শনিবার ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৫ মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

>>

হয়রানি মুক্ত কর্মপরিবেশ নিশ্চিতে আইন প্রণয়নের আহবান

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   মঙ্গলবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২২   |   প্রিন্ট

হয়রানি মুক্ত কর্মপরিবেশ নিশ্চিতে আইন প্রণয়নের আহবান

কর্মজগতে সকল ধরনের সহিংসতা ও হয়রানি নিরসনে “যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন” প্রণয়ণের আহ্বান জানিয়েছেন শ্রম অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠনের জোট জেন্ডার প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ। আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ২০২২ উপলক্ষে আজ ৬ ডিসেম্বর ২০২২ (মঙ্গলবার) জেন্ডার প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ আয়োজিত ‘কর্মজগতে সহিংসতা ও হয়রানি নিরসনঃ প্রত্যাশা ও করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এ আহ্বান জানান।
জেন্ডার প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ এর সদস্য সংগঠন বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সালমা আলী’র সভাপতিত্বে এবং বাংলাদেশ লেবার ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক এ কে এম আশরাফ উদ্দিন এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটি এর সদস্য শামসুন নাহার ভূইয়া, এমপি। কর্মজগতে সহিংসতা ও হয়রানি নিরসন বিষয়ে জেন্ডার প্ল্যাটফর্মের কার্যক্রম তুলে ধরেন বিলস্ পরিচালক নাজমা ইয়াসমীন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে শামসুন নাহার ভূইয়া, এমপি বলেন, কর্মক্ষেত্রে যে কোন ধরণের যৌন হয়রানি প্রতিকূল অবস্থার সৃষ্টি করে যা মানবাধিকারের সুষ্পষ্ট লঙ্ঘন ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে একটি অন্যতম প্রতিবন্ধকতা। তিনি বলেন, নারীরা ঘরে বাহিরে অনেক পরিশ্রম করে কিন্তু নারীদের গৃহকর্মে কাজের কোন স্বীকৃতি নেই। তারা বিভিন্নভাবে হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হয়। কর্মক্ষেত্রে সহিংসতা ও হয়রানি নিরসন করতে “যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন” প্রণয়ন করা খুবই জরুরি।

দেশের অর্থনীতিক উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় নারী ও পুরুষ প্রায় সমান অবদান রাখছে উল্লেখ করে আইন মন্ত্রণালয়ের ল এন্ড জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের উপ-সচিব নুসরাত জাহান বলেন, দেশে অনেক ভাল আইন রয়েছে এগুলো বাস্তবায়নের জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে। আইনের সঠিক বাস্তবায়ন হলে নারীর প্রতি সহিংসতা ও হয়রানি আরো কমে আসবে। এক্ষেত্রে আইন মানার বিষয়ে সকলের মানসিক পরিবর্তন অত্যন্ত জরুরী।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন উপপরিচালক সুসমিতা পাইক বলেন, যৌন হয়রানি প্রতিরোধে মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনার সংজ্ঞাতেই বলা আছে কোন আচরনগুলো যৌন হয়রানি, তারপরেও কর্মক্ষেত্রে এই আচরনগুলো দ্বারা নারীরা প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এই বিষয়ে সকলের মানসিক পরিবর্তন অনেক জরুরী। তিনি বলেন পরিবার থেকে একজন শিশুকে গড়ে তুলতে হবে ভাল মানুষ হিসেবে। সে যেন বুঝতে পারে কোন কাজটা ভাল আর কোনটা খারাপ।
আইএলও কনভেনশন ১৯০ বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনরে (বিইএফ) অতিরিক্ত মহাসচিব সাইদুল ইসলাম বলেন, যৌন হয়রানি প্রতিরোধে মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা সমূহ আইন হিসেবে মেনে নেওয়ার সুযোগ আছে। এক্ষেত্রে সকলের অঙ্গীকার একান্তভাবে আবশ্যক।

