
নিজস্ব প্রতিবেদক: | বৃহস্পতিবার, ১২ জানুয়ারি ২০২৩ | প্রিন্ট
গতকাল বুধবার বিশ্ব ইজতেমার সর্বশেষ প্রস্তুতি পরিদর্শনে ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার), পিপিএম টঙ্গী ইজতেমা ময়দানে আগমন ও অংশগ্রহন করেন। সার্বিক নিরাপত্তা পরিকল্পনা সম্পর্কে প্রেস ব্রিফিং এ অংশগ্রহণ করেন তিনি। প্রেস ব্রিফিং এ ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ বাংলাদেশ চৌধুরী আবদুল্লাহ আল- মামুন বিপিএম (বার), পিপিএম বলেন, আমরা সবসময় যেকোন চ্যালেঞ্জে প্রস্তুত থাকি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিজনিত যেকোনও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার মতো সক্ষমতা, দক্ষতা ও প্রশিক্ষণ আমাদের রয়েছে। এটা দিয়ে আমরা আগামী দিনের যেকোনও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারবো বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি । আইজিপি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এখানে ইজতেমা আয়োজনের জন্য ১৬০ একর জমি দিয়েছিলেন। বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের সেবার মান বাড়াতে এখানে ভৌত অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং পরিবেশ সুন্দর ও নিরাপদ করেছেন। পুলিশপ্রধান বলেন, ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের যাতায়াতের সুবিধার্থে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি), গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) এবং ঢাকা জেলা বিশেষব্যবস্থা নিয়েছে। বিভাগ অনুযায়ী গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ইজতেমা মাঠের নিরাপত্তায় এখানে ওয়াচ টাওয়ার, কন্ট্রোল রুম রয়েছে। পুলিশ পোশাকে ও সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করবে। ইজতেমায় জেলা ভিত্তিক খিত্তার ব্যবস্থা থাকবে। এ ছাড়া র্যাবের হেলিকপ্টার নিরাপত্তা টহলে নিয়োজিত থাকবে। চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ইজতেমায় আগত বিদেশিদের সুবিধার্থে ইমিগ্রেশন বিভাগ এবং ট্রাফিক বিভাগ বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে। মুসল্লিদের প্রয়োজনে কন্ট্রোল রুম অথবা জাতীয় জরুরিসেবা ৯৯৯ এ কল করার জন্য বলা হয়েছে। পরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, তাবলীগের উভয়পক্ষের মুরব্বিদের সঙ্গে সভা করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তাদের সঙ্গে আমরাও সভা করেছি। উভয়পক্ষই সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে ইজতেমা পালন করবেন বলে আমাদের কথা দিয়েছে। সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই প্রতিনিয়ত কাজ করতে হয়। প্রশিক্ষণ ও অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান দিয়ে যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার সক্ষমতা পুলিশের রয়েছে। বিশ্ব ইজতেমাকে ঘিরে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পক্ষ থেকেও ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বাহিনীটির মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ইজতেমা উপলক্ষে ব্যাপক প্রস্তুতির অংশ হিসেবে পুরো ময়দান ওয়্যারলেস ফ্রিকোয়েন্সির আওতায় আনা হয়েছে। অগ্নিদুর্ঘটনা মোকাবিলায় ময়দানের প্রতিটি খিত্তায় ফায়ার এক্সটিংগুইসার, ফায়ার হুক, ফায়ার বিটারসহ দুইজন ফায়ার ফাইটার দায়িত্ব পালন করবেন। তুরাগ নদীসহ ময়দানের চারপাশে ১৪টি পোর্টেবল পাম্প প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক আরও বলেন, ময়দানের বিভিন্ন স্থানে চারটি পানিবাহী গাড়ি, রোগী পরিবহনে পাঁচটি অ্যাম্বুলেন্স, সহজে বহনযোগ্য স্পিডবোট, পিকআপে ডুবুরিদল, বেশ কয়েকটি টু- হইলার, ১৩টি জেনারেটর এবং লাইটিং ইউনিট মোতায়েন থাকবে। মাঠের বিভিন্ন স্থানে ফায়ার সার্ভিসের ৩৬১ জন কর্মকর্তা ও ফায়ার ফাইটার মোতায়েন এবং ময়দানে ফায়ার কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও টঙ্গী, উত্তরা ও জয়দেবপুর ফায়ার স্টেশনগুলো স্ট্যান্ডবাই রাখা হয়েছে। এদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহি নীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ইজতেমার নিরাপত্তায় নির্ধারিত পোশাকের বাইরে সাদা পোশাকেও মোতায়েন করা হবে পুলিশ। এ ছাড়া বোমা উদ্ধার ও নিষ্ক্রিয়কারী দল, ডগ স্কোয়াড, নৌ টহল দল এবং বিস্ফোরকদ্রব্য বিষয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা দায়িত্ব পালন করবেন। এ সময় স্পেশাল ব্রাঞ্চের অতিরিক্ত আইজিপি মো. মনিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত আইজিপি (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন্স) মো. আতিকুল ইসলাম, ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি হাবিবুর রহমান, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলাম, ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা এবং তাবলীগের মুরুব্বিরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে ‘নিরাপত্তা পরিকল্পনা’ পুস্তকের মোড়ক উন্মোচন করা হয় । দুই পর্বের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব ১৩ থেকে ১৫ জানুয়ারি এবং দ্বিতীয় পর্ব ২০ থেকে ২২ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে ।
Posted ৯:৫৯ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১২ জানুয়ারি ২০২৩
dainikbanglarnabokantha.com | Romazzal Hossain Robel
এ বিভাগের আরও খবর
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।