তেভাগা আন্দোলনের পটভূমি অবলম্বনে লেখা আবু ইসহাকের ‘জোঁক’ গল্পটি যখন পড়েছিলাম, তখন ভেবেছিলাম শুধু ভাগচাষি বা বর্গাচাষিদের ক্ষেত্রেই মনে হয় জোঁক শব্দটি প্রযোজ্য। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় বর্তমানে রূপক সেই শব্দটির মিল খুঁজে পাওয়া যায় সুদে অর্থাৎ ধার দেওয়া গ্রাম্য মহাজনদের সঙ্গে। যারা এই মহাজনিকে আয়ের উৎস হিসেবে বেছে নিয়েছেন, তারা অর্থনীতি না পড়লেও সুদের সংজ্ঞাটি বেশ ভালোভাবেই রপ্ত করেছেন। যাতে বলা হয়েছে, ‘সুদ হলো নগদ অর্থ হাতছাড়া করার পুরস্কার।’ একটু ঘুরিয়ে বলা যায়, ‘সুদ দিন, ধার নিন।’ আপনি যত আপনজনই হন না কেন, গ্রাম্য মহাজনরা আপনাকে ধারে টাকা দেবে না। যখন দৈনিক, সাপ্তাহিক বা মাসিক আকারে লাভ দেওয়ার প্রস্তাব দেবেন; তখন মহাজনদের মুখে পরিচিত একটি বাক্য শুনতে পাবেন। তারা বলবেন, আমার তো নেই, দেখি আরেকজনের কাছে পাই কি না! টাকা দেওয়ার সময় বলবে, অন্যের টাকা, মাস শেষে যেন ঘুরতে না হয়। টাকা ধার দেওয়ার এমন অভিনব কায়দা তাদের!শেষ পরিণতি টাকা দিতে না পারলে ঘরের আসবাব পত্র দিতে হয়।অপমান তো নিত্য সঙ্গী।বিচার পাল্লা সুদ খোরের ভারী। একদিন সব কিছুরই ছেড়ে চলে যেতে হয় অজানা জায়গায়।সমাজ জুড়ে চলছে সুদ খোরের দৌড়ত্ব। সামাাজিক ও রাষ্ট্রীয় ভাবে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেে না পারলে পুরো সমাজ ব্যবস্থাই সুদের রাজাত্ব কায়েম হবে বলে বিজ্ঞ মহলের ধারনা।