বৃহস্পতিবার ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২ মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

>>

সড়ক ভোগান্তিতে লাখো মানুষ

ময়মনসিংহ জেলা প্রতিনিধিঃ-   |   মঙ্গলবার, ২৫ জুন ২০২৪   |   প্রিন্ট

সড়ক ভোগান্তিতে লাখো মানুষ

দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় গ্রামের একমাত্র সড়কের অবস্থা বেহাল। এতে চলাচলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন অত্র অঞ্চলের লাখো মানুষজন। এ অঞ্চলের মানুষজনের ভোগান্তির শেষ নেই। স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার ছাত্র/ছাত্রীসহ রোগী নিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়াটাও একপর্যায়ে ভোগান্তির সৃষ্টি।

জানা গেছে, ময়মনসিংহ সদর উপজেলার শম্ভূগঞ্জ টু পরানগঞ্জ সড়কটির চর হরিপুর কুঁড়ের পাড় বাজার হতে চর খরিচা হৃদয় মোড় পর্যন্ত ৪ কিলোমিটারের একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। বোররচর, পরানগঞ্জ, সিরতা ও চর ঈশ্বরদিয়া ইউনিয়ন বাসিন্দাদের একমাত্র সড়ক। তাছাড়া ফুলপুর ও তারাকান্দা উপজেলার বেশীরভাগ মানুষজন এ সড়ক দিয়েই চলাচল করে আসছে। চার কিলোমিটার সড়কজুড়ে খানাখন্দ ও অসংখ্য ছোট বড় গর্তের কারণে দুর্গম চরাঞ্চলের মানুষ সড়কের পুরোপুরি সুফল পাচ্ছে না। অভিযোগ ঠিকাদার ও এলজিইডির গাফিলতির কারণেই লক্ষাধিক মানুষ প্রতিদিন ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ময়মনসিংহ সদর উপজেলার শম্ভূগঞ্জ পশ্চিম বাজারের মোড় থেকে বোররচর পর্যন্ত এলজিইডির ২০ কিলোমিটার সড়কের মাঝপথে চরঈশ্বরদিয়া ইউনিয়নের হরিপুর কুড়ের পাড় থেকে চর খরিচা হৃদয় মোড় পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার সড়কের সংস্কার ও মেরামত কাজ শুরু হয়েছিল গত ২০২২ সালে। ইটের খোয়া ফেলে সংস্কার কাজ শুরুর পরই লাপাত্তা হয় ঠিকাদার। ফলে গত দুই বছর ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে সড়কের সংস্কার ও মেরামত কাজ। মাঝপথে সড়কের বেহাল দশায় এলাকাবাসীর ভোগান্তিকে অসহনীয় করে তুলেছে। সবজি ও কৃষিপণ্য পরিবহনসহ সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছা যাচ্ছে না। বেড়েছে পরিবহন খরচ। প্রতিদিন সড়কের খানাখন্দে পড়ে রাস্তার ওপর বিকল হচ্ছে নানা যানবাহন।

সূত্রে আরও জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতাভুক্ত শম্ভূগঞ্জ-পরানগঞ্জ-বোররচর সড়কপথে বোররচর, পরানগঞ্জ, সিরতা ও চরঈশ্বরদিয়াসহ আশপাশের লক্ষাধিক মানুষ ময়মনসিংহে যাতায়াত করে থাকে। গত দুই বছর ধরে সড়কের সংস্কার কাজ পড়ে থাকায় চার কিলোমিটারের বিভিন্ন পয়েন্টে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। বর্ষায় এসব খানাখন্দে পানি জমি পরিণত হয়েছে মরণফাঁদে। ময়মনসিংহ সদরে যেতে হয় ঘুরপথে। জরুরি রোগী হাসপাতালে পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়েছে। কৃষকদের উৎপাদিত সবজি ও কৃষিপণ্য পরিবহনও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে ন্যায্য দাম পাচ্ছে না অনেক কৃষক।

স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ ঠিকাদার ও এলজিইডির স্থানীয় কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণেই মানুষের এই ভোগান্তি। সিরতা ইউনিয়নেরর যুবলীগ নেতা সিরতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আতিকুর রহমান রাহাত ও আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি সদস্য শাহ্ আলম বাদশা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, মাত্র চার কিলোমিটার সড়ক সংস্কার কাজ ফেলে রাখায় এলাকার মানুষকে ঘুরপথে ময়মনসিংহ সদরে যাতায়াত করতে হচ্ছে। প্রসূতিসহ জরুরি রোগী নিয়ে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যেতেও শঙ্কা কাজ করছে। অথচ দুই বছরেও এলজিইডি এই চার কিলোমিটার সড়ক সংস্কার কাজে আন্তরিকতার প্রমাণ দেখাতে পারেনি। ঠিকাদারের চুক্তিপত্র বাতিল করেই দায় সেরেছেন।

আওয়ামী লীগ নেতা ডাঃ হারুন অর রশীদ জানান, আমাদের গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়কের যদি হয় এ অবস্থা। যে সড়কটি দিয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষজন যাতায়াত করে। আর এভাবে ফেলে রাখলে তো হয় না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়নে কাজ করছে। তাই বলবো দ্রুত টেন্ডার করে সড়কটি মেরামত করে চলার উপযোগী করে তুলতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এই নেতা। চর ঈশ্বরদিয়া ইউনিয়নের বড়বিলা ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম বলেন, এ সড়কটির জন্য আমাদের অনেক ক্ষতি সাধন হচ্ছে। তাই এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কটির দ্রুত মেরামত করা হোক। সিরতা ইউনিয়নের চর দূর্গাপুর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল্লা আল মামুন লিটন বলেন, ঠিকাদার ও এলজিইডির স্থানীয় কর্তৃপক্ষের গাফিলতির শিকার হবো কেন? তাদের গাফিলতিতে এ সড়কের কাজ বন্ধ হবে কেন? এরকম বিভিন্ন প্রশ্ন তুলে তার সমাধান করে দ্রুত সড়কটি মেরামত করার জন্য কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করেন।

এ নিয়ে এলজিইডির স্থানীয় নির্বাহী প্রকৌশলী এনায়েত কবির ঠিকাদারের গাফিলতির দায় স্বীকার করে জানান, এরই মধ্যে টেন্ডার আহ্বানের পর নতুন ঠিকাদারকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। কাজ শেষ হলে মানুষের দুর্ভোগ থাকবে না বলে জানান এই নির্বাহী প্রকৌশলী। কবে নাগাদ নতুন করে কাজ শুরু হবে এবং কতদিনের মধ্যে শেষ হবে এই কাজের প্রশ্নে জানান- খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই সম্পন্ন করা হবে। সরকারের ৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে চার কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের এই কাজ পেয়েছিল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সাদিয়া অ্যান্ড সাদিয়া এন্টারপ্রাইজ। আর এই প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদার সাইফুল ইসলামের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

Facebook Comments Box

Posted ৭:৫১ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২৫ জুন ২০২৪

dainikbanglarnabokantha.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

সম্পাদক

রুমাজ্জল হোসেন রুবেল

বাণিজ্যিক কার্যালয় :

১৪, পুরানা পল্টন, দারুস সালাম আর্কেড, ১১ম তলা, রুম নং-১১-এ, ঢাকা-১০০০।

ফোন: ০১৭১২৮৪৫১৭৬, ০১৬১২-৮৪৫১৮৬, ০২ ৪১০৫০৫৯৮

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

design and development by : webnewsdesign.com

nilüfer escort coin master free spins