সভাপতির বক্তব্যে অ্যাডভোকেট সালমা আলী বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা ও হয়রানি প্রতিরোধে আমাদের জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের পাশাপাশি সকলের দায়বদ্ধতা বাড়াতে হবে।

শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ) এর যুগ্ম সমন্বয়কারী আহসান হাবীব বুলবুল বলেন প্রতিটি মানুষের মানবিক বিকাশের জন্য মানুষের অধিকার রয়েছে। নারীরা কর্মক্ষেত্রে, যাতায়াত ও বিভিন্ন স্থানে যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন যা তার মানসিক বিকাশে বাধাগ্রস্ত করছে। তিনি বলেন শ্রমিকদের জন্য কর্মপরিবেশ নিরাপদ করতে না পারলে তাদের উৎপাদনশীলতা কম হবে যার প্রভাব পড়বে দেশের অর্থনীতিতেও ।
সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, আমাদের নিষ্ক্রিয়তাই সহিংসতার ক্ষেত্রটা বাড়িয়েছে। সকলের ইতিবাচক মনোভাবই পারে এই সমস্যার সমাধান করতে। তিনি বলেন, সচেতনতা বৃদ্ধি যেমন দরকার সেই সাথে ভিক্টিমকে সহযোগিতা করাও একান্তভাবে প্রয়োজন। সামাজিকভাবে এমন একটা পরিবেশ তৈরী করতে হবে যেখানে নারীরা সুরক্ষিত থাকবে এবং সকল অধিকারগুলো ভোগ করবে। যেখানে থাকবে না কোন বৈষম্য, সহিংসতা ও হয়রানি।
বৈঠকে অন্যান্য বক্তারা বলেন, নারীরা দেশে এবং দেশের বাইরে পুরুষের সাথে সমানভাবে শ্রম দিচ্ছে। নারীর ক্ষমতায়ন, অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতি প্রশংসাজনক। কিন্তু নারীরা এখনো সকল ক্ষেত্রে নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন। বক্তারা বলেন, কর্মক্ষেত্র এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নির্যাতন ও হয়রানি প্রতিরোধে সংবাদিক’সহ সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। এক্ষেত্রে কর্মক্ষেত্রের সংজ্ঞাগত পরিধিকে বিস্তৃত করে সরকার আরো জোরালো ভূমিকা রাখতে পারে বলে তারা অভিমত ব্যক্ত করেন।
বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন ন্যাশনাল কো-অর্ডিনেশন কমিটি ফর ওয়ার্কার্স এডুকেশন-এনসিসিডব্লিউই চেয়ারম্যান শামীম আরা, সলিডারিটি সেন্টার বাংলাদেশ এর কান্ট্রি প্রোগ্রাম ডিরেক্টর এ কে এম নাসিম, বিকেএমইএ এর সহকারী সচিব মোঃ জাকারিয়া খালেদ, আওয়াজ ফাউন্ডেশনের কোষাধ্যক্ষ খাদিজা আক্তার, মনডিয়াল এফএনভি’র বাংলাদেশ পরামর্শক মোঃ শাহীনুর রহমান, কর্মজীবী নারী’র কাজী গুলশান আরা, ফেয়ারওয়্যার ফাউন্ডেশন এর কান্ট্রি ম্যানেজার বাবলুর রহমান প্রমুখ।

Facebook Comments Box

Posted ১০:৪২ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২২

dainikbanglarnabokantha.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আজ বিজয়া দশমী
(1003 বার পঠিত)

এ বিভাগের আরও খবর

সম্পাদক

রুমাজ্জল হোসেন রুবেল

বাণিজ্যিক কার্যালয় :

১৪, পুরানা পল্টন, দারুস সালাম আর্কেড, ১১ম তলা, রুম নং-১১-এ, ঢাকা-১০০০।

ফোন: ০১৭১২৮৪৫১৭৬, ০১৬১২-৮৪৫১৮৬, ০২ ৪১০৫০৫৯৮

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

design and development by : webnewsdesign.com

nilüfer escort coin master free spins