ করবেন এবং প্রতি তিনমাস অন্তর অন্তর অবহিত করার নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত।
এবিষয়ে সুনামগঞ্জ জেলার প্রবেশন কর্মকর্তা মো. শফিউর রহমান বলেন, আদালত যে রায় দিয়েছেন সেটি শিশুদের ভবিষ্যতে বেড়ে উঠতে কাজে দিবে এতে করে শিশুরা অপরাধ থেকে নিজেকে দূরে রাখতে পারবে। আদালত তাদের ১০টি শর্ত দিয়েছেন এবং আমি তাদের প্রতি নজর রাখবো।
এ বিষয়ে সুনামগঞ্জ সনাকের সভাপতি অ্যাডভোকেট আইনুল ইসলাম বাবলু বলেন, সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও শিশুদের অধিকার রক্ষায় আদালতের রায় দেশের বিচারিক ইতিহাসে একটি মাইল ফলক হয়ে থাকবে। স¤প্রতি লক্ষ্য করা যা”েছ প্রায় প্রতিটি মামলায় শিশুদের অভিযুক্ত করা হয়। দেশের বিভিন্ন¯’ানে লেখাপড়ায় থাকা শিশুদের বাড়ির ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে মামলা দেওয়া হ”েছ। এটি মূলত দুই কারণে করা হয়। একটি হলো শিশুর জীবনকে নষ্ট করে দেওয়া ও পরিবারের সুন্দর আগামীকে অন্ধকার করে দিতে এমন করা হ”েছ। মামলায় আসামি করার আগে তদন্ত কর্মকর্তাদের আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহŸান জানান তিনি।
শিশু আদালতের পিপি নান্টু রায় বলেন, পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে থেকে সুষ্ঠু জীবনে ফিরে আসার সুযোগ করে দিতে আদালত রায় দিয়েছেন। শিশু আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন এর আগেও ১৪ জন শিশুকে শর্তযুক্ত মুক্তি দিয়েছেন।
আদালত সূত্র জানায়, মামলাগুলো দীর্ঘদিন ধরেই চলমান ছিল। রায়ে বাদী এবং বিবাদী পক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
এদিকে অভিযুক্ত শিশু-কিশোররা জানান, তাদের নামে মামলা থাকার কারণে প্রতিমাসে আদালতে হাজিরা দিতে হতো। লেখাপড়া বাদ দিয়ে আদালতে হাজির হওয়ায় তাদের পড়ার ক্ষতি হ”িছলো। এখন আদালতের আদেশে স্বাভাবিক জীবন যাপন করা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করে তারা।
আব্দুল্লাহ আল মামুন,স্টাফ রিপোর্টার।
২০-০১-২০২১

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

Facebook Comments Box

Posted ৪:১২ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২১ জানুয়ারি ২০২১

dainikbanglarnabokantha.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

সম্পাদক

রুমাজ্জল হোসেন রুবেল

বাণিজ্যিক কার্যালয় :

১৪, পুরানা পল্টন, দারুস সালাম আর্কেড, ১০ম তলা, রুম নং-১১-এ, ঢাকা-১০০০।

ফোন: ০১৭১২৮৪৫১৭৬, ০১৬১২-৮৪৫১৮৬

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

design and development by : webnewsdesign.com

nilüfer escort coin master free spins