টি,এম,এ হাসান, সিরাজগঞ্জ: | সোমবার, ০৫ জুলাই ২০২১ | প্রিন্ট
সিরাজগঞ্জে অন্যায় কাজে বাধা দেয়ায় মুক্তিযোদ্ধা ও তার পরিবারের উপর অতর্কিত হামলা, মারধর ও শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটেছে। মারধরে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধার মেয়েসহ আহত হয়েছেন অন্তত ৩জন। এর মধ্যে বেশি আহত মুক্তিযোদ্ধার মেয়ে আজমী আকতার (২৮) হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার পরে বাদী হয়ে সিরাজগঞ্জ সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করলে দ্রুততম সময়ে দুইজন আসামীকে আটক করেছেন সিরাজগঞ্জ সদর থানা পুলিশ। ২জুলাই দুপুরের দিকে এই মারধরের ঘটনা ঘটলেও ভুক্তভোগী আহত আজমী আকতার চিকিৎসা গ্রহনের পরে রবিবার (৪ জুলাই) দিবাগত রাতে থানায় এসে ৫জনের নাম উল্লেখ পুর্বক এই মামলা্টি দায়ের করেন। পরবর্তীতে রাতেই অভিযান চালিয়ে দুইজন আসামীকে আটক করেছে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার এসএই মো. রেজাউল করিম শাহ। আটককৃতরা হলেন মামলার ৩নং আসামী মৃত রহমান আলীর ছেলে আলী হোসেন (৩৫) ও ৪নং আসামী মৃত মন্তাজ আলীর ছেলে জাকিরুল ইসলাম (৩৫)।
মামলার আসামীরা হলেন, সদর উপজেলার রতনকান্দি ইউনিয়িনের একডালা গ্রামের মৃত কুড়ান মন্ডলের ছেলে মো. আশরাফুল ইসলাম ওরফে আসাদুল (৪০), তার স্ত্রী সুফিয়া খাতুন (৩২), মৃত রহমান আলীর ছেলে আলী হোসেন (৩৫), মৃত মন্তাজ আলীর ছেলে জাকিরুল ইসলাম (৩৫) ও মো. মুন্টুর ছেলে মো. জেলহক (৩৩)। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার রতনকান্দি ইউনিয়িনের একডালা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী মো. আমজাদ হোসেন ও তার মামাতো ভাই সোহরাব হোসেন ৭শতাংশ জমি ক্রয় করেন। এর মধ্যে ৫শতাংশ জমি সড়ক উন্নয়নের জন্য নিয়ে নিলে বাকি জায়গা তারা নিয়মানুযায়ী ভোগ দখল করে আসছিলেন। হঠাত শুক্রবার (২ জুলাই) দুপুরের দিকে আসামীরা দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তাদের এই জায়গায় অবস্থিত টিনের ঘরটি অন্যায়ভাবে কুপিয়ে তাদের জায়গায় অবস্থিত কাঠাল গাছের ৩০-৪০টি কাঠাল পেড়ে নিয়ে যাবার কালে বাধা দেন মুক্তিযোদ্ধা মো. আমজাদ হোসেন ও তার নাতি ফারহান করিম ফিলিম। এসময় আসামীরা ক্ষীপ্ত হয়ে মুক্তিযোদ্ধাসহ তার মেয়ে মামলার বাদিনী আজমী আকতার (২৮) ও কয়েকজনকে এলোপাতাড়ি মারধর ও লুটপাট করেন।
মামলার বিবরনে বলা হয়, মামলার বাদিনী আজমী আকতার (২৮)কে লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে হাতে, পায়ে, পিঠে, গলায়, বুকে ও মাথায় সহ শরীরের স্থানে রক্তাক্ত জখম করে অভিযুক্তরা। উল্লেখ করা হয়, ১নং আসামী আশরাফুল ইসলাম ওরফে আসাদুল আজমী আকতারকে চুলের মুঠি ধরে নিয়ে পাকা রাস্তায় ফেলে বুকে ও তলপেটে লাথ্যি মারতে থাকেন ও বুকে খামছিয়ে রক্তাক্ত জখম করেন। এছাড়াও উক্ত আসামী তার ওড়না ফেলে দিয়ে পড়নের কামিজ ছিড়িয়া ফেলে শ্লীলতাহানি ঘটান। এসময় ৩নং আসামী আলী হোসেন কাঠের বাঠাম দিয়ে কোমরে বেধর মারধর করেন ও ২নং আসামী সুফিয়া খাতুন (৩২) গলা টিপে ধরে হত্যার চেষ্টা করেন ও তার শরিরের প্রায় ৮০হাজার টাকা মূল্যের স্বর্নালংকার ছিনিয়ে নেন। এছাড়াও ৪নং আসামী জাকিরুল ইসলাম (৩৫) মুক্তিযোদ্ধা মো. আমজাদ হোসেনকে কিল ঘুষিসহ মারধরের পাশাপাশি তার পকেটে থাকা ৭হাজার টাকা ছিনতাই করে নেন ও ৫নং আসামী মো. জেলহক (৩৩) ফারহান করিম ফিলিমকে বাশ দিয়ে পিটিয়ে জখম করেন। এবিষয়ে মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসএই) মো. রেজাউল করিম শাহ বলেন, মামলাটি আমলে নিয়ে অভিযান চালিয়ে রাতেই দুজন আসামীকে আটক করা হয়। পরে সোমবার (৫ জুলাই) সকালে তাদের আদালতে প্রেরণ করলে বিজ্ঞ আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে আদালতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বাকি আসামীদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
Posted ১০:৫০ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০৫ জুলাই ২০২১
dainikbanglarnabokantha.com | Romazzal Hossain Robel
এ বিভাগের আরও খবর
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।