
নিজস্ব প্রতিবেদক: | শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | প্রিন্ট
খোরশেদ আলম, চাঁদপুরের মতলবে সাধারণ পরিবারে তার জন্ম। মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়ে ভর্তি হন পলিটেকনিক্যালে, দুই বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা কোর্সে। ডিপ্লোমা শেষে ইতি টানেন শিক্ষা জীবনের। ১৯৭৭ সালে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের টেকনিক্যাল বিভাগে একজন কর্মচারী হিসেবে যোগদান করেন। ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের রোডস এন্ড হাইওয়ে বিভাগে রাস্তা পরিমাপের কাজে নিয়জিত ছিলেন। দুদক সূত্রে জানা যায় চাকরিতে যোগদানের শুরুতে তার সর্বসাকুল্যে বেতন ছিল ৭ হাজার টাকা মাত্র। সিটি কর্পোরেশনে তার বিষয়ে খোঁজ নিলে নানা তথ্য মেলে। অনুসন্ধানী দলের সন্দেহ আরো তীব্র হয়।
তথ্য পাওয়া যায় কর্মজীবনে তিনি নানা অসঙ্গতি এবং দুর্নীতির সাথে জড়িত ছিলেন। অসাধু কর্মচারী হওয়ার কারণে অফিস তাকে ২০২০ বা ২০২১ সালে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায়। অবসরকালীন সময়ে তার সর্বসাকুল্যে বেতন ছিল ৩০ হাজার টাকা মাত্র। অনুসন্ধানী দল অনুসন্ধান করলে বেরিয়ে আসে কেঁচো খুড়তে গিয়ে সাপ বেরিয়ে আসার মত গল্প। খোরশেদ আলমের আয়ের সাথে তার বিলাসবহুল জীবন যাপনের কোন মিল নেই। কর্মজীবন এবং ব্যক্তিজীবনে আওয়ামী প্রভাব বিস্তার করেই ১৫ বছরে গড়ে তুলেছেন সম্পদের পাহাড়। বিগত ১৫ বছরে টোলারবাগের বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর আওয়ামী বল প্রয়োগ করে এসেছেন। ব্যবসায়ী মহলে একক আধিপত্য বিস্তারে তিনি শীর্ষে।
বহু সমিতির সাথে যুক্ত রয়েছেন তিনি। বর্তমানেও বহাল রয়েছে মিরপুর মাজার কো-অপারেটিভ মার্কেট সোসাইটির সভাপতি পদে। রাজনীতির মাঠ ধরে রাখতে ওয়ার্ড কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচন করেছিলেন খোরশেদ আলম। আওয়ামী রাজনীতিতে কোন পদে না থাকলেও দলীয় প্রভাব বিস্তারে ছিলেন প্রভাবশালীদের তালিকায়। সখ্যতা ছিল মিরপুরের একাধিক সংসদ সদস্যদের সাথে। আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আসলামুল হক আসলাম এর সাথে ছিল তার গভীর সখ্যতা। যার কারণেই টোলারবাগ এবং মিরপুর ১ এর বিভিন্ন এলাকায় অবৈধভাবে জমি, ফ্লাট দখল এবং জমির শেয়ার বিক্রি করে রাতারাতি বনে যান কোটিপতি।
টোলারবাগের ২০ দাগ এবং ২৬ দাগ দখল করে তিনি বহুতল আবাসিক ভবন নির্মাণ করেন এবং হাতিয়ে নেন কোটি কোটি টাকা। ভুক্তভোগীদের দাবি জোর করে এসব জমির দখল নেন তিনি। বসবাস টোলারবাগেই। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মোটা অংকের টাকা দিতেন তিনি, যার কারণে দলের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের সহায়তা পেতেন সকল দুর্নীতি এবং অনৈতিক কর্মকান্ডে। ভয়ে কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বলতেন না। ভয় ভীতি এবং আতঙ্কের মধ্যে রাখতে সবাইকে।
তথ্য অনুসন্ধানে এসেছে সরকার পতনের সাথে সদ্য বিদায় নেয়া সংসদ সদস্য মাইনুল ইসলাম নিখিল কে নির্বাচনী খরচ বাবদ নগদ অর্ধ কোটি টাকা প্রদান করেন। বিনিময়ে তাকে মিরপুর শাহ আলী মাজারের অন্যতম সদস্য হিসেবে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করেন। ছাত্র জনতার কাছে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটলেও কথিত ইঞ্জিনিয়ার খোরশেদ আলম এখনও তার ক্ষমতা প্রয়োগের মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করছেন। চলবে–
Posted ১০:০২ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
dainikbanglarnabokantha.com | Romazzal Hossain Robel
এ বিভাগের আরও খবর
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।