সিরাজগঞ্জের অধিকাংশ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের রেজিষ্ট্রেশন বাবদ বোর্ড নির্দেশিত ফি’র থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে জেলার বেলকুচির একটি বিদ্যালয়ে গিয়ে এর সত্যতাও মিলেছে। আর সেই বিদ্যালয় কতৃপক্ষই বলছে একই চিত্র সর্বত্র। তবে আনুষাঙ্গিক অনেক খরচ থাকে বলেই অতিরিক্ত অর্থ আদায় বলছেন সবাই। কিন্তু এর দ্বায় কেন শিক্ষার্থীরা নিবে উত্তর নেই। বেলকুচিতে রাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের রেজিষ্ট্রেশনকে কেন্দ্র করে বিদ্যালয় কতৃপক্ষের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেবার অভিযোগ উঠেছে। অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের বিষয়টি বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক, কেরানী ও কতৃপক্ষ স্বীকার করে নিলেও এর পক্ষে সঠিক কোনো যুক্তি দেখাতে পারেননি তারা। তথ্যের ভিত্তিতে সরেজমিনে বেলকুচির রাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় বোর্ডের নির্ধারিত টাকার চেয়ে রেজিষ্ট্রেশন বাবদ শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে অতিরিক্ত অর্থ নিলেও তাদের দেওয়া হচ্ছেনা কোনো রশিদ। এমনকি রেজিষ্ট্রেশনের নির্ধারিত টাকারও কোনো রশিদ দিচ্ছেন না কতৃপক্ষ। অনুসন্ধানে ও বিদ্যালয় কতৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শিক্ষাবোর্ড থেকে রেজিষ্ট্রেশন বাবদ শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে ২১৫টাকা ও চাইলে সাথে স্কাউট ফি বাবদ ৩৫টাকা সহ সর্বমোট ২৫০টাকা নিতে পারলেও বিদ্যালয় সেই নির্দেশনা না মেনে শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে ৩৫০থেকে ৫০০টাকা পর্যন্ত নিচ্ছেন।
বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে প্রায় আড়াইশো শিক্ষার্থীদের মধ্যে ইতিমধ্যেই দুই শতাধিক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে এই টাকা ইতিমধ্যে উত্তোলন করলেও কাহুকে দেওয়া হয়নি কোনো রশিদ পর্যন্ত। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, বোর্ড থেকে কয়টাকা নেওয়ার নির্দেশনা আছে জানিনা তবে রেজিষ্ট্রেশন বাবদ সর্বনিম্ন ৩৫০টাকা করে নিচ্ছে বিদ্যালয়। টাকা নেওয়ার দায়িত্বে থাকা রাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের কেরানী মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি নানান কাজ নিয়ে ব্যাস্ত থাকি তাই রেজিষ্ট্রেশনের টাকা গনিতের শিক্ষক উত্তোলন করছেন। তবে বিদ্যালয়ের গনিতের শিক্ষক মো. সোহেল রানা বলেন,শুধু আমরা না প্রতিটি বিদ্যালয়ই বেশি টাকা নিচ্ছে। তাদেরকে গিয়ে ধরুন। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শান্তি কুমার সান্যাল বলেন, আমাদের বোর্ডে যাতায়াত ও শিক্ষকদের বিদ্যালয়ে কিছু খরচ থাকে তাই বেশি টাকা নেওয়া হচ্ছে। বিদ্যালয়ের গভর্নিং বডির সভাপতি মো. শাহজাহান আলী সরকার বলেন, আমি বিদ্যালয়ে বলেছি ২০থেকে ৩০টাকার বেশি অতিরিক্ত না নিতে। যদি এর বেশি নিয়ে থাকে তবে দেখবো। কিন্তু ২০থেকে ৩০টাকা কেন বেশি নিতে বলেছেন এর কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি। বেলকুচি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এস.এম গোলাম রেজা বলেন, রেজিষ্ট্রেশনে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের কোনো সুযোগ নেই। তারপরও বিদ্যালয় নিয়ে থাকলে জিজ্ঞাসা করবো ও অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। এবিষয়ে কথা বলার জন্য বেলকুচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনিসুর রহমান ও জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শফিউল্লাহর সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা ফোন ধরেননি